প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Tuesday, May 3, 2011

হাসু-পুতুলের ভ্যালেন্টাইনস ।। শওগাত আলী সাগর

১.
ক্যাসেট প্লেয়ারে আবারো গানটা রিউইণ্ড করে দিল হাসু। এ নিয়ে কতোবার শুনলো সে গানটা?  হিসেব রাখেনি। আট বার? দশ বার? হবে হয়তো।  কি দরদ দিয়ে গানটা গাইছে মেয়েটা? কি যেন নাম শিল্পীটার?  সিডির প্যাকেটটা হাতে নিয়ে উল্টে পাল্টে দ্যাখে। শুভমিতা।  নামটাও কেমন যেন আলাদা। তরুণী বয়সে মান্না দে, হেমন্ত, লতার গান শুনেছে হাসু। পছন্দ করার মতো, প্রিয় হবার মতো কতো নতুন নতুন শিল্পীর আবির্ভাব ঘটেছে। সে সবের খবর রাখার অবকাশ নেই। রাষ্ট্র, সরকার, রাজনীতি, দেশের মানুষ- এসবের ভেতরে ডুবে থাকতে হয় তাকে।

কিন্তু আজকের দিনটাকে সে অন্যরকমভাবে কাটাতে চেয়েছে।  ভ্যালেন্টাইনস ডে বলে কথা! প্রধানমন্ত্রী বলে কি তাকে ভালোবাসা ছোঁবে না! মনের জানালায় ভালোবাসার কোনো অনুভূতি উঁকি  দেবে না?
টিভির পর্দায় চোখ পড়তেই একটু নড়েচড়ে বসে হাসু। ঝাঁকে ঝাঁকে তরুণ-তরুণীরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। কি অপূর্ব তাদের সাজসজ্জা!  যেন ভালোবাসার সমুদ্রে সাঁতার কাটছে তারা। বাংলাদেশটাও কি পশ্চিমা সমাজের মতো হয়ে গেল! আজকের তরুণ-তরুণীরা কি চমৎকার অবাধে ভালোবাসার উৎসব করছে। অজান্তেই বুক চিরে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এলো হাসুর। টের পায়, মনে খুব গহীন কোনো জায়গা থেকে  উঠে এলো সেই দীর্ঘশ্বাস!
২.
‘যেভাবেই তুমি সকাল দেখো, সূর্য কিন্তু একটাই/ যতো ভাগে ভাগ করো প্রেম, হৃদয় কিন্তু একটাই...’ গানের কথাগুলো ভাবনাকে আবারো ছুঁয়ে দেয় হাসুর। ভালোবাসা দিবসে এর চেয়ে উপযোগী গান আর কি হতে পারে! ‘যতো ভাগেই ভাগ করো প্রেম, হৃদয় কিন্তু একটাই...’ গুনগুন করে সুর মেলায় হাসু।  হঠাৎ কিশোরীবেলার মতো ঘরের মাঝখানে নাচতে শুরু করে সে।  টানা কয়েক মিনিট উল্টোপাল্টা নাচার পর আয়নার সামনে এসে দাঁড়ায় । আপনমনে কথা শুরু  হয়-
: মনে খুব স্ফূর্তি লাগছে তোমার হাসু?
: হ্যাঁ, আজ ভ্যালেন্টাইনস ডে। হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস, বাই দ্যা ওয়ে।
: হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস তোমাকেও।
: থ্যাংকস। হু ইজ ইওর ভ্যালন্টাইন, হাসু? আজকে তোমরা প্রোগ্রাম কি?
: আমার প্রোগ্রাম? চোখ বড় করে হাসু। আরেকবার কথাটা উচ্চারণ পর্যন্ত করবে না। জানতে পারলে মিডিয়া তুলোধুনো  করে ছাড়বে। প্রধানমন্ত্রীর আবার ভ্যালেন্টাইনস ডে?
: প্রধানমন্ত্রীর পিকনিক হয় কিভাবে? ওই যে ক’দিন আগে গাজীপুরে গিয়ে হৈ-হুল্লোড় করে  পিকনিক করে এলে তা নিয়ে কেউ কিছু বলেছে তোমাকে? মিডিয়া কোনো সমালোচনা করেছে?
: তা ঠিক। একটু যেনো লজ্জা পায় হাসু।
: সো...? ডু সামথিং স্পেশাল। পিক আপ এ ভ্যালেন্টাইন। গানটা শুনছো না, ‘যতো ভাগে ভাগ করো প্রেম, হৃদয় কিন্তু একটাই...।‘
৩.
অনেকক্ষণ ধরে টানা বেজে চলেছে প্রাইভেট ফোনটা। সেদিকে মোটেও  ভ্রুক্ষেপ করছে না পুতুল। এই সময়টায় তার কেন জানি ফোন ধরতে ইচ্ছে করছে না। ফোনটা হাতে নিয়ে যে নম্বরটা দেখবে, সে ইচ্ছেও হচ্ছে না।
রিমোটটা হাতে নিয়ে টিভিটা অন করে দেয় সে। টিভির শব্দে ফোনের শব্দ খানিকটা চাপা পড়ে যায়। বলিশটাকে পিঠের নীচে  দিয়ে আয়েশ করে আধশোয়া হয়ে টিভির পর্দায় চোখ রাখে সে। পর্দার উপর চোখটা স্থির হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও ভ্যালেন্টাইনস  ডে হচ্ছে! বাংলা একাডেমীর বইমেলা, টিএসসি, রমনা পার্কে তরুণ-তরুণীরা কি উচ্ছাসে ভালোবাসা দিবস পালন করছে! নিজেকে তাদের একজন ভাবতে শুরু করে পুতুল। মনটা ফুরফুরে হয়ে ওঠে!
আবার টেলিফোনের শব্দটা শুনতে পায়। অনিচ্ছাসত্ত্বেও হাতে তুলে নেয় ফোনটা। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে সে। একটা পালস কি মিস করলো? হাসুর তাকে ফোন করার কথা নয়! অন্তত: ফোন করে দুজনে কথা বলার মতো কোনো পরিস্থিতি এইমুহূর্তে দেশে বিরাজমান নয়।  আর সেলফোনে তো নয়ই। তাদের সম্পর্কটা লালদাগে  বিভাজিত; ভিভিআইপি লাল টেলিফোনেই তাদের যোগাযোগ সীমিত থাকার নিয়ম। কিন্তু হাসু ফোন করেছে তার পার্সোনাল সেলে। রিসিভ বাটনটায় চাপ দিয়ে ফোনটা কানের কাছে চেপে ধরে পুতুল।
৪.
: হ্যাপী ভ্যালেন্টাইনস ডে টু ইউ!
: তুমি কি আজকাল ওয়েস্টার্ণ হয়ে উঠছো না কি? ওয়েস্টার্ণ কালচারের ভ্যালেন্টাইনস ডে পালন করছো?
: ভাগ্যিস, ব্যাপারটা ইণ্ডিয়ায় শুরু হয়নি। তাহলে কি বলতে? নিশ্চয়ই ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বলে একটা হরতাল ডেকে দিতে!
জোরে হেসে ফেলে পুতুল। হাসিতে তার ফর্সা গাল রাঙা হয়ে ওঠে টমেটোর মতো। বলে, তোমাকে রাগিয়ে দেয়া খুব সহজ। অল্পতেই রেগে যাও তুমি।
পুতুলের হাসিতে হাসি ফুটে ওঠে হাসুর মুখেও। তারপরও মুখ টিপে বলে,
: তোমরাতো থাকোই কিভাবে আমাকে রাগাবে, তাই নিয়ে।
: রাগাবো কেন? তুমিতো প্রায়ই আমেরিকা-কানাডা ঘোরো, তোমারতো ওয়েস্টার্ণ কালচারে অভ্যস্ত হয়ে ওঠারই কথা! আই এ্যাম জাস্ট কিডিং হাসু।  শেষের শব্দটা একটু কি আহ্লাদ করে বললো না পুতুল!
আবেগের আতিশয্যে হাসুও প্রগলভা-
: তোমার ছেলেওতো...ইস্‌। কথাটা মুখে এনেও থেমে যায় হাসু। তারেকের সম্পর্কটাএখানে তোলা ঠিক হবে না। তাই মুহূর্তেই কথা ঘুরিয়ে ফেলে। তুমি কিন্তু আমার উইশ রিটার্ণ করো নি!
খানিকটা যেন ধাক্কা খায় পুতুল! হাসু কি তাকে তুমি করে বলছে? ওর সঙ্গে যে দু’একবার দু’চারটা কথাবার্তা হয়েছে তাতে তো ও আপনিই বলতো। আজ হঠাৎ...। কেউ তাকে তুমি ডাকছে, আবার তাও হাসুর মতো কেউ, এটা বেয়াদপি মনে হতে থাকে পুতুলের! পরক্ষণেই আবার মনটা আর্দ্র হয়ে যায়। থাক্‌। তাতে কি। ও ওরকমই! ফোনটা তো ও-ই আগে করেছে!  ভাবনাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দেয় পুতুল। কিন্তু হাসু থেমে থাকার পাত্রী নয়।
: তুমি কিন্তু আমার উইশ রিটার্ণ করোনি, আবারো বলে সে।
: হ্যাপি, হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে টু ইউ, মাই সুইটি...বলে হা হা করে হেসে ফেলে পুতুল। ‘আই লাভ ইউ’, দেখলে আমি কিন্তু একটু বেশি রিটার্ণ করলাম।
: একটু আস্তে বলো কথাটা। মিডিয়া শুনতে পেলে কেলেংকারি হয়ে যাবে। কোনো পত্রিকা আবার আমাদের ‘লেস’ বলে চিহ্নিত করে দেয়! আমিনী-নিজামীরা তখন সারাদেশে আগুন লাগিয়ে দেবে।
: ওদের নিয়ে ভেবো না। আর মিডিয়া নিয়ে তো না ভাবলেও চলে তোমার , কারণ ওদের সঙ্গে তোমার সম্পর্ক ভালো । কিন্তু আমিনী-নিজামীদের আমি চিনি। ওরা স্বার্থের ব্যবসা করে। আমি যদি এমনকি সেমসেক্স ম্যারেজের পক্ষে অবস্থানও নেই, ওরা দৌড়ে এসে সাপোর্ট করবে। হাদিস ঘেঁটে ঘেঁটে তার সপক্ষে ব্যাখা বের করবে। কাজেই, ওদের ছুঁচোর কেত্তন আমার জানা।
: অতোটা নিশ্চিত হয়ো না। আজ তোমাকে সাপোর্ট করছে, কাল হয়তো করবে না। ওরা বিষধর সাপ!
: নিজামী সবসময় বলতোনা যে নারী নেতৃত্ব হারাম। কিন্তু দেখলে তো, আমার নেতৃত্ব মানতে কোনো অসুবিধা হয়নি। কাজেই এসব বাদ দাও এই দিনে। ফোন কেন করেছো তা কিন্তু এখনো বলো নি।  শুধু আশে-পাশে ঝোপঝাড় পেটাচ্ছো!
: তোমাকে হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস বলতে।
: আর কিছুই না?
: ভ্যালেন্টাইনস ডে তে কি করছো বলো? কি মনে পড়ছে? কোনো সুবর্ণ অতীত?
: তুমি একটা পাগল! আমরা আবার কি করবো? ওটাতো বাচ্চাদের ব্যাপার!
পুতুল একথা বললো ঠিকই, কিন্তু মনের মধ্যে হু হু বাতাস বয়ে চলে একইসঙ্গে।  নিজের অতীতটা মনে পড়ে, আকাশ-বাতাস রঙিন হয়ে ওঠা সেই সহজ-সরল কিশোরী দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। সেই যে, ‘কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা’ দিনগুলোর কথা মনে পড়ে! মন পুড়তে থাকে হাসুরও!  লম্বা চুলের বিণুনী দুলিয়ে পাড়ার রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়া, লাজুক ভঙ্গীতে উঠতি যুবকদের দিকে না-তাকানোর ভঙ্গী করা। জীবনের কতোটা পথ পার হয়ে এসেছে আজ! মুহূর্তের ছলকে যাওয়া সময় থেকে ফিরে আসে হাসু-
: না ম্যাডাম, এখন ওটা নানী-দাদীদেরও ব্যাপার।
: তা ঠিক। কিন্তু আমরাতো শুধু নানী-দাদী নই, উই আর পলিটিশিয়ানস! হুম। সেকথা  মানে হাসু। বলে,
: এই ‘ভালোবাসা’ও একটা বড় পলিটিক্স, একথা মানো?
: মানা ছাড়া আমার উপায় আছে? সেই যে স্কুলে পড়তে পড়তে মেজরের বউ হয়ে গেলাম, তারপর থেকেই তো ‘ম্যাডাম’। ভালোবাসার  গ্রামার আর পাঠ করার সুযোগ পেলাম কই। সংসার আর ভালোবাসা এক জিনিস নয়। ওটা বরং বিপ্লবী বাবার মেয়ে হয়ে তোমারই ভালো জানার কথা!
: আরে ভাই, আমার অবস্থাও তোমার চেয়ে ভালো কিছু নয়। লীডার বাবার মেয়ে বলে কেউ আর প্রেমের চোখে তাকাতো না, হয়তো সাহসই পেতো না। আমারা দুজনই জীবনের চমৎকার অনুভূতিটি চর্চা করতে পারিনি। এ নিয়ে তোমার সঙ্গে অ-নে-ক কথা বলতে ইচ্ছে করছে। এখন ওসব দু:খের দিনের কথা থাক। তোমার ভ্যালেন্টাইনস ডে’র প্রোগ্রাম কি বলো।
: এখনও ঠিক করিনি। তবে তোমার সঙ্গে কথা বলে মনটা উদাস হয়ে গেছে। কিছু একটা করতে ইচ্ছে করছে। কিন্তু...
: কোনো কিন্তু নয়, আমার মনটা  বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে আজ। একটা আইডিয়া মাথায় এসেছে, শুনবে?
: বলো, বলো।
: সাহস আছে?
: আহ্‌। আগে বলোই না। আর তর সইছে না।
: চলো,  বেরিয়ে পরি।
: বেরিয়ে পরি মানে? কোথায়? কিভাবে? সিকিউরিটি ছাড়া?
: হ্যাঁ, তুমি আর আমি মিলে চলে যাবো  দূরে কোথাও। কোনো ফ্ল্যাগ কার নয়, সিকিউরিটি নয়, এমনকি কেউ জানবেও না। অনেক কথা বলবো  আজ বন্ধুর মতো। অনেক কিছু শেয়ার করার আছে আমাদের দুজনার। বুঝতে পারি, কতোকিছু গোপন আছে তোমার বুকের ভেতর, কতকিছু পৃথিবীর কাউকে বোঝানো যায় না। হয়তো আমরা পরষ্পর এইসব বলাবলি করে কিছুটা হালকা হতে পারবো।
: বলো কি? তবে তোমার কথা মানি। জীবনের অনেক অভিজ্ঞতা আর লুকোনো বেদনা হয়তো তোমার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারতাম যা একমাত্র তুমিই বুঝতে! এ জীবনে তা হয়তো আর হবে না। একটা দীর্ঘনি:শ্বাস বেরিয়ে আসে পুতুলের!
: ভয় পাচ্ছো?
: না,এ্যাডভেঞ্চার এ্যাডভেঞ্চার লাগছে।
: হ্যাঁ, হ্যাঁ, এ্যাডভেঞ্চার ভাবতে পারো। আমাদের দুজনের চারপাশের লোকজনের যা অবস্থা, তারা কোনোদিনই সুস্থ পরিবেশে, প্রকাশ্যে আমাদের দু’জনকে কথা বলতে দেবে না। সারাক্ষণ কানে বিষ ঢালতে থাকে যেন আমরা পরষ্পর কোনো যোগাযোগ না রাখি! তাই গোপন এ্যাডভেঞ্চারই ভালো।
: কোথায় যেতে চাও?
: যে কোনো জায়গায়। তবে উত্তরের দিকে হলে কেমন হয়? স্মৃতিসৌধ হতে পারে, জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে যে লেক আছে সেই লেকের পাড়ে, অথবা গাজীপুরে। কোথাও, কোনো নিরিবিলি জায়গায় গিয়ে মুখোমুখি বসে কথা বলবো, শুধু তুমি আর আমি।
: ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। গল্প গল্প লাগছে!
: ঠিকই বলেছো! এমন ভাবনা ভাবতেও সুখ লাগছে। বসে বসে গল্প করবো, বাদাম খাবো, চানাচুর খাবো। বাচ্চা ছেলেরা ফ্ল্যাক্লে করে  চা বিক্রি করতে  এলে সেই চা খাবো। আচ্ছা, তুমি ওই চা খেতে পারবে তো!
: উম্‌, ঠিক আছে, আজ না হয় খেলাম।
একটু চুপ হয়ে যায় হাসু। তার মানে তুমি রাজী?
: কিন্তু হাসু, আমি তোমার নিরাপত্তার কথা ভাবছি। তুমি প্রধানমন্ত্রী, জঙ্গীরা তোমার পেছনে...
: ধ্যাৎ, একদিনের জন্য আমি সব ভুলে যেতে চাই। উপেক্ষা করতে চাই। তা ছাড়া তুমি যখন সঙ্গে আছো, জঙ্গিরা হামলা-টামলা করবে না। ভাববে, তাদের নেত্রীও তো...
: হাসু...
হাসুর কথা শেষ হওয়ার আগেই থামিয়ে দেয় পুতুল। দুজনই বেশ কিছুক্ষণ চুপচাপ টেলিফোনটা ধরে বসে থাকে। হাসুর নি:শ্বাসের শব্দ শুনতে পায় পুতুল। পুতুলের শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ শুনতে পায় হাসু। কিন্তু কেউ কোনো কথা বলে না।
: হাসু, নীরবতা ভাঙ্গে পুতুল।
: হুম...
: তোমার ব্যাকগ্রাউণ্ডে একটা গান বাজছে, না?
: হ্যাঁ, তুমি শুনতে চাও? বলেই সাউণ্ডটা বাড়িয়ে দেয় হাসু। সুরটা বেজে চলে-
‘ যেভাবেই তুমি সকাল দেখো, সূর্য কিন্তু একটাই...’ কথাগুলো পুতুলকেও কেমন ভিজিয়ে দেয়।
: তাহলে গেট রেডি। বলেই খানিকটা চুপ করে থাকে পুতুল। তারপর কিছুটা সময় নেয়। বলে, হাসু শোনো, এখন মনে হচ্ছে সত্যিই আমি এই বদ্ধ ঘরে ভ্যালেন্টাইনস উৎসব  করছি আজ!
আবারো কিছুক্ষণ নিরবতা। ফোনটা রেখে দেওয়ার আগে আরেকবার শব্দ করে ডাকে—হাসু....
নিজেই চমকে উঠে পুতুল। একটু বেশি জোরে হয়ে গেলো কি  ডাকটা?
: বলো—জবাব দেয় হাসু।
: তোমাকে একটা  কথা বলতে ইচ্ছে করছে আমার।
: বলো।
: শুনে হাসবে না তো?
:আহা বলেই ফেলো না?
: ইউ আর মাই ভ্যালেন্টাইন হাসু, হ্যাপি ভ্যালেন্টাইনস ডে!
লাইনটা  কেটে দেয় পুতুল। ফোনটার দিকে তাকিয়ে আপন মনে গেয়ে উঠে.. ‌’যতো ভাগে ভাগ করো প্রেম  হৃদয় কিন্তু একটাই .....’.। গানের কলিটা ভাজতে ভাজতেই ওযাডৃরোবের দিকে এগুতে থাকে সে। তাকে রেডি হতে হবে দ্রুত।
(এটি নিতান্তই লেখকের মনের কল্পনা।পাঠক অনুগ্রহপূর্বক এর কোনো সংলাপ,বিবরন কিংবা বক্তব্যে বাস্তবতা খুঁজবেন না। )

সূত্র : নতুন দেশ

No comments:

Post a Comment

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ