প্রাচীন গৌড়ের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ এলাকা এক সময় মসজিদের নগরীতে পরিণত হয়েছিল বললে খুব একটা ভুল হবে না। কারণ এ এলাকায় আজও রয়েছে একাধিক প্রাচীন মসজিদ। তবে সেগুলোর মধ্যে কিছু কিছু অক্ষত থাকলেও কালের আবর্তে অনেক মসজিদ আবার ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। আর এর মধ্যে খঞ্জনদীঘির মসজিদ অন্যতম। দারুসবাড়ি মসজিদের দক্ষিণদিকে অবস্থিত বল্লাল সেন খননকৃত বালিয়াদীঘির দক্ষিণ পাড় ঘেঁষে পুবদিকে কিছুদূর এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে খঞ্জনদীঘির মসজিদের ধ্বংসাবশেষ। একটি প্রাচীন জলাশয়ের পাশে এর ধ্বংসাবশেষ আজও রয়েছে। তবে সংস্কার করা হলে এখানে আবারও নামাজ আদায়সহ ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করা সম্ভব বলে অনেকেই মনে করেন। এলাকার প্রবীণ লোকদের কাছ থেকে জানা যায়, খঞ্জনদীঘির মসজিদটি অনেকের কাছে খনিয়াদীঘির মসজিদ নামেও পরিচিত। আবার অনেকে একে রাজবিবি মসজিদও বলে থাকেন। এই মসজিদের আয়তন ছিল ৬২৪২ ফুট। মসজিদটির নিচের ইমারত বর্গের আকারে তৈরি। এই বর্গের প্রত্যেক বাহু ২৮ ফুট লম্বা। এটির মাঝে একটি গম্বুজ ছিল। ইটের তৈরি এই মসজিদের বাইরে দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ করা ছিল। যার সামান্য নমুনা আজও চোখে পড়ে। বহুকাল ধরে মসজিদটি জঙ্গলের ভেতর পড়েছিল। কিন্তু কয়েক দশক আগে এ এলাকায় জঙ্গল কমে গেলে মসজিদটি মানুষের নজরে পড়ে। কিন্তু ইতোমধ্যে মসজিদটি প্রায় বিলীনের অবস্থায় চলে এসেছে। তবে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এখন এটিকে টিকিয়ে রাখতে এগিয়ে এসেছে। বর্তমানে খঞ্জনদীঘির মসজিদটির একটি মাত্র গম্বুজ ও দেয়ালের কিছু অংশ টিকে আছে। কিন্তু এগুলোর অবস্থাও খুব জীর্ণ আকার ধারণ করেছে। এই মসজিদটি কখন নির্মিত হয়েছিল এবং কে নির্মাণ করেছিলেন সে সম্পর্কে কিছুই জানা যায়নি। তবে মসজিদ তৈরির নমুনা দেখে পণ্ডিত ব্যক্তিরা মনে করেন পনের শতকে নির্মিত হয়েছিল খঞ্জনদীঘির মসজিদ ।
*মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
*মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
No comments:
Post a Comment