প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Monday, October 3, 2011

ওজন কমানোর সঠিক ফর্মুলা || তামান্না শারমিন

ওজন কমিয়ে ছিপছিপে হওয়ার জন্য আমাদের চেষ্টার অভাব নেই । স্ট্রিট ডায়েট, এক্সারসাইজের শাসন কোনো কিছুই মানতে অসুবিধা নেই। তবু ঠিক যতটা চাইছেন ততটা রোগা হতে পারছেন না। তাই এবার জেনে নিন ওজন কমানোর সঠিক পদ্ধতি। লিখেছেন তামান্না শারমিন
যেসব কারণে ওজন বৃদ্ধি পায়
দেহের চাহিদার অতিরিক্ত খাওয়া বিশেষ করে ফ্যাট, ক্যালসিয়াম ও ক্যালরিযুক্ত খাবার বেশি হলে ওজন বৃদ্ধি পায়। মদ্যপান, অতিরিক্ত মানসিক চাপ, অতিরিক্ত ঘুম, স্টেরয়েড এবং অন্যান্য নানা ধরনের ওষুধ গ্রহণের ফলেও ওজন বাড়তে পারে। অতিরিক্ত আরাম-আয়েশ ও শারীরিক পরিশ্রম কম হলে দেহে চর্বি জমে এবং ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে থাকে।
ওজন হ্রাস করার কয়টি সহজ পদ্ধতি
যেহেতু ওজন বৃদ্ধি মেদ বা ভুঁড়ি প্রভৃতি সমস্যা সৃষ্টি করে সেহেতু আগে থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। প্রথমেই ওজন বাড়ার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন এবং ধীরে ধীরে তা প্রতিরোধ করুন। সাধারণত খাদ্যাভ্যাস, অপ্রতুল কায়িক পরিশ্রম কিংবা অসুখই এর প্রধান কারণ।
অতিরিক্ত ওজন কমানোর সহজ উপায় হলো সঠিক ও পরিমিত খাদ্য গ্রহণ এবং প্রচুর কায়িক পরিশ্রম, ব্যায়াম করা। যারা কায়িক শ্রম বেশি করেন তাদের ব্যায়ামের প্রয়োজন নেই। নিয়মিত হাঁটা খুব ভালো ব্যায়াম। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে হাঁটতে পারেন, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা, ত্রিকোণ আসন প্রভৃতি ওজন কমানোর জন্য খুবই উপকারী।
চর্বি জাতীয় খাবার যেমন মাখন, তেল, গরু বা খাসির মাংস, বাটার প্রভৃতি থেকে দূরে থাকতে হবে। শরীরের জন্য এগুলো প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু নির্দিষ্ট পরিমাণে, যার কম-বেশি হলে সমস্যা দেখা দেয়। এজন্য অনেক সময় দেখা যায়, ওজন কমাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে অনেকে। এজন্য প্রয়োজন খাদ্য গ্রহণ পরিমাণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া। প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি ও ফলমূল খাবেন এবং বেশি বেশি পানি পান করবেন। একবারে বেশি খাবেন না, একটু পর পর অল্প অল্প করে খাবেন। ক্ষুধা লাগলে শশা বা ফল খেয়ে নেবেন। কারণ শশা ও টকফল ওজন হ্রাসে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আজকাল অপারেশনের সাহায্যে ভুঁড়ি বা মেদ কমানো হচ্ছে। লাইপোসাকশন বা অ্যাবডোমিনো ফ্লিস্টর সাহায্যে মেদ কমানো হচ্ছে। কিন্তু এটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে অনেক।
ওজন হ্রাসকারী খাদ্যে ক্যালসিয়াম ও লোহার অভাব ঘটতে পারে। এ ক্ষেত্রে ডিম, কলিজা লোহার চাহিদা পূরণ করবে। চেষ্টা করবেন লবণ বর্জিত খাদ্যগ্রহণ করতে।
এ ক্ষেত্রে খাবার মেপে মেপে খাওয়ার প্রয়োজন নেই, মোটামুটি একটা হিসাব করলেই চলবে। শরবত, কোকাকোলা, ফান্টা ইত্যাদি মৃদু পানীয় সব রকম মিষ্টি, তেলে ভাঁজা খাবার, চর্বিযুক্ত মাংস, তৈলাক্ত মাছ, বাদাম, শুকনাফল, ঘি, মাখন, সর ইত্যাদি পরিহার করা প্রয়োজন। শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য ক্যালরির প্রধান উত্স। অধিক চর্বিযুক্ত কম ক্যালরির খাদ্যে স্থূল ব্যক্তির ওজন খুব দ্রুত কমে। ওজন কমাতে পরিশ্রম ও নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সকাল :দুধ ছাড়া চা বা কফি, দুটো আটার রুটি, একবাটি সবজি সিদ্ধ, ১ বাটি কাঁচা শশা। শশা ওজন কমাতে জাদুর মতো কাজ করে।
দুপুর :৫০-৭০ গ্রাম চালের ভাত। মাছ বা মুরগির ঝোল ১ বাটি। এক বাটি সবজি ও শাক, শশার সালাদ, এক বাটি ডাল এবং ২৫০ গ্রাম টক দই।
বিকাল :দুধ ছাড়া চা বা কফি, মুড়ি বা বিস্কুট ২টা।
রাত :আটার রুটি তিনটা, একবাটি সবুজ তরকারি, একবাটি ডাল, টকদই দিয়ে এক বাটি সালাদ এবং মাখন তোলা দুধ।
দৈনিক এক গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করলে দেহে প্রোটিনের অভাব থাকে না। ৬০ কিলোগ্রাম ওজন বিশিষ্ট ব্যক্তির খাদ্য ৬০ গ্রাম প্রোটিন হলেই ভালো হয়। প্রতি মাসে একদিন ওজন মাপতে হবে, লক্ষ রাখতে হবে, ওজন বাড়ার হার কম না বেশি। ওজনবৃদ্ধি অসুখের লক্ষণ। মেদ বা ভুঁড়ি এদের অতিরিক্ত ওজন কোনোটাই স্বাস্থ্যের লক্ষণ নয়। বরং নানা অসুখের কারণ হয়ে দেখা দেয়, একথা সবসময় মনে রাখবেন এবং স্বাস্থ্য-সচেতন হবেন।

No comments:

Post a Comment

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ