প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Showing posts with label শিশু. Show all posts
Showing posts with label শিশু. Show all posts

Monday, July 2, 2012

আলোকিত শিশুই আলোকিত মানুষ | আবদুল কুদ্দুস রানা

আলোকিত শিশুই আলোকিত কিছু মানুষের সূচনা। শিশু তার জন্মলগ্ন থেকে তার পরিবার, স্কুল তার সমাজে  তার স্বীয়  প্রতিভা ও মেধা বিকাশের মধ্যে সমাজকে আলোকিত করে। সমাজে আলোকিত শিশুর জন্ম ও বিকাশ না হলে আলোকিত মানুষে জন্ম হবে না। তাই অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাইদ এর সে কথা আমার মনে পড়ে আলোকিত মানুষ চাই। কিন্তু আমার উক্তি হচ্ছে শুধু আলোকিত মানুষই  নয়- আলোকিত শিশু চাই। ছোট বেলায়  আমি পড়েছিলাম মানুষ জীবের উপর কোন হাত নেই। কিন্তু কর্মে আছে তার পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। অর্থাৎ জন্ম হোক যথা কর্ম হোক ভাল। একটি শিশুর প্রথম শিক্ষক হচ্ছে তার মা। মায়ের  কাছ থেকেই  একটি শিশু তার জ্ঞানের  প্রথম ছোঁয়ায় সিক্ত হয়। সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি সারাদিন আমি যেন ভাল হয়ে চলি। কবি এই অমর  কবিতাটি  প্রথম জ্ঞান ও জীবনে দিকনির্দেশনা দিয়ে শিশুর জীবনে ভাল মন্দের ব্যবধায় শিখায়। জীবনে এসে খুঁজে পায় নতুন জীবনের নতুন দিগন্ত। খুঁজে পায়  সহপাঠী,বন্ধু, বাবর মত শিক্ষাগুরু। সেই সাথে খুঁজে পায় নতুন জীবনে নতুন সমাজ। সেখান থেকেই  খুঁজে পায় বাস্তবতার নতুন  ছোঁয়া। জীবনকে কাছ থেকে দেখে বাস্তব জীবনের  নিরিখে। সমাজের ভাল মন্দ উপলদ্ধি করতে শিখে। শিশু জীবনে  রেখাপাত  করে সেই ভাল  মন্দের  ছোঁয়া। স্কুলে দাঁড়িয়ে  পড়া বলা, কবিতা আবৃত্তি চর্চা, প্রতিদিন  এসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত ও শপথ পাঠ করা। শারীরিক কসরত বা পিটি করা। শিশু বেলা থেকে আবার অনেক বিষয়ে অনেকের  মাঝে নেতৃত্বের চর্চা শুরু হয়। ক্লাস ক্যাপটেন ও ক্লাস লিডারের মাধ্যমে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুনাবলী  অর্জিত হয়। এই ভাবে অর্জিত হয় মেধা বিকাশ। হাই স্কুল ও কলেজ জীবনে এসে সে অনেক বাস্তবতার মাঝে বেড়ে উঠে। সেই সাথে সে তখন ভাল মন্দ বিচার করতে শিখে। সামাজিক  অর্থনৈতিক  ও রাজনৈতিক বিষয় তার সামনে আসে। সেখানে এসে আবার খুঁজে পায় নতুন পথের সন্ধান। এখানে এই সময়টি তার জীবনে কঠিন সিদ্ধান্ত ও বাস্তবতার নতুন দিগন্ত। ছেলে মানসী আর জীবন পথে বিভ্রান্তিতে অনেকেই হারিয়ে যায় অন্ধকারে। কলেজ জীবনে এসে জ্ঞানের নতুন আলোয়  আলোকিত হয়। জ্ঞান ভান্ডার প্রসারিত করে। অনেকে স্কাউট, রেডক্রিসেন্ট, বিএনসিসি কার্যক্রম সংযুক্ত হয়ে জ্ঞান ও আলোকিত মানুষ হবার  স্বপ্ন দেখে। নেতৃত্বের গুনাবলী  অর্জন করে। এই সময়  অনেকে সামাজিক  কাজে অংশ নেয়, সাংস্কৃতিক খেলাধূলা, সাংবাদিকতার চর্চায় নিজেকে ব্যস্ত রাখে। তাই তাদের মধ্যে লেখাপড়ার  পাশাপাশি জ্ঞানের  বহু মাত্রিক গুনাবলীর বিকাশ ঘটে। নেতৃত্ব প্রদানে যে বিকশিত হয় শিক্ষাজীবন শেষে বিভিন্ন পর্যায়ে সে তার স্বীয়  যোগ্যতার অবদান রাখার পাশাপাশি সে তার অর্জিত আলোক ধারা  জীবনে প্রতিটি বিকশিত করার মধ্যে তার অবদান রাখে। ছোট পরিসরে আমার এই লেখাটি শুধুমাত্র আলোকিত মানুষ খুঁজতে নয়, আমি সব সময়  আলোকিত শিশু, আলোকিত তরুণ, আলোকিত যুবক খুঁজতে। আমাদের আগামী প্রজন্মকে একটি সুন্দর  জীবন ও সমাজ উপহার দেওয়া আমাদের উচিত। আলোকিত শিশুর জীবন বিকাশের পথে সহযোগিতা করা। সামাজিক স্বীকৃতি আর পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া আলোকিত শিশুর জীবন বিকাশের পথকে বাঁধা সৃষ্টি করা। সামাজিক ভাবে আমরা আমাদের  শিশুদের মেধা বিকাশের মাধ্যমে একজন আলোকিত মানুষ পরিণত করতে পারি। সেই জন্য আমাদের প্রয়োজন সমাজে অবস্থিত কালিমা গুলোকে দূরে সরিয়ে আলোকিত  মানুষের জন্য আলোকিত পথকে স্বাগত জানানো। তবেই সমাজ থেকে বেরিয়ে আসবে আলোকিত মানুষ।
লেখক: তরুন সংগঠন

Tuesday, September 20, 2011

শিশুর মানসিক বিকাশ

রোহানদের বাসায় অতিথি এসেছে, ওর খালঅ-খালু। ড্রইংরুমে বসে ওর মা-বাবা আর অতিথিরা গল্প করছেন। ছয় বছর বয়সী রোহান ওর সমবয়সী খালাতো ভাই রাফির সঙ্গে খেলছে। হঠাৎই রোহানের ঘর থেকে কান্না আর চিৎকার। ওর মা-বাবা, খালা-খালু সবাই ওর ঘরে গিয়ে হতবাক। রোহান রীতিমতো রাফির চুল ধরে টানছে আর বাজে ভাষায় গালাগালি করে ওর সঙ্গে কথা বলছে। এই দৃশ্য রোহানের মা-বাবার জন্য নতুন নয়। তবে অনেক বকাঝকা করে বাঘ মামা আর ডাইনিবুড়ির ভয় দেখিয়ে বদলাতে পারেননি ছেলের এই অভ্যাস। এরকম পরিস্থিতিতে হয়তো আপনিও পড়েছেন আপনার সন্তানকে নিয়ে। ঐ মুহূর্তের জন্য না হয় ধমক দিয়ে বা চড় দিয়ে থামিয়ে দিলেন ছোট বাচ্চাটিকে। কিন্তু এর কারণ জানার চেষ্টা করেছেন কি কখনও?
এ বিষয়ে কথা হয় সাইকোলজিস্ট শুভাশীষ বিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'যেহেতু শিশুরা তার আশপাশের সবকিছুই খুব দ্রুত রপ্ত করে নেয় এবং তাদের মধ্যে ভুল-সঠিক বোঝার সামর্থ্য থাকে না, তাই তাদের যে কোনো ভুলের জন্য পিতা-মাতার উচিত তাদের মধ্যে কোনো প্রকার ভীতির সৃষ্টি না করে আন্তরিকভাবে বোঝানো। নতুবা ভুল শাসন তাদের মানসিক বিকাশকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।' তিনি আরও বলেন, 'আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি যে, বর্তমানে অধিকাংশ পিতা-মাতাই এ বিষয়ে যথাযথভাবে সচেতন নয়, যা আমাদের সন্তানদের জন্য শুধু দুর্ভোগই বয়ে আনছে।'
শিশুরা তার আশপাশ থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। সাধারণত বাসায় বাবা-মায়ের ঝগড়া, বাড়ির পার্শ্ববর্তী পরিবেশ অথবা শিশুর স্কুলের পরিবেশও তাদের ভুল শিক্ষার জন্য দায়ী। সর্বপরি বাবা-মায়ের সচেতনতার অভাব শিশুদের ভুল শিক্ষার দিকে ঠেলে দেয়। বর্তমানে আকাশ সংস্কৃতির মাত্রাতিরিক্ত প্রসার এবং সেখানে শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের অনুপস্থিতিও শিশুদের নৈতিকতার শিক্ষা থেকে দূরে নিয়ে যাচ্ছে বলে সাইকোলজিস্ট শঙ্কা প্রকাশ করেন।
সাইকোলজিস্ট শুভাশীষ বিশ্বাস বলেন, 'শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য বাবা-মাকে বাসায় অবশ্যই সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। তাদের ভুল-ত্রুটির জন্য কড়া শাসনে না রেখে সময় নিয়ে স্বাভাবিক ব্যবহার বজায় রেখে তাদের ভুল-ত্রুটিগুলো বুঝিয়ে দিতে হবে। কারণ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কড়া শাসনে শিশুদের মনে বড়দের প্রতি মান্যতা ও শ্রদ্ধা লোপ পায়।' এ ছাড়া শিশুরা কাদের সঙ্গে মেশে, স্কুলে কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে, টিভিতে কী দেখছে সে বিষয়ে খেয়াল রাখাও পিতা-মাতারই দায়িত্ব। তবে 'শিশুকে কোনো কিছু করতে বারণ করে নয়, বরং বিশ্বস্ত বল্পুব্দর মতো পাশে থেকে তাদের ভুল-ত্রুটিগুলো চিনে নিতে সহায়তা করাই বাবা-মার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা হওয়া উচিত।
আপনার সন্তানটির মানসিক বিকাশে যথার্থ পদক্ষেপ নেওয়া, বেড়ে ওঠায় সবসময় তাদের পাশে থাকা এবং বিশ্বস্ত বন্ধুর মতো পাশে থেকে তাদের নৈতিকতার
দীক্ষায় গড়ে তোলাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত। কারণ কিছুটা সময়, সচেতনতা, একটু আদর আর ভালোবাসাই পারে শিশুর মানসিক বিকাশের পথ মসৃণ করতে।

লেখা :কমরুল চৌধুরী
ছবি : আরমান হোসেন বাপ্পি
সূত্র : সমকাল

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ