প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Tuesday, September 13, 2011

পৃথিবির সবচেয়ে ছোট পাখি

আমাদের চারপাশে আছে হাজারও পাখি। যেমন তাদের নাম তেমনই আকার আবার তেমনই গায়ের রঙ। বুলবুলি, ময়না, টিয়া, দোয়েল, শালিক, বক, মাছরাঙা, চড়-ই আরও কত পাখি। এগুলো সবই আমাদের দেশীয় পাখি। আমাদের খুবই চেনাজানা। এরকম নাম জানা-অজানা অনেক পাখি রয়েছে পৃথিবী জুড়ে। আকারে কোনওটা ছোট আবার কোনওটা বড়। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাখি হলÑ উটপাখি। আর সবচেয়ে ছোট পাখিটি হচ্ছে হামিং বার্ড। ছোট পাখি হামিং বার্ডের দৈর্ঘ্য মাত্র ৫ মিটার। আর ওজন মাত্র ১.৮ গ্রাম। এরা বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এদের গড় আয়ু ৩ থেকে ৫ বছর হয়। মজার বিষয় হচ্ছে, পুরুষ হামিং বার্ড আকারে মেয়ে হামিং বার্ড থেকে ছোট। শুধু আকারেই নয় আরও পার্থক্য আছে মেয়ে এবং পুরুষ হামিং বার্ডের মধ্যে। পুরুষ পাখির লোম সবুজ রঙের হয়। এদের পাখার উপরের দিকটা নীল বর্ণের আর শরীরের নিচের দিকটা বেশির ভাগ সময় ধূসর সাদা হয়ে থাকে। আর মেয়ে হামিং বার্ডের মাথার ওপরের দিকটা নীলচে সবুজ রঙের হয়। সরু লেজে থাকে সাদা রঙের ফোটা ফোটা দাগ।
হামিং বার্ড ছোট হলেও কিস্তু এদের শরীরে অনেক শক্তি। হেলিকপার যত উঁচুতে উড়ে হামিং বার্ডও ঐ উচ্চতায় উঠতে পারে। তবে উঁচুতে উড়তে পারলেও এরা অনান্য পাখির মতো হাঁটতে পারে না। দেহের আকার ছোট এবং সেই সঙ্গে তাদের ডানাগুলো বেশ বড় বলে হামিং বার্ড বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে পারে না। সবচেয়ে অবাক করার মতো বিষয় হল এরা প্রজাতিভেদে সেকেন্ডে ১২ থেকে ৯০ বার নিজেদের পাখা নাড়াতে পারে। এ কারণেই চোখের পলকে অনেকটা দূরে চলে যেতে পারে হামিং বার্ড। সাধারণত এদের ওড়ার গতি ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। অন্য পাখিরা শুধু সামনের দিকে উড়তে পারে কিন্তু হামিং বার্ড কেবল সামনেই নয়, পেছন দিকেও উড়তে পারে। বাসা বানানোর কাজ মেয়ে হামিং বার্ডকেই করতে হয়। বাসা তৈরিতে এরা মাকড়সার জাল, গাছের বাকল এবং বিভিন্ন ধরনের ছত্রাক ব্যবহার করে। বাসার আকার দেখতে হয় ঠিক কাপের মতো। একটি মেয়ে হামিং বার্ড এক সঙ্গে দুইটি ডিম পাড়ে। ডিমগুলো এতই ছোট যে দেখলে শস্যদানা মনে হয়। মা পাখিটি ডিমগুলো তার ছোট্ট বাসায় রাখে। বাসা বানানোর ব্যাপারে পুরুষ পাখির তেমন কোনও মাথাব্যাথা নেই। হামিং বার্ডে প্রধান খাবার ফুলের মধু। ছোট ছানারা মায়ের দেওয়া খাবার খায় আর বড়রা নিজেরাই ফুলের মধু সংগ্রহ করে খায় । সারাদিন ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায়। হামিং বার্ড দিনে প্রায় ১৫০০ ফুলের মধু সংগ্রহ করে থাকে।
লাল রঙের ফুল হামিং বার্ডের বেশি পছন্দ। তাই বেশির ভাগ সময় এরা লাল রঙের ফুল থেকেই মধু সংগ্রহ করে থাকে। মধু খাবার সঙ্গে সঙ্গে এরা গাছেরও কিছু উপকার করে দেয়। কারণ হামিং বার্ড যখন ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়ায় তখন এদের পায়ের এবং পাখার সঙ্গে ফুলের রেণু জড়িয়ে যায়। এতে গাছের পরাগায়ণ ভালো হয়। গাছের পরাগায়ণ কাজ সাধারণত করে থাকে মৌমাছি। মৌমাছির মতো এরাও পরাগায়ণে সাহায্য করার করণে অনেকেই হামিং বার্ডকে বড়ো মৌমাছি বলে থাকে।

No comments:

Post a Comment

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ