প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Wednesday, November 30, 2011

যে কথা বলিনি কখনো

জোনাকী অনলাইন লাইব্রেরীর ১ম বর্ষপূর্তি ও আনুষ্ঠানিক পথ চলায় সকল লেখক, পাঠক ও শুভাকাংখীদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
গত বছরের এই দিনে পরীামূলক পথ চলা শুরু করেছিল জোনাকী। সেই থেকে একটু একটু করে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিবর্তন করা হয়েছে অনলাইন লাইব্রেরীতে। এই এক বছরের পথ চলায় যেমনি পেয়েছি সমালোচনা- তেমনি উৎসাহও। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে সকল বাঁধাকে উপক্রম করে এপর্যন্ত আসতে পেরেছি। এছাড়াও প্রথম থেকে যারা আমাকে যথেষ্ট উৎসাহ যুগিয়েছেন তাদের প্রতি জানাচ্ছি কৃতজ্ঞতা। যাঁদের কথা না বললেই নয়, যাদেরকে আমি সবসময় এ নিয়ে বিরক্ত করেছি, তাদেরই মধ্যে- নিজাম কুতুবী, সারোয়ার সোহেন, তাজুল ইসলাম সরকার, তারেক হাসান, আবদুর রহমান, মধু, নাছির উদ্দিন সুমন ও শারমিন পড়শিকে এই মুহুর্তে খুব মনে পড়ছে। এছাড়া যারা বিভিন্ন সময়ে জোনাকী সম্পর্কে মন্তব্য করে উৎসাহ যুগিয়েছেন এবং বিভিন্ন সামাজিক সাইটে লিংক শেয়ার করেছেন সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
সাহিত্যের সংগ্রহশালা বানানোর চিন্তা থেকে জোনাকীর সৃষ্টি। বিভিন্ন ব্লগ, সংবাদপত্র ও সাইট থেকে লেখকদের চিন্তাধারাকে একত্রিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখানে যেমন নজরুল- রবীন্দ্রনাথের মত খ্যাতিমানদের সৃষ্ট লেখা আছে, তেমনি আছে অখ্যাত কবি লেখকদের সাহিত্য কর্মও। সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে উভয়কে।
অনিচ্ছাকৃত কিছু লেখার সাথে লেখকের নাম দিতে পারিনি এজন্য মা প্রার্থী। কারো জানা থাকলে জানিয়ে সহযোগিতা করতে পারেন। জোনাকী’র লিংক বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেও আমাদের সহযোগিতা করতে পারেন। মহান আল্লাহ আমাদের এ প্রচেষ্টার মধ্যে যত ভাল আছে তা কবুল করুন। সকলের সুস্বাস্থ্য ও উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনায়...
ধন্যবাদসহ
জহির রহমান
প্রতিষ্ঠাতা
জোনাকী

জোনাকীর জন্মদিনে মরুভূমির জলদস্যুর শুভেচ্ছা

শুভ জন্ম দিন আজ ১লা ডিসেম্বর, গত এক বছর আগে ২০১০ সালের এই দিনে জোনাকী তার পরীক্ষামূলক পথচলা শুরু করে। বছর ঘুরে আজ আবার সেই দিনটি আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে। সেই সাথে যোগ হয়েছে আনুষ্ঠানিক পথ চলা। তাই আমি আমার পক্ষ থেকে জোনাকীর সকল পাঠক, লেখক আর জোনাকীর প্রতিষ্ঠাতাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ আর শুভকামনা সহ জন্ম দিনের শুভেচ্ছা। ইচ্ছে ছিলো জোনাকীর জন্ম দিন নিয়ে বড় আকারের একটা লেখা দেওয়ার, কিন্তু কিছু ব্যক্তিগত কিছু সমস্যা আর নেট লাইনের প্রব্লেমের জন্য তা আর হয়ে উঠেনি। তাই আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি চমৎকার এই দিনে কাঁচা একটা লেখা আপনাদের সামনে হাজির করে বিরক্ত করার জন্য। অবশেষে আবারো সকলকে জন্ম দিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে শেষ করছি।
শেষ করার আগে ছোট্ট একটা জিনিস দেখাই, বলুন তো আজকের তারিখটা আমরা কি করে লিখি? ১-১২-১১ দিন আর মাসের মাঝের “-” গুলি উঠিয়ে দিলে পাওয়া যায় ১১২১১ মজার বিষয় হচ্ছে, এই সংখ্যাটিকে উল্টো দিক থেকে লিখলেও একই থাকে। শুভ জন্মদিন।

Friday, November 25, 2011

দেশের সব জেলার তথ্য বাতায়ন

ঢাকা বিভাগ
১. ঢাকা www.dcdhaka.gov.bd
২. ফরিদপুর www.dcfaridpur.gov.bd
৩. গাজীপুর www.dcgazipur.gov.bd
৪. গোপালগঞ্জ www.dcgopalganj.gov.bd
৫. জামালপুর www.dcjamalpur.gov.bd
৬. কিশোরগঞ্জ www.dckishoreganj.gov.bd
৭. মাদারীপুর www.dcmadaripur.gov.bd
৮. মানিকগঞ্জ www.dcmanikganj.gov.bd
৯. মুন্সীগঞ্জ www.dcmunshiganj.gov.bd
১০. ময়মনসিংহ www.dcmymensingh.gov.bd
১১. নারায়ণগঞ্জ www.dcnarayanganj.gov.bd
১২. নরসিংদী www.dcnarsingdi.gov.bd
১৩. নেত্রকোনা www.dcnetrokona.gov.bd
১৪. রাজবাড়ী www.dcrajbari.gov.bd
১৫. শরিয়তপুর www.dcshariatpur.gov.bd
১৬. শেরপুর www.dcsherpur.gov.bd
১৭. টাঙ্গাইল www.dctangail.gov.bd

বরিশাল বিভাগ
১. বরগুনা www.dcbarguna.gov.bd
২. বরিশাল www.dcbarisal.gov. bd
৩. ভোলা www.dcbhola.gov.bd
৪. ঝালকাঠী www.dcjhalakathi.gov.bd
৫. পটুয়াখালী www.dcpatuakhali.gov.bd
৬. পিরোজপুর www.dcpirojpur.gov.bd

চট্টগ্রাম বিভাগ
১. বান্দরবান www.dcbandarban.gov.bd
২. ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া www.dcbrahmanbaria.gov.bd
৩. চাঁদপুর www.dcchandpur.gov.bd
৪. চট্টগ্রাম www.dcchittagong.gov.bd
৫. কুমিল্লা www.dccomilla.gov.bd
৬. কক্সবাজার www.dccoxsbazar.gov.bd
৭. ফেনী www.dcfeni.gov.bd
৮. খাগড়াছড়ি www.dckhagrachhari.gov.bd
৯. লক্ষ্মীপুর www.dclakshmipur.gov.bd
১০. নোয়াখালী www.dcnoakhali.gov.bd
১১. রাঙ্গামাটি www.dcrangamati.gov.bd

খুলনা বিভাগ
১. বাগেরহাট www.dcbagerhat.gov.bd
২. চুয়াডাঙ্গা www.dcchuadanga.gov.bd
৩. যশোর www.dcjessore.gov.bd
৪. ঝিনাইদহ www.dcjhenaidah.gov.bd
৫. খুলনা www.dckhulna.gov.bd
৬. কুষ্টিয়া www.dckushtia.gov.bd
৭. মাগুরা www.dcmagura.gov.bd
৮. মেহেরপুর www.dcmeherpur.gov.bd
৯. নড়াইল www.dcnarail.gov.bd
১০. সাতক্ষীরা www.dcsatkhira.gov.bd

রাজশাহী বিভাগ
১. বগুড়া www.dcbogra.gov.bd
২. চাঁপাইনবাবগঞ্জ www.dcchapainawabganj.gov.bd
৩. জয়পুরহাট www.dcjoypurhat.gov.bd
৪. পাবনা www.dcpabna.gov.bd
৫. নওগাঁ www.dcnaogaon.gov.bd
৬. নাটোর www.dcnatore.gov.bd
৭. রাজশাহী www.dcrajshahi.gov.bd
৮. সিরাজগঞ্জ www.dcsirajganj.gov.bd

রংপুর বিভাগ
১. দিনাজপুর www.dcdinajpur.gov.bd
২. গাইবান্ধা www.dcgaibandha.gov.bd
৩. কুড়িগ্রাম www.dckurigram.gov.bd
৪. লালমনিরহাট www.dclalmonirhat.gov.bd
৫. নীলফামারী www.dcnilphamari.gov.bd
৬. পঞ্চগড় www.dcpanchagarh.gov.bd
৭. রংপুর www.dcrangpur.gov.bd
৮. ঠাকুরগাঁও www.dcthakurgaon.gov.bd

সিলেট বিভাগ
১. হবিগঞ্জ www.dchabiganj.gov.bd
২. মৌলভীবাজার www.dcmoulvibazar.gov.bd
৩. সুনামগঞ্জ www.dcsunamganj.gov.bd
৪. সিলেট www.dcsylhet.gov.bd
সৌজন্যে : আমার দেশ

মুসলমানদের হাতেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশ ঘটেছে || হাসান শান্তনু

উনিশ শতকের নবজাগরণে বাঙালি মুসলমানের অংশগ্রহণ অনেকটা বিলম্বিত ও বিঘ্নিত হলেও বিশ শতকের প্রথম তিন দশকে অতি দ্রুত তারা এ সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে সমর্থ হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও রুশ বিপ্লবের রক্তিম অভিজ্ঞতার ছোঁয়া তাদের নবজাগরণের তারুণ্যদীপ্ত উদ্দীপনার সঙ্গে সাম্যবাদী রাজনীতির গণমুখী চেতনা যুক্ত করে দেয়। অধঃপতন থেকে উত্তরণের জন্য উনিশ শতকের শেষ চতুর্থাংশে শুরু হয় নানা কর্মপ্রচেষ্টা। মুক্তির উপায় হিসেবে যেসব পথ তখন বিবেচিত হয়, মাতৃভাষা বাংলায় সাহিত্যচর্চা সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। ওই সময়ে গুরুত্ব দেয়া হয় মুসলমানের ধর্মজীবন, তার ধর্মতত্ত্ব, ইতিহাস, ঐতিহ্য, বীরত্বগাথা ইত্যাদি চর্চার ওপর।
বিষয়টি ব্যাখ্যার জন্য ইতিহাসবিদ নারায়ণ দত্তের আলোচিত একটি উক্তি ধার করা যায়। তিনি বলে গেছেন, ‘জন্মের সেই পরম লগ্নেই কলকাতার অস্বাস্থ্যকর জলাভূমির মানুষ এক অসুস্থ খেলায় মেতেছিল। তাতে স্বার্থবুদ্ধিই একমাত্র বুদ্ধি, দুর্নীতিই একমাত্র নীতি, ষড়যন্ত্রের চাপা ফিসফিসানিই একমাত্র আলাপের ভাষা।’ মুসলমানদের আত্মপ্রতিষ্ঠা তাই সেই সময়ে অনিবার্য হয়ে উঠেছিল। চিন্তাশীল ব্যক্তিরা অনুধাবন করেন আত্মজাগরণ ও আত্মপ্রতিষ্ঠার জন্য সংঘ-সমিতি প্রতিষ্ঠা আর পত্রিকা, বই প্রকাশের কথা। তারাই মূলত কলকাতাকেন্দ্রিক বাংলা সাহিত্য ও মুসলমানদের অবমাননাকর অবস্থা থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে উদ্ধার করেন। পূর্ববাংলার প্রকৃতি ও জীবন তাদের সাহিত্যে আপন হয়ে ওঠার ফলে আধুনিক বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে মুসলমানদের চেহারা ফুটে উঠতে শুরু করে। যা কলকাতার হিন্দু সাহিত্যিকরা পারেননি। মুসলমান লেখকদের আবির্ভাবের মধ্য দিয়েই মূলত বাংলা সাহিত্যের চেহারাটা পুরোপুরি বদলে যায়। সাহিত্যের প্রকৃত রূপটিও তখন নির্মিত হয়। আজ স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা বাংলা সাহিত্যের রাজধানী হয়ে ওঠার পেছনে অবদান ওই লেখকদেরই। মুসলমানদের অবদানের ফলেই পূর্ব বাংলা, পরে পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বাংলা সাহিত্য বিকশিত হয়।
অতীতে ত্রয়োদশ শতক থেকে মুসলমান সুলতানগণ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছেন। ওই সময় আলাউদ্দিন হোসেন শাহ’র আমলে নতুনভাবে বাংলা ভাষার চর্চা শুরু হয়। এক সময় বাংলা ভাষাকে বলা হতো ‘পক্ষী ভাষা’ অর্থাত্ পাখিদের ভাষা। কথাটি অবজ্ঞা ভরে বলতেন বর্ণহিন্দুরা। এই ভাষা সম্পর্কে একটি সংস্কৃত শ্লোকে বলা হয়েছে— অষ্টাদশ পুরাণানী রামস্যচরিতানিচ/ভাষায়ং শ্রত্বা রৌরবং নরকং ব্রজেত্। অর্থত্ এই ভাষায় অষ্টাদশ পুরাণ ও রামায়ন যারা পাঠ করবেন তারা রৌরব নরকে জ্বলবেন। এ অবস্থা থেকে বাংলা ভাষাকে উদ্ধার করেন মুসলমান সুলতানগণ।
মুসলমান লেখকরা কলকাতায় ও ঢাকায় কিছু কিছু সংগঠন গড়ে তোলেন। অবশ্য যথার্থ ও শক্তিশালী সাহিত্য সংগঠনের জন্য বাঙালি মুসলমানদের অপেক্ষা করতে হয় বেশ কয়েক বছর। ১৯১১ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় বাঙালি মুসলমানের প্রথম উল্লেখযোগ্য সাহিত্য প্রতিষ্ঠান ‘বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতি’।
বাঙালি মুসলিম সমাজে এ সমিতির ভূমিকার মূল্যায়ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্যার এএফ রহমান ১৯৪৩ সালের মে মাসে কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে অনুষ্ঠিত সমিতির শেষ সাহিত্য-সম্মেলনে বলেন, ‘নবীন মুসলমান সাহিত্যিকদের উত্সাহ দেয়ার জন্য, তাঁদের রচিত জিনিসগুলো জনসাধারণের সম্মুখে ফুটিয়ে তোলার জন্য মুসলিম সাহিত্য সমিতির প্রয়োজন হয়। এই সমিতি অনেকটা সফলতা লাভ করেছে। নবীন সাহিত্যিকরা আজ বঙ্গসাহিত্যে উচ্চ স্থান অধিকার করে সমাজের মুখোজ্জ্বল করেছেন, সেটা এই সমিতির অক্লান্ত পরিশ্রম, চেষ্টা ও একনিষ্ঠ সেবার ফল। যে উদ্দেশ্য নিয়ে এই সমিতির গঠন, তা সফল হয়েছে। এর অক্লান্ত কর্মীদের কাছে আমাদের সমাজের ও বঙ্গ-সাহিত্যের ঋণ অপূরণীয়’।
কয়েকজন মুসলিম তরুণের প্রবল উত্সাহে প্রতিষ্ঠিত হয় ওই সাহিত্য-সমিতি। এর অন্তত ১৭ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সঙ্গেও মুসলমান লেখকদের কেউ কেউ যুক্ত ছিলেন। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে, ‘মুসলমান সাহিত্যিকদের সেখানে দারিদ্র্যের দরুন বড় লোকের ঘরে গরিব আত্মীয়ের মতন মন-মরা হয়ে যোগদান করতে হতো।’
নবীন লেখকদের সংগঠিত করে উত্সাহ-উদ্দীপনা জোগানো আর সাহিত্যের মাধ্যমে মুসলমান সমাজ-জীবনের বিভিন্ন দিকের প্রতিফলন ঘটানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়া তাই ঐতিহাসিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেজন্য দরকার ছিল নিজেদের একটি সংগঠন।
ওই সাহিত্য সমিতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আবদুল করিম, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, কাজী নজরুল ইসলাম, কবি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, কাজী ইমদাদুল হক, কমরেড মুজাফফর আহমদ, কাজী আবদুল ওদুদ, প্রকাশক আফজাল উল হক, এয়াকুব আলী চৌধুরী, গোলাম মোস্তফা, হবিবুল্লাহ বাহার, আইনুল হক খান, আবুল মনসুর আহমদসহ আরও অনেকে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইংরেজ শাসনের সমকালে বাংলায় হিন্দুর চেয়ে মুসলমানের সংখ্যা কম ছিল না। তবু কলকাতাশাসিত আধুনিক বাংলা সাহিত্যে তাদের জীবন আদৌ কোনো উপস্থিতি ছিল কিনা, এ প্রশ্নও রাখা যায়।
১৮৭০ সাল অব্দি মুসলমানরা সাহিত্যকর্মে হাত না দেয়া পর্যন্ত তাদের জীবনও সাহিত্যে ঠাঁই পায়নি। জসীম উদ্দীনের ‘কবর’ কবিতা লেখার আগে আধুনিক বাংলা সাহিত্যে কবর আর কায়কোবাদের ‘আজান’ কবিতা লেখার আগে আজান কোনোরকম বিশেষত্ব পায়নি। গুটিকয় কবি-সাহিত্যিকের আকস্মিক আবির্ভাব না হলে মুসলমান বিশাল জনগোষ্ঠীর জীবন আধুনিক বাংলা সাহিত্য পাঠকের মনে কোনো ধরনের আগ্রহেরই উদ্রেক করত না। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন— মীর মশাররফ হোসেন, কায়কোবাদ, বেগম রোকেয়া, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, দীনেশচন্দ্র সেন, কাজী নজরুল ইসলাম ও জসীম উদ্দীন।
বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণার জন্য ভারতের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের মন্তব্য উল্লেখ করা যায়। তিনি ‘বাংলা সাহিত্যে মুসলমান সমাজ ও চরিত্র’ শিরোনামে পিএইচডি থিসিস প্রণয়ন করেন। এতে তিনি রবীন্দ্র-সাহিত্যে মুসলিম সমাজ ও চরিত্র সম্পর্কে বলেন, ‘সমগ্র রবীন্দ্র-সাহিত্যে মুসলমান সমাজ-জীবন ও চরিত্র তুলনামূলকভাবে কম হলেও একথা স্বীকার করেত হবে, রবীন্দ্রনাথই ভারতবর্ষীয় তথা বাঙালি মুসলমান সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি সুবিচার করেছেন।’ মুসলমানরা যে কলকাতার সাহিত্যে উপেক্ষিত ছিল, তা ওই শিক্ষকের মন্তব্য থেকেও ফুটে ওঠে। কেননা, শরত্চন্দ্রকে লেখা চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ ‘স্বীকার’ করেন, মুসলমানদের ঘরের কথা তিনি তেমন জানেন না।
শুধু রবীন্দ্রনাথই নয়, মাইকেল মধুসূদন, ঈশ্বরচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র, হেমচন্দ্র, নবীনচন্দ্র, সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, দ্বিজেন্দ্রলাল, মোহিতলাল, যতীন্দ্রনাথ, তারাশঙ্কর, বিভূতিভূষণদের সাহিত্যেও মুসলমানরা উপেক্ষিত ছিলেন। অন্যদিকে মশাররফ, কায়কোবাদ, নজরুলসহ মুসলিম সমাজের অধিকাংশ কবি-সাহিত্যিকের কবিতা ও সাহিত্যে সেই অভেদ শিল্প-সংস্কৃতির রূপরেখা অকপটে ফুটে ওঠে। তারা মুসলমানদের প্রাণের কথাকে নিজেদের প্রাণের কথা হিসেবে যেমন গুরুত্ব দেন, হিন্দুর প্রাণের কথাকেও তাদের প্রাণের কথা হিসেবে তেমন গুরুত্ব দেন। হ
(তথ্যসূত্র : ড. মুনতাসীর মামুন, রফিকউল্লাহ খান, হাবীব রহমানের প্রবন্ধ)

Sunday, November 20, 2011

কাক ও কাকের কা-কা | মরুভূমির জলদস্যু

কাক কালো বর্নের মাঝারী আকৃতির এক ধরনের পাখি যা আমাদের দেশে খুব দেখা যায়। বিশেষকরে আমাদের রাজধাণী ঢাকাতে এর দেখা মেলে হরহামেসাই। অনেকে ঢাকাকে কাকের শহরো বলে থাকেন, কারণ ভোরে অন্যকোনো পাখির ডাক শোনা না গেলেও কাকের কা-কা রব ঠিকই শোনা যায়।

কাকের উদ্ভব ঘটেছে মধ্য এশিয়ায়। সেখান থেকে এটি উত্তর আমেরিকা, আফ্রিকা, ইউরোপ এবং অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। উষ্ণমন্ডলীয় সব মহাদেশ (দক্ষিণ আমেরিকা ব্যতীত) এবং বেশ কিছু দ্বীপ অঞ্চলে কাকের বিস্তার রয়েছে। এদের গোত্র কর্ভাস । এই গোত্রের মধ্যে প্রায় ৪০টি ভিন্ন প্রজাতির কাক দেখা যায়।





আমাদের দেশে সাধারণত দুই প্রকারের কাক বেশী দেখা যায়-
১। দাঁড় কাক : ঘোর কৃষ্ণ বর্ণে আচ্ছাদিত কাক, এরা আকারে বেশ বড় হয়।
২। পাতী কাক : এদের ঘাড়, গলা, পিঠ ও বুক ছাই রংএ আচ্ছাদিত আর লেজ, ডানা, মাথা কলো কুচকুচে। এরা আকারে দাঁড় কাকের তুলনায় বেশ ছোটো হয়।
এছাড়াও আমাদের দেশে আরো নানান ধরনের কাকেদের দেখা মেলে অল্পসল্প। যেমন:


সাধারণ দাঁড় কাক (Corvus corax)



অস্ট্রেলীয় দাঁড় কাক (Corvus coronoides)



বুনো দাঁড় কাক (Corvus tasmanicus)



ছোট দাঁড় কাক (Corvus mellori)



মোটা ঠোঁটের দাঁড় কাক (Corvus crassirostris)



সাদা ঘাড়ের দাঁড় কাক (Corvus albicollis)



বাদামী ঘাড়ের দাঁড় কাক (Corvus ruficollis)



চিহুয়াহুয়ান দাঁড় কাক (Corvus cryptoleucus)


অনেকে এদেরকে কুৎসিত পাখি বলে থাকে। কিন্তু অনেকেই জানে না যে কাককে পাখিজগতের সর্বাপেক্ষা বুদ্ধিমান পাখি বলে মনে করা হয়। কাকের বুদ্ধির একটি গল্প "কলসের মধ্যে পাথর ফেলে পানি ঠোঁটের নাগালে আনার সেই গল্প" ছোটো বেলায় সকলেই পড়েছি।

কাকেদের কাছ থেকে আমরা অনেক উপকার পাই। এরা মরা ইদুর, বিড়াল, পঁচা-বাসী খাবার নিয়মিত ভাবে পরিস্কার করে, কারণ এগুলোই তাদের খাবার। আর এসব খেয়ে হজম করতে কোন বেগ পেতে হয়না। তবে শরীর থেকে সব সময় বিশ্রী গন্ধ বের হয়। মজা কথা এরা কখনো গোছল করা বাদ দেয় না। আর ঘরে ফিরার আগে নদী, পুকুর বা ডোবার কাছ গিয়ে পা, মাথা পরিস্কার করে, ঠোট দিয়ে জল তুলে পাখা ধোয়। নংরা জিনিস খেলেও শরীর নোংরা রাখেনা।


অত্যন্ত বিরল প্রজাতির সাদা কাক

কাকেরা একটু নির্জন কোন গাছ ঠিক করে রাখে রাত কাটানোর জন্য আর সন্ধ্যা হলেই ঐ গাছের ডালে গিয়ে বসে। এরা শীতের রাতে এবং প্রবল বৃষ্টিতেও গাছের ডালে বসে থাকে। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই এরা কা কা রব লোকালয় মুখর করে।


কাকেরা যেনতেনভাবে খড়, সরু ডাল, কাগজের টুকরা, টিনের টুকরা দিয়ে বাসা তৈরী করে আর তাতে ৪/৫ টা ফিকে নীল রঙের ডিম পারে। কাকের ডিম পাড়ার নিয়মটি বেশ অদ্ভূত। কাক ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে মাত্র চার-পাঁচটি ডিম পাড়ে। আমরা সেই সকলেই ছোটোবেলা থেকে শুনে আসছি, কাকের বাসায় কোকিল ডিম পারে তবে তা আকারে ছোট আর রংটা সবুজ তার উপর হলুদ পোচ থাকে। কাক না জেনেই ওগুলো তা দেয় বাচ্চা ফোটায় ও বড় করে। ফিঙে, পেচা, চড়ুই, চিল সবাই চেষ্টা করে কাকের ডিম নষ্ট করার কিন্তু কাকরা এমন কড়া পাহারা দেয় যে কারোর সাধ্য থাকেনা ডিম ও বাচ্চার কোন ক্ষতি করার। যদিবা কখনো কেউ তার বাসা ভাঙ্গার উদ্ধত্য হয়, তখন কাকেরা দলগত ভাবে তা প্রতিহত করার চেষ্ঠা করে। আবার কোনো দূঃঘটনায় যদি কাকের ছোটো বাচ্চা বাসা থেকে নিচে পরে যায়, তখনো কাকেরা দলগতো ভাবেই কাকা করে পাড়া মাথায় তোলে।


কাকের বাসায় ডিম


কাকের বাসায় কাকের ছানা

কাক সাবান চুরিতে ওস্তাদ। সুযোগ পেলেই তারা সাবান চুরি করে। বলা হয় এই সাবান তারা লুকিয়ে রাখে। সাবান লুকিয়ে রাখার সময় তারা নাকি চোখবুজে থাকে, যাতে কেউ দেখেনা ফেলে সাবান কোথায় লুকানো হচ্ছে।


এবার শেষ করবো সকলের পরিচিত কাকের কা-কা কথা দিয়ে....
কলিকাতার কানাই কর্মকারের কনিষ্ঠা কন্যা কাকলী কর্মকার, কপাল কুঞ্চিত করিয়া, কাকা কেদার কর্মকারকে কানে কানে কহিলো, কাকা কুঞ্জে কৃষ্ণ-কালো কোকিল কাকুতি করিতে করিতে কুহু কুহু করিলেও কলিকাতার কালো কাক, কোকাইতে-কোকাইতে কোন কারণে কা-কা করে? কোন কালহইতে কাকেরা কা-কা করিয়া কাকে কাকা কহিতেছে? কাকেদের কাকা কে?
কেদার কাকা কহিলেন- কন্যা, কপাল কুঞ্চিত করিতেছো কেনো? কোকিল কুহু কুহু করিলেও কাক কা-কা করিবেই, কেনোনা কা-কা করাই কাকের কাজ, কাজেই কাক কা-কা করে। কাকের কপালে কা-কা করাই কঠিন কর্তব্য। কাকেদের কাকা কোনো কালেই কেহনা।


সূত্রঃ নেট ও নিজ
http://xlbirder.blogspot.com/2008/06/crow.html
http://en.wikipedia.org/wiki/Crow


এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।

Friday, November 18, 2011

হিম হিম মাঝ রাতে | জহির রহমান

জহির রহমান

ঘড়ির কাটা এখন মাঝ রাতে
সবাই ঘুমাচ্ছে লেপের উষ্ণতায়
আমার চোখে ঘুম নেই
হিম হিম মাঝ রাতে।
জোসনা মাখা সবুজ বন
জোনাকীর উড়াউড়ি আর-
দূরের আকাশে নিপ্তি
জ্বলে থাকা মিটি মিটি তারা।
এই হিম শীতেও আমি নির্বিকার
কোন উষ্ণতাতেই আমার রুচি নেই!
অদূরে দাঁড়িয়ে জারুল গাছ
আমার মতই জেগে
ডালে বাসা বাঁধা পাখিটিও জেগে ;
কুয়াশায় ভিজে জারুলের ডাল মাড়িয়ে
গড়িয়ে পড়ছে অশ্র" ফোটা
তবে কি ছেড়ে গেছো গাছটিকেও
যেভাবে ছেড়ে গেছো আমায়!
১১/১১/২০১১ইং

Thursday, November 17, 2011

ভুলে যাওয়ার খেসারত

অনেক সময় প্রয়োজনীয় জিনিসটা কোথায় রেখেছি তা আমরা ভুলে যাই। যত্ন করে রাখার পরও মনে করতে পারি না, কোথায় রেখেছি। নিউইয়র্কের বাসিন্দা চার্লস পেটরেসক তার গাড়িটি কোথায় পার্ক করেছিলেন, তা বেমালুম ভুলে গিয়েছিলেন। তার ফলে তাকে যথেষ্ট খেসারত দিতে হয়েছে।
নিউ ইয়র্ক সিটি ম্যারাথনে অংশগ্রহণ করার জন্য ৩৪ বছরের চার্লস পেটরেসক তাড়াতাড়ি তার গাড়িটি ম্যানহাটনের একটি গ্যারেজে পার্ক করেন। আয়োজকদের বাসে ওঠার আগে পকেটে গাড়ির চাবি আর ৪০ ডলার নিয়ে যায়। কিন' পার্কিং টিকিটটি গাড়িতেই রেখে যায়। আর সমস্যার শুরু হয় এখান থেকেই। দৌড় প্রতিযোগিতা শেষ করে পেটরেসক যখন ব্রিয়ান্ট পার্কে আসেন তখন মনে করতে পারেন না, গাড়িটি কোথায় পার্ক করেছিলেন। এলোমেলো ঘুরতে দেখে পুলিশ জিজ্ঞেস করে জানতে পারে তার সমস্যার কথা। এরপর পেটরেসকের স্ত্রীকে ফোন করলে সাথে করে নিয়ে যায় স্বামীকে। কোনোভাবেই যখন মনে করতে পারছিলেন না তখন সিমুসা নামে একটি কোম্পানিকে জানায়, কোম্পানিটি দু’দিন পর হারিয়ে যাওয়া গাড়িটির সন্ধান দেয়। সূত্র : ইউপিআই।

Wednesday, November 16, 2011

নামিয়ে ফেলুন ফ্রি ৰৰ || শাহ আলম বাদশা

কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের অন্যতম প্রয়োজনীয় বিষয় হচ্ছে সফটওয়্যার। বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে প্রত্যেককেই ব্যবহার করতে হয় নানান ধরনের সফটওয়্যার। অপারেটিং সিস্টেমের সাথে কিছু সফটওয়্যার দেয়া থাকলেও কাজের প্রয়োজনে আরো অনেক সফটওয়্যারই দরকার হয় সবার। ইন্টারনেটের সংযোগ থাকলে খুব সহজেই এ সফটওয়্যারগুলো ডাউনলোড করে নেয়া যায় বিনামূল্যেই। সফটওয়্যার সংগ্রহের প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েবসাইটের খবরাখবর নিয়ে এই প্রতিবেদন। লিখেছেন মোজাহেদুল ইসলাম কম্পিউটারের নানান ধরনের কাজের জন্য প্রয়োজন বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার। সাধারণ লখালেখি থেকে শুরু করে ছবি দেখা, গান শোনা, ছবি সম্পাদনা করা কিংবা প্রয়োজনীয় যে কোনো ধরনের কাজের জন্যই প্রয়োজন সফটওয়্যার। এসকল সফটওয়্যারটি অনেক সময় খুঁজে পাওয়া যায় না কারো কাছে। তবে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে খুঁজে বের করা যায় যে কোনো সফটওয়্যার। বেশিরভাগ সফটওয়্যার নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকলেও কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোকে বলা যায় সফটওয়্যার ভান্ডার। এসব ওয়েবসাইটে গেলে সেখান থেকেই পাওয়া যায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের সফটওয়্যার। এরকম কিছু ওয়েব সাইটের পরিচিতি তুলে ধরা হলো। সিনেট তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট সকলের নিকট অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি ওয়েবসাইট হলো সিনেট। এই সাইটে প্রযুক্তি বিশ্বের খবরাখবর, বিভিন্ন প্রযুক্তি পণ্যের রিভিউসহ রয়েছে সফটওয়্যারের একটি বিশাল সংগ্রহ। ১৯৯৪ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে এই সাইটটি সফটওয়্যার ডাউনলোডের একটি নির্ভরশীল স্থানে পরিণত হয়েছে। সিনেট  নেটওয়ার্কের আওতায় কাজ শুরু হলেও ২০০৮ সালে সিনেট নেটওয়ার্ক কিনে নেয় বিবিএস ইন্টার্যাকটিভ। সিনেট ডাউনলোড অংশে রয়েছে এর সফটওয়্যার সংগ্রহ যাতে রয়েছে ৪ লাখেরও বেশি সফটওয়্যার। বিভিন্ন ধরনের ক্যাটাগরি থেকে এখানে বেছে নেয়া যায় প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার। সিনেট ডাউনলোডের শুরুতেই রয়েছে উইন্ডোজ, ম্যাক, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন বাছাইয়ের সুবিধা। যে কোনো প্লাটফর্মের জন্যই এতে রয়েছে পপুলার লিংকস সেখান থেকে জনপ্রিয়তম এবং সবচেয়ে বেশি ডাউনলোডকৃত সফটওয়্যারের তালিকা পাওয়া যায়। এর সাব লিংক-এ রয়েছে মোস্ট পপুলার, নিউ রিলিজ, এডিটরস পিক, ইউজার ফেভারিট, টপ ফ্রি ওয়্যার, আপডেট ইওর সফটওয়্যার প্রভৃতি। এর পরে ক্যাটাগরি মেন্যুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যারের তালিকা। এর মধ্যে রয়েছে সিকিউরিটি সফটওয়্যার, ব্রাউজার, বিজনেস সফটওয়্যার, কমিউনিকেশন, ডেস্কটপ এনহ্যান্সমেন্ট, ডিজিটাল ফটো সফটওয়্যার, ড্রাইভার, এডুকেশনাল, এন্টারটেইনমেন্ট, গেমস, গ্রাফিক ডিজাইন, হোম, ইন্টারনেট, ইউটিলিটি, ভিডিও, অডিও প্রভৃতি ক্যাটাগরি। যে কোনো ক্যাটাগরিতে ক্লিক করলেই সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারের তালিকা পাওয়া যাবে। সেখান থেকে যে কোনো সফটওয়্যার ক্লিক করলেই পাওয়া যাবে সফটওয়্যারটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য, সফটওয়্যারটি নিয়ে একটি রিভিউ এবং ডাউনলোড লিংক। এই সফটওয়্যারটি কতবার ডাউনলোড হয়েছে, সে তথ্যও পাওয়া যাবে সেখানে। এছাড়াও নির্দিষ্ট কোনো সফটওয়্যার খুঁজতে চাইলে সার্চ বক্সে তার নাম লিখলেই সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারটি পাওয়া যাবে। রিভিউসহ সফটওয়্যারের বেশ ভালো একটি সংগ্রহশালা সিনেট ডাউনলোড। এখান থেকে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন মিলিয়ন সফটওয়্যার ডাউনলোড হয়। সাইটটির ঠিকানা download.cnet.com ব্রাদারসফট সফটওয়্যারের আর একটি ভালো এবং জনপ্রিয় সংগ্রহ হচ্ছে ব্রাদারসফট। ২০০২ সালে যাত্রা শুরু করা ব্রাদার সফট মূলতই একটি সফটওয়্যার ডাউনলোড পোর্টাল। আলাদা আলাদা ব্যবহারকারীর হিসেবে এটি ইন্টারনেট ট্রাফিক পর্যবেক্ষনকারী সংস্থা কমস্কোরের শীর্ষ ওয়েবসাইটের তালিকাতেও স্থান পেয়েছে। ২ লাখেরও বেশি সফটওয়্যার সংগ্রহ রয়েছে ব্রাদারসফটে। ফ্রি সফটওয়্যারগুলো এখান থেকে ডাউনলোড করা যায় বিনামূল্যেই। এখানেও রয়েছে উইন্ডোজ এবং ম্যাক উভয় প্লাটফর্মের সফটওয়্যার সংগ্রহ। আর প্রতিটি সফটওয়্যার সম্পর্কেই বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। সিকিউরিটি সফটওয়্যার থেকে শুরু করে অডিও-ভিডিও, ছবি সম্পাদনা, ভিডিও সম্পাদনা, ডেস্কটপ ইউটিলিটি, ইন্টারনেট - সব ধরনের সফটওয়্যার রয়েছে এতে। পাশাপাশি রয়েছে গেমস, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন, উইডগেট, ড্রাইভারসহ ওয়ালপেপারও। বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যারগুলোও ব্রাউজ করা যায় প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে ‘ব্র্যান্ড জোন’-এ। আরও রয়েছে সফটওয়্যারের বর্ণানুক্রমিক তালিকা। পাশাপাশি এর ব্লগে ঢুকলে পাওয়া যাবে সফটওয়্যার সম্পর্কিত নানান আলোচনা যা সফটওয়্যারের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কার্যকরি ভূমিকা রাখবে। এ সাইটের ঠিকানা www.brothersoft.com সফট পিডিয়া উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্সসহ মোবাইল-এর জন্যও নানান ধরনের সফটওয়্যার আর অ্যাপ্লিকেশনের আরেকটি বড় ধরনের সংগ্রহ সফটপিডিয়া। এখানে অবশ্য প্রযুক্তি বিশ্বের নিত্যনতুন খবরাখবরও মিলে থাকে। ২০০১ সালে চালু হওয়া সফটপিডিয়া অনেকের কাছেই সফটওয়্যার ডাউনলোডের অন্যতম নির্ভরযোগ্য একটি ওয়েবসাইট। অ্যালেক্সা ট্রাফিক র্যাংকিং-এ এর স্থান রয়েছে উপরের দিকেই। এখানে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মোট সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশনের সংখ্যা ৮ লাখেরও বেশি। এর সফটওয়্যার ব্রাউজ ট্যাবের মধ্যে রয়েছে উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স, ড্রাইভার, গেমস, স্ক্রিপ্ট, মোবাইল ইত্যাদি। যে কোনো ট্যাব থেকেই সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারের তালিকা পাওয়া যায় সহজেই। আর তালিকা থেকে কোনো সফটওয়্যার সিলেক্ট করলে তার রিভিউ এবং অন্যান্য বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায় ডাউনলোড লিংকসহ। সফটওয়্যারের রিভিউ হিসেবে সফটপিডিয়া রিভিউকে বেশ মানসম্মত এবং নির্ভরযোগ্য হিসেবেই মনে করা যায় হয়। সফটপিডিয়ারের ঠিকানা : www.softpedia.com সফটনিক ১৯৯৭ সালে চালু হওয়া সফটনিক মূলতই স্পেনের বার্সোলোনা ভিত্তিক সফটওয়্যার ডাউনলোড পোর্টাল। স্পেনের সবচেয়ে বেশি ভিজিট করা ডাউনলোড পোর্টাল হচ্ছে সফটনিক। স্প্যানিশ ওয়েবসাইট হলেও সফটনিক রয়েছে ইংরেজি ভাষাতেও। এখানে সফটওয়্যার প্লাটফর্ম হিসেবে রয়েছে উইন্ডোজ, ম্যাক, পাম ওএস, পকেট পিসি, ফোন এবং ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন। সফটওয়্যার ক্যাটাগরি হিসেবে এখানে রয়েছে ইন্টারনেট, ইউটিলিটিস, ডিজাইন এন্ড ফটোগ্রাফি, কাস্টমাইজ ইওর পিসি, অডিও, ভিডিও, সিকিউরিটি, সাইন্স এন্ড এডুকেশন, ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি। প্রতিটি ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সাব-ক্যাটাগরি। সফটনিকেও রয়েছে প্রতিটি সফটওয়্যারের রিভিউ, সফটনিক রেটিং, ইউজার রেটিং এবং সফটওয়্যার ব্যবহারকারীদের রিভিউ। আপনি নিজেও সফটনিকে নিবন্ধন করে যে কোনো সফটওয়্যার সম্পর্কিত আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারবেন। পছন্দের এবং প্রয়োজনের সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে আপনি ভিজিট করতে পারেন en.softonic.com ওয়েবসাইটে। সফট ৩২ বিভিন্ন সফটওয়্যারের সংগ্রহ, সফটওয়্যারের বর্ণনা ও রিভিউসহ প্রয়োজনীয় আরেকটি ওয়েবসাইট হচ্ছে সফট৩২। এখানেও রয়েছে উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স, মোবাইল এবং আইফোনের জন্য আলাদা আলাদা প্লাটফর্মের সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন। এর হোম পেজেই রয়েছে লেটেস্ট উইন্ডোজ সফটওয়্যারের একটি তালিকা। তার পরেই রয়েছে সবচেয়ে জনপ্রিয় উইন্ডোজ সফটওয়্যারের তালিকা যাতে আলাদা আলাদা করে ফ্রিওয়্যার এবং শেয়ার ওয়্যার-এর তালিকা রয়েছে। এর ডাউনলোড ক্যাটাগরির মধ্যে রয়েছে অডিও, ডেস্কটপ ম্যানেজমেন্ট, ড্রাইভার, গ্রাফিক্স, ইন্টারনেট, সিকিউরিটি, ভিডিও, বিজনেস, ডেভেলপার টুলস, গেমস, হোম এন্ড এডুকেশন, নেটওয়ার্ক টুলস, সিস্টেম ইউটিলিটিস, ওয়েব অথোরিং প্রভৃতি। প্রতিটি ক্যাটাগরিতেই রয়েছে প্রয়োজনীয় সাব ক্যাটাগরি। পাশাপাশি হট ডাউনলোডের একটি তালিকাতে রয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া সফটওয়্যারের একটি তালিকা। সফট৩২-এর ঠিকানা www.soft32.com ম্যাক-এর জন্য সফটওয়্যার ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য বিভিন্ন ক্রস প্লাটফর্ম ডাউনলোড পোর্টালের পাশাপাশি রয়েছে আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট। এর মধ্যে অবশ্য অ্যাপল নিজেই ম্যাক-এর নানান অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে চালু করেছে ‘ম্যাক অ্যাপ স্টোর’। সেখানে রয়েছে হাজারো অ্যাপ্লিকেশনের সমারোহ। এছাড়াও ম্যাকের জন্য ওয়েবসাইটের মধ্যে রয়েছে best macsoftware.org, www.pure-mac.com প্রভৃতি। আর ম্যাক অ্যাপস্টোরের ঠিকানা: www.apple.com/mac/app-store লিনাক্সের জন্য লিনাক্স প্লাটফর্মের বিভিন্ন সংস্করণের অপারেটিং সিস্টেমের জন্যও রয়েছে বিভিন্ন সফটওয়্যার ডেভেলপারদের তৈরি নানান সফটওয়্যার। তবে লিনাক্স প্লাটফর্মের জন্য ক্যাননিক্যাল-এই রয়েছে লিনাক্স নির্ভর অ্যাপ্লিকেশনের বিশাল এক সংগ্রহ। এর ঠিকানা www.canonical.com। এছাড়াও রয়েছে www.linux.com/directory, www.ubuntu.com প্রভৃতি ওয়েবসাইট সেখান থেকে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যারটির ডাউনলোড লিংক পাওয়া যায়।

Tuesday, November 15, 2011

সেই রাত্রির কল্পকাহিনী || নির্মলেন্দু গুণ

তোমার ছেলেরা মরে গেছে প্রতিরোধের প্রথম পর্যায়ে,
তারপর গেছে তোমার পুত্রবধূদের হাতের মেহেদী রঙ,
তারপর তোমার জন্মসহোদর, ভাই শেখ নাসের,
তারপর গেছেন তোমার প্রিয়তমা বাল্যবিবাহিতা পত্নী,
আমাদের নির্যাতিতা মা।

এরই ফাঁকে একসময় ঝরে গেছে তোমার বাড়ির
সেই গরবিনী কাজের মেয়েটি, বকুল।
এরই ফাঁকে একসময় প্রতিবাদে দেয়াল থেকে
খসে পড়েছে রবীন্দ্রনাথের দরবেশ মার্কা ছবি।
এরই ফাঁকে একসময় সংবিধানের পাতা থেকে
মুছে গেছে দু’টি স্তম্ভ, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র।
এরই ফাঁকে একসময় তোমার গৃহের প্রহরীদের মধ্যে
মরেছে দু’জন প্রতিবাদী, কর্ণেল জামিল ও নাম না-জানা
এক তরুণ, যাঁর জীবনের বিনিময়ে তোমাকে বাঁচাতে চেয়েছিলো।

তুমি কামান আর মৃত্যুর গর্জনে উঠে বসেছো বিছানায়,
তোমার সেই কালো ফ্রেমের চশমা পরেছো চোখে,
লুঙ্গির উপর সাদা ফিনফিনে ৭ই মার্চের পাঞ্জাবী,
মুখে কালো পাইপ, তারপর হেঁটে গেছো বিভিন্ন কোঠায়।
সারি সারি মৃতদেহগুলি তোমার কি তখন খুব অচেনা ঠেকেছিলো?
তোমার রাসেল? তোমার প্রিয়তম পত্নীর সেই গুলিবিদ্ধ গ্রীবা?
তোমার মেহেদীমাখা পুত্রবধুদের মুজিবাশ্রিত করতল?
রবীন্দ্রনাথের ভূলুন্ঠিত ছবি?
তোমার সোনার বাংলা?

সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামবার আগে তুমি শেষবারের মতো
পাপস্পর্শহীন সংবিধানের পাতা উল্টিয়েছো,
বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে এক মুঠো মাটি তুলে নিয়ে
মেখেছো কপালে, ঐ তো তোমার কপালে আমাদের হয়ে
পৃথিবীর দেয়া মাটির ফোঁটার শেষ-তিলক, হায়!
তোমার পা একবারও টেলে উঠলো না, চোখ কাঁপলো না।
তোমার বুক প্রসারিত হলো অভ্যুত্থানের গুলির অপচয়
বন্ধ করতে, কেননা তুমি তো জানো, এক-একটি গুলির মূল্য
একজন কৃষকের এক বেলার অন্নের চেয়ে বেশি।
কেননা তুমি তো জানো, এক-একটি গুলির মূল্য একজন
শ্রমিকের এক বেলার সিনেমা দেখার আনন্দের চেয়ে বেশি।
মূল্যহীন শুধু তোমার জীবন, শুধু তোমার জীবন, পিতা।

তুমি হাত উঁচু করে দাঁড়ালে, বুক প্রসারিত করে কী আশ্চর্য
আহবান জানালে আমাদের। আর আমরা তখন?
আর আমরা তখন রুটিন মাফিক ট্রিগার টিপলাম।
তোমার বক্ষ বিদীর্ণ করে হাজার হাজার পাখির ঝাঁক
পাখা মেলে উড়ে গেলো বেহেশতের দিকে…।
… তারপর ডেডস্টপ।

তোমার নিষ্প্রাণ দেহখানি সিঁড়ি দিয়ে গড়াতে, গড়াতে, গড়াতে
আমাদের পায়ের তলায় এসে হুমড়ি খেয়ে থামলো।
– কিন্তু তোমার রক্তস্রোত থামলো না।
সিঁড়ি ডিঙিয়ে, বারান্দার মেঝে গড়িয়ে সেই রক্ত,
সেই লাল টকটকে রক্ত বাংলার দূর্বা ছোঁয়ার আগেই
আমাদের কর্ণেল সৈন্যদের ফিরে যাবার বাঁশি বাজালেন।

স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হল || নির্মলেন্দু গুণ

একটি কবিতা লেখা হবে তার জন্য অপেক্ষার উত্তেজনা নিয়ে
লক্ষ লক্ষ উন্মত্ত অধীর ব্যাকুল বিদ্রোহী শ্রোতা বসে আছে
ভোর থেকে জনসমুদ্রের উদ্যান সৈকতে: ‘কখন আসবে কবি?’

এই শিশু পার্ক সেদিন ছিল না,
এই বৃক্ষে ফুলে শোভিত উদ্যান সেদিন ছিল না,
এই তন্দ্রাচ্ছন্ন বিবর্ণ বিকেল সেদিন ছিল না৷
তা হলে কেমন ছিল সেদিনের সেই বিকেল বেলাটি?
তা হলে কেমন ছিল শিশু পার্কে, বেঞ্চে, বৃক্ষে, ফুলের বাগানে
ঢেকে দেয়া এই ঢাকার হদৃয় মাঠখানি?

জানি, সেদিনের সব স্মৃতি ,মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত
কালো হাত৷ তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ
কবির বিরুদ্ধে কবি,
মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ,
বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল,
উদ্যানের বিরুদ্ধে উদ্যান,
মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ … ৷

হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি,
শিশু পার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি
একদিন সব জানতে পারবে; আমি তোমাদের কথা ভেবে
লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প৷
সেই উদ্যানের রূপ ছিল ভিন্নতর৷
না পার্ক না ফুলের বাগান, — এসবের কিছুই ছিল না,
শুধু একখন্ড অখন্ড আকাশ যেরকম, সেরকম দিগন্ত প্লাবিত
ধু ধু মাঠ ছিল দূর্বাদলে ঢাকা, সবুজে সবুজময়৷
আমাদের স্বাধীনতা প্রিয় প্রাণের সবুজ এসে মিশেছিল
এই ধু ধু মাঠের সবুজে৷

কপালে কব্জিতে লালসালু বেঁধে
এই মাঠে ছুটে এসেছিল কারখানা থেকে লোহার শ্রমিক,
লাঙল জোয়াল কাঁধে এসেছিল ঝাঁক বেঁধে উলঙ্গ কৃষক,
পুলিশের অস্ত্র কেড়ে নিয়ে এসেছিল প্রদীপ্ত যুবক৷
হাতের মুঠোয় মৃত্যু, চোখে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিল মধ্যবিত্ত,
নিম্ন মধ্যবিত্ত, করুণ কেরানী, নারী, বৃদ্ধ, বেশ্যা, ভবঘুরে
আর তোমাদের মত শিশু পাতা-কুড়ানীরা দল বেঁধে৷
একটি কবিতা পড়া হবে, তার জন্যে কী ব্যাকুল
প্রতীক্ষা মানুষের: “কখন আসবে কবি?’ “কখন আসবে কবি?’

শত বছরের শত সংগ্রাম শেষে,
রবীন্দ্রনাথের মতো দৃপ্ত পায়ে হেঁটে
অত:পর কবি এসে জনতার মঞ্চে দাঁড়ালেন৷
তখন পলকে দারুণ ঝলকে তরীতে উঠিল জল,
হদৃয়ে লাগিল দোলা, জনসমুদ্রে জাগিল জোয়ার
সকল দুয়ার খোলা৷ কে রোধে তাঁহার বজ্রকন্ঠ বাণী?
গণসূর্যের মঞ্চ কাঁপিয়ে কবি শোনালেন তাঁর অমর-কবিতাখানি:
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম৷’

সেই থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের৷

হুলিয়া || নির্মলেন্দু গুণ

আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর,
আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ,
শোঁ শোঁ করছে হাওয়া।
আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীন
একটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে৷

কেউ চিনতে পারেনি আমাকে,
ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছ থেকে
আগুন চেয়ে নিয়েছিলুম, একজন মহকুমা স্টেশনে উঠেই
আমাকে জাপটে ধরতে চেয়েছিল, একজন পেছন থেকে
কাঁধে হাত রেখে চিত্কার করে উঠেছিল;- আমি সবাইকে
মানুষের সমিল চেহারার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি৷
কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, একজন রাজনৈতিক নেতা
তিনি কমিউনিস্ট ছিলেন, মুখোমুখি বসে দূর থেকে
বারবার চেয়ে দেখলেন-, কিন্তু চিনতে পারলেন না৷

বারহাট্টায় নেমেই রফিজের স্টলে চা খেয়েছি,
অথচ কী আশ্চর্য, পুনর্বার চিনি দিতে এসেও
রফিজ আমাকে চিনলো না৷
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পরিবর্তনহীন গ্রামে ফিরছি আমি৷
সেই একই ভাঙাপথ, একই কালোমাটির আল ধরে
গ্রামে ফেরা, আমি কতদিন পর গ্রামে ফিরছি৷

আমি যখন গ্রামে পৌঁছলুম তখন দুপুর,
আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ,
শোঁ-শোঁ করছে হাওয়া৷
অনেক বদলে গেছে বাড়িটা,
টিনের চাল থেকে শুরু করে পুকুরের জল,
ফুলের বাগান থেকে শুরু করে গরুর গোয়াল;
চিহ্নমাত্র শৈশবের স্মৃতি যেন নেই কোনখানে৷

পড়ার ঘরের বারান্দায় নুয়ে-পড়া বেলিফুলের গাছ থেকে
একটি লাউডুগী উত্তপ্ত দুপুরকে তার লক্লকে জিভ দেখালো৷
স্বতঃস্ফূর্ত মুখের দাড়ির মতো বাড়িটির চতুর্দিকে ঘাস, জঙ্গল,
গর্ত, আগাছার গাঢ় বন গড়ে উঠেছে অনায়াসে; যেন সবখানেই
সভ্যতাকে ব্যঙ্গ করে এখানে শাসন করছে গোঁয়ার প্রকৃতি৷
একটি শেয়াল একটি কুকুরের পাশে শুয়েছিল প্রায়,
আমাকে দেখেই পালালো একজন, একজন গন্ধ শুঁকে নিয়ে
আমাকে চিনতে চেষ্টা করলো- যেন পুলিশ-সমেত চেকার
তেজগাঁয় আমাকে চিনতে চেষ্টা করেছিল৷
হাঁটতে- হাঁটতে একটি গাছ দেখে থমকে দাঁড়ালাম,
অশোক গাছ, বাষট্টির ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া অশোক,
একসময়ে কী ভীষন ছায়া দিতো এই গাছটা;
অনায়াসে দু’জন মানুষ মিশে থাকতে পারতো এর ছায়ায়৷
আমরা ভালোবাসার নামে একদিন সারারাত
এ-গাছের ছায়ায় লুকিয়ে ছিলুম৷
সেই বাসন্তী, আহা, সেই বাসন্তী এখন বিহারে,
ডাকাত স্বামীর ঘরে চার- সন্তানের জননী হয়েছে৷

পুকুরের জলে শব্দ উঠলো মাছের, আবার জিভ দেখালো সাপ,
শান্ত-স্থির-বোকা গ্রামকে কাঁপিয়ে দিয়ে
একটি এরোপ্লেন তখন উড়ে গেলো পশ্চিমে – -৷
আমি বাড়ির পেছন থেকে দরোজায় টোকা দিয়ে
ডাকলুম,— “মা’৷
বহুদিন যে-দরোজা খোলেনি,
বহুদিন যে দরোজায় কোন কন্ঠস্বর ছিল না,
মরচে-পরা সেই দরোজা মুহূর্তেই ক্যাচ্ক্যাচ শব্দ করে খুলে গেলো৷
বহুদিন চেষ্টা করেও যে গোয়েন্দা-বিভাগ আমাকে ধরতে পারেনি,
চৈত্রের উত্তপ্ত দুপুরে, অফুরন্ত হাওয়ার ভিতরে সেই আমি
কত সহজেই একটি আলিঙ্গনের কাছে বন্দী হয়ে গেলুম;
সেই আমি কত সহজেই মায়ের চোখে চোখ রেখে
একটি অবুঝ সন্তান হয়ে গেলুম৷

মা আমাকে ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে
লুকিয়ে রেখে অনেক জঙ্গলের পথ অতিক্রম করে
পুকুরের জলে চাল ধুতে গেলেন; আমি ঘরের ভিতরে তাকালুম,
দেখলুম দু’ঘরের মাঝামাঝি যেখানে সিদ্ধিদাতা গণেশের ছবি ছিল,
সেখানে লেনিন, বাবার জমা- খরচের পাশে কার্ল মার্কস;
আলমিরার একটি ভাঙ্গা- কাচের অভাব পূরণ করছে
ক্রুপস্কায়ার ছেঁড়া ছবি৷

মা পুকুর থেকে ফিরছেন, সন্ধ্যায় মহকুমা শহর থেকে
ফিরবেন বাবা, তাঁর পিঠে সংসারের ব্যাগ ঝুলবে তেমনি৷
সেনবাড়ি থেকে খবর পেয়ে বৌদি আসবেন,
পুনর্বার বিয়ে করতে অনুরোধ করবেন আমাকে৷
খবর পেয়ে যশমাধব থেকে আসবে ন্যাপকর্মী ইয়াসিন,
তিন মাইল বিষ্টির পথ হেঁটে রসুলপুর থেকে আসবে আদিত্য৷
রাত্রে মারাত্মক অস্ত্র হাতে নিয়ে আমতলা থেকে আসবে আব্বাস৷
ওরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞেস করবে ঢাকার খবর:
– আমাদের ভবিষ্যত্ কী?
– আইয়ুব খান এখন কোথায়?
– শেখ মুজিব কি ভুল করেছেন?
– আমার নামে কতদিন আর এরকম হুলিয়া ঝুলবে?

আমি কিছুই বলবো না৷
আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা সারি সারি চোখের ভিতরে
বাংলার বিভিন্ন ভবিষ্য়্ত্কে চেয়ে চেয়ে দেখবো৷
উত্কন্ঠিত চোখে চোখে নামবে কালো অন্ধকার, আমি চিত্কার করে
কন্ঠ থেকে অক্ষম বাসনার জ্বালা মুছে নিয়ে বলবো:
‘আমি এসবের কিছুই জানি না,
আমি এসবের কিছুই বুঝি না৷’

শহীদদের প্রতি || আসাদ চৌধুরী

তোমাদের যা বলার ছিল
বলছে কি তা বাংলাদেশ ?
শেষ কথাটি সুখের ছিল ?
ঘৃণার ছিল ?
নাকি ক্রোধের,
প্রতিশোধের,
কোনটা ছিল ?
নাকি কোনো সুখের
নাকি মনে তৃপ্তি ছিল
এই যাওয়াটাই সুখের।
তোমরা গেলে, বাতাস যেমন যায়
গভীর নদী যেমন বাঁকা
স্রোতটিকে লুকায়
যেমন পাখির ডানার ঝলক
গগনে মিলায়।
সাঁঝে যখন কোকিল ডাকে
কারনিসে কি ধুসর শাখে
বারুদেরই গন্ধস্মৃতি
ভুবন ফেলে ছেয়ে
ফুলের গন্ধ পরাজিত
স্লোগান আসে ধেয়ে।
তোমার যা বলার ছিল
বলছে কি তা বাংলাদেশ ?

কবিতা কোম্পানী প্রাইভেট লিমিটেড || আব্দুল মান্নান সৈয়দ

এখানে কবিতা বানানো হয়।
সব ধরনের কবিতা।
রাজনীতিক কবিতা, সামাজিক কবিতা।
নাগরিক কবিতা, গ্রামীণ কবিতা।
প্রেমের কবিতা, শরীরের কবিতা।
স্বপ্নের কবিতা, বাস্তবের কবিতা।
চল্লিশের কবিতা, পঞ্চাশের কবিতা।
ষাটের কবিতা, সত্তরের কবিতা।
আশির কবিতাও আমরা বাজারে ছাড়ছি শিগগিরই।
কবিতার হাত, পা, মাথা, ধড়,
শিশ্ন, যোনি, চুল, নখ,
চোখ, মুখ, নাক, কান,
হাতের আঙুল, পায়ের আঙুল–
সব-কিছু মওজুদ আছে আমাদের এখানে।
স্বদেশি ও বিদেশি উপমা ও চিত্রকল্প,
শব্দ ও ছন্দ,
অন্ত্যমিল ও মধ্যমিল
লক্ষ লক্ষ জমা আছে আমাদের স্টকে।
ব্যাঙের ছাতার মতো আরো অনেক কবিতার কোম্পানি
গজিয়েছে বটে আজকাল। কিন্তু,
আপনি তো জানেনই,
আমাদের কোম্পানি ইতোমধ্যেই বেশ নাম করেছে।
আর ফাঁকি দিয়ে কি খ্যাতি অর্জন করা সম্ভব,
বলুন?
হ্যাঁ, আপনার অর্ডার-দেওয়া কবিতাটি এই-তো তৈরি হয়ে এলো।
চমৎকার হয়েছে।
ফিনিশিং টাচ শুধু বাকি।
একটু বসুন স্যার, চা খান,
কবিতার কয়েকটা ইস্ক্রুপ কম পড়ে গেছে আমাদের,
পাশের কারখানা থেকে একছুটে নিয়ে আসবার জন্যে
এখখুনি পাঠিয়ে দিচ্ছি লতিফকে।

একুশে ফেব্রুয়ারী || আবদুল গাফফার চৌধুরী

আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
ছেলেহারা শত মায়ের অশ্রু-গড়া এ ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি
আমার সোনার দেশের রক্তে রাঙানো ফেব্রুয়ারি
আমি কি ভুলিতে পারি।
জাগো নাগিনীরা জাগো নাগিনীরা জাগো কালবোশেখীরা
শিশুহত্যার বিক্ষোভে আজ কাঁপুক বসুন্ধরা,
দেশের সোনার ছেলে খুন করে রোখে মানুষের দাবী
দিন বদলের ক্রান্তি লগনে তবু তোরা পার পারি ?
না, না, না, না খুন রাঙা ইতিহাসে শেষ রায় দেওয়া তারই
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।
সেদিনো এমনি নীল গগনের বসনে শীতের শেষে
রাত জাগা চাঁদ চুমো খেয়েছিলো হেসে;
পথে পথে ফোটে রজনীগন্ধা অলকানন্দা যেনো,
এমন সময ঝড় এলো এক, ঝড় এলো ক্ষ্যাপা বুনো।
সেই আঁধারে পশুদের মুখ চেনা
তাহাদের তরে মায়ের, বোনের, ভায়ের চরম ঘৃণা
ওরা গুলি ছোঁড়ে এদেশের প্রাণে দেশের দাবীকে রোখে
ওদের ঘৃণ্য পদাঘাত এই বাংলার বুকে।
ওরা এদেশের নয়,
দেশের ভাগ্য ওরা করে বিক্রয়-
ওরা মানুষের অন্ন, বস্ত্র, শান্তি নিয়েছে কাড়ি-
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।
তুমি আজ জাগো তুমি আজ জাগো একুশে ফেব্রুয়ারি
আজো জালিমের কারাগারে মরে বীর ছেলে বীর নারী
আমার শহীদ ভাইয়ের আত্মা ডাকে
জাগে মানুষের সুপ্ত শক্তি হাটে মাঠে ঘাটে বাঁকে
দারুণ ক্রোধের আগুনে জ্বালবো ফেব্রুয়ারি
একুশে ফেব্রুয়ারি একুশে ফেব্রুয়ারি।

Wednesday, November 9, 2011

শেষ বিকেলের আলোয়...

এই বর্ষায় জলভ্রমণের সময় বেশ বিকেলের আলোয় তোলা একটি নৌকোর কটি ছবি....




























এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।

Friday, November 4, 2011

স্মৃতির আয়নাঘর || জাকির আবু জাফর

সবার বুকে স্মৃতির গোলা থাকে
গোপন স্মৃতি হঠাত্ পিছু ডাকে
স্মৃতির ডাকে আনমনা হয় সব
মনের ভেতর স্মৃতির কলরব

কোথায় কখন কি ঝরেছে তার
ফেলে আসা দিনটি চমত্কার
মনের ভেতর ফোটে সেসব দিন
স্মৃতি আরও বাড়ায় অতীত ঋণ

একলা হলেই জাগে স্মৃতির হাত
ঘুম তাড়িয়ে খেলে সারারাত
কিংবা দুপুর কিংবা বিকেল ভর
মন হয়ে যায় স্মৃতির আয়নাঘর

অতীত তখন ঘোরের মায়াজাল
আজ হয়ে যায় স্মৃতির গতকাল

অলৌকিক পথে || রাজু আলীম

আকাশের আয়নায় ঘুম দিয়ে উঠে দেখি আমি
পাখির চোখের মাঝে ডুবে গেছি, বিকেলের আলো
নিভে গিয়ে জ্বলে আছে, হেসে ওঠে ঘুমন্ত মেয়েরা
আমার জ্বলন্ত প্রেম ভালোবাসা হয়ে উড়ে যায়।
কে হায় উড়িয়ে নিল তারাদের মতো অগ্নি চোখ
আমার শোকের বুকে ঠেলে দিয়ে বিষণ্ন পাথর
বৃক্ষের ঘুমন্ত জলে জোসনার ঘুম ঘুম স্বপ্ন
সেলাইবিহীন হেঁটে চলি একা নতুন জীবনে
চাঁদের আগুন হাতে/বিশ্ব পড়ি/দিই নীল স্নানে
আঙুলের ফাঁকে ফাঁকে পাখি ওড়ে, উন্মাদ সমুদ্রে
দুর্বোধ্য যৌবন শীষনাগ হয়ে অন্ধকারে কাঁদে
ম্যাজিক কবিতা লজ্জা পায় কবি হাঁটে কাব্য জলে
নির্বাচিত দুঃখ-কষ্টে ভরে যায় তিরিশি ও মন
দুরন্ত নবীন পাখি অলৌকিক ইশারায় ডাকে।

অনেক তন্দ্রার পর || চৌধুরী ফেরদৌস

অনেক তন্দ্রার পর গতকাল ঘুম এসেছিল। অপূর্ব জ্যোত্স্নারাত—ফুটে
আছে থোকা থোকা হরগযাফুল। শুকিয়ে গিয়েছে খাল, একসারি কানিবক
তবু চেয়ে আছে। কুয়াশার ভেতরে দেখি তোমার চোখের মতো খেজুরের
ডাল—ইশারায় ডাকছে আমাকে। কী করে তোমার কাছে যাব—পৃথিবীর
মেঠোপথ কেউ কি কখনও আর বলো ফিরে পাবে!

মধ্য বয়সে দু’জন || মালেক মাহমুদ

এই মধ্য বয়সে মুঞ্জিলার হাত ধরে
হেঁটে চলি সমুদ্রসৈকত, কুতুবমিনার
দিল্লি, আগ্রা, তাজমহল
বাবুই ভালোবাসার নীড় বাংলাদেশ।

সর্পজিহ্বায় মিষ্টি রঙের লালা
গড়িয়ে যেতে দেখি
আঁধার থেকে আলোতে।

আলোতে আলোর বাতি জ্বলে নীল, লাল।
লাল রঙ আমার প্রিয়
লালে লাল লাল গোলাপ মুঞ্জিলার হাসি।

হাসতে পারি না কিশোরের মতো
মতির হার পরাতে পারি না প্রিয়াকে
জোড়া চোখে অশ্রুফোঁটা

তবুও হেঁটে চলি দু’জন দিগন্তের পথে।
সূত্র : আমার দেশ

Thursday, November 3, 2011

একটি চিল ও কয়েকটি ছবি | মরুভূমির জলদস্যু

"একটি নৌকা, কয়েকটি ছবি" পোস্টেই জানিয়েছি এই বর্ষায় বেশ কয়েকবারই বেড়াতে বেরিয়েছিলাম জল-ভ্রমণে। ইঞ্জিন চালিতো নৌক নিয়ে দুপুরের পর বেরিয়ে রাত পর্যন্ত ঘুরে বেরিয়েছি জলের উপর। বেরাইদ থেকে শুরু করে ইসাপুরা হয়ে বালুনদী দিয়ে সেই শীতলক্ষ্যা পর্যন্ত ঘুরে বেড়িয়েছি। দেখেছি বর্ষার জলে হাঁসের দলের অলস ভ্রমণ, জেলেদের মাছ ধরা আর নৌকো করে পারাপারের দৃশ্য। অসংখ্য ছবি তুলেছি প্রতিবারই, দৃষ্টিনন্দন হয়নি যার কোনোটাই। সেই অসংখ্য ছবি থেকে আজ একটি চিলের কয়েকটি ছবি শেয়ার করালাম।

১।



২।



৩।



৪।



৫।



৬।



পথের হদিস : প্রথমে ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে উত্তর বাড্ডা বাজারে চলে আসুন, এখান থেকে বেরাইদের গাড়িতে উঠে পড়ুন। বেরাইদে নেমে হেঁটে বা রিক্সা নিয়ে চলে যাবেন খেয়া ঘাটে। সারা বিকেলের জন্য একটা বোট ভাড়া করুন ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়। এবার বেরাইদ থেকে শুরু করে ইসাপুরা হয়ে বালুনদী দিয়ে সেই শীতলক্ষ্যা পর্যন্ত ঘুরে বেড়িয়ে আসুন।


এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।

Wednesday, November 2, 2011

পৃথিবী কাঁপানো ছবি !

এই ছবিটা হচ্ছে বিশ্বের বিখ্যাত এবং পৃথিবী কাপানো ছবিগুলোর মাঝে একটা। এই ছবিটা তুলেছিলেন ফটোগ্রাফার Kevin Carter. Kevin Carter এই ছবিটি তুলেছিলেন ১৯৯৪ সালে সুদানে জাতিসংঘের খাদ্য গুদামের কাছে। ছবিটার মানে কি জানেন ?? শকুনটা অপেক্ষা করছে ছোট্ট শিশুটার মৃত্যুর জন্য। কারন মৃত্যুর পর শকুনটা এই শিশুটার শরীরের মাংস খাবে। এই ছবিটা তখন সারা দুনিয়াতে আলোড়ন তুলেছিল। তবে শিশুটার শেষ পরিণতি কি হয়েছিল, তা কে...উ জানতে পারেনি। এমনকি Kevin Carter ও না। এই ছবিটা Pulitzer Prize পেয়েছিল। ফটোগ্রাফার Kevin Carter এই ছবিটা তোলার ৩ মাস পর সুইসাইড করে মারা গিয়েছিলেন। পরে জানা গেছে ছবিটা তোলার পর থেকেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন এবং এই কারনেই তিনি সুইসাইড করেন । আত্মহত্যার আগে Kevin Carter নিন্মলিখিত বাক্যগুলো তার ডায়রিতে লিখে যান-

"Dear God, I promise I will never waste my food no matter how bad it can taste and how full i may be. I pray that He will protect this little boy, guide and deliver him away from his misery. I pray that we will be more sensitive towards the world around us and not be blinded by our own selfish nature and interests. I hope this picture will always serve as a reminder to us that how fortunate we are and that we must never ever take things for granted."


নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ