টিনের চালে পড়া বৃষ্টির শব্দ যে নুপূরের শব্দের মত কানে বাজে... |
টিপ টিপ বৃষ্টি! রোদের লুকোচুরি খেলা। মেঘেদের ছুটে চলা। সবুজ সজীবতায় চারদিক। টিনের চালায় ঝুমঝুমাঝুম বৃষ্টি। এরই নাম বর্ষা। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। প্রধান তিন ঋতুর মধ্যে বর্ষা অন্যতম। রঙিন বৈশাখ শেষে আম, কাঁঠালের জ্যৈষ্ঠ মাস। এ মাসে রুক্ষতা ছুঁয়ে থাকে প্রকৃতিতে। এক্কেবারে কাঠফাটা রোদ্দুর। এসব থেকে মুক্তি মিলে বর্ষায়। বর্ষা বাংলাদেশের আনন্দ- বেদনার এক ঋতু। টানা বর্ষণের পর পৃথিবীতে প্রাণের স্পন্দন জেগে উঠে। বর্ষার আগমনে তাই বাংলার রূপ বদলে যায়। এসময় আকাশে সারাক্ষণ চলে ঘনকালো মেঘের আনাগোনা। সাধারণতঃ আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস বর্ষাকাল। কিন্তু আমাদের দেশে বর্ষার আগমন অনেকটা আগেই ঘটে থাকে। কোন কোন সময় জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে শুরু করে আশ্বিণ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়। সে হিসেবে বর্ষা বাংলাদেশের দীর্ঘতম ঋতু। অনেক সময় দেখা যায় শরৎকেও পেরিয়ে যায় বর্ষা। বর্ষার আগমনে মানুষ, জীব- জন্তু, গাছপালা, পশু- পাখি সব যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচে। নদী- নালা, খাল- বিল পানিতে ভরে যায়। ফোটে কদম, কেয়া ফুলসহ আরো নানা ফুল। গাছে গাছে সবুজ পাতা আর নানা ফুলের সমারোহ। উর্বর হয়ে উঠে ফসলের ক্ষেত। সব মিলিয়ে প্রকৃতি এক অফুরান্ত সৌন্দর্যের উৎস হয়ে মানুষের মনে আনন্দের জোয়ার বয়ে আনে।
বর্ষা মজার একটা ঋতু। বর্ষা ঘিরে আমাদের আছে নানারকম স্মৃতি। শহরে বর্ষা মানে ফ্ল্যাট বাড়ির বারান্দা। আবার সেটাও মা বাবার চোখকে উপেক্ষা করে। ঠান্ডা লাগবে তাই আগলে রাখেন তাদের। দুষ্টুমিটাও ঠিক হয়ে উঠে না।
কিন্তু গ্রামটা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। মেঠো পথ, কদমাক্ত রাস্তা। রাস্তার দু’পাশে ধান ক্ষেত। কৃষকরা ভোরে ঘুম থেকে উঠে গরু নিয়ে ছোটেন ক্ষেতে। হাল চাষ করেন। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও খেঁজুর কিংবা সুপারি ডাল বেড়ে ঝরে পড়ে পানির ফোটা। অন্যরকম একটা দৃশ্য। নদীর দু’কূল ছাপিয়ে বর্ষার পানি গ্রামে প্রবেশ করে। তখন গ্রাম গুলোকে মনে হয় নদীর বুকে জেগে উঠা একটা দ্বীপ। বর্ষায় পল্লীর দৃশ্য সত্যিই অপূর্ব! বর্ষা উপলক্ষে গ্রামে হয় নানারকম অনুষ্ঠান। পালা বা জারির আসর বসে। পিঠা বানিয়ে সবাই আনন্দ করে খায়। অনুষ্ঠান ছাড়াও ঘরে ঘরে বর্ষার আড্ডা জমে। সবাই মিলে নানা আয়োজন করে থাকে। বর্ষার বিলে শান্ত পানিতে রাতের চিত্রটা দারুন। দূরের আকাশে তারার মেলা। তাদের ছায়া এসে পড়ে বিলের পানিতে। অথবা চাঁদের আলো। মায়াবী জোছনা। হালকা আলোয় আলোকিত গ্রামীণ চিত্রটা মনে রাখার মত। সুবহানাল্লাহ! কি সুন্দর আমাদের বাংলাদেশ। আল্লাহর অশেষ নিয়ামত। বর্ষায় প্রকৃতি সজীব সতেজ থাকে। পাখির ডাক কম থাকে, কিন্তু মাছে মাছে ভরে থাকে খাল-বিল। জেলেরা সুমদ্রে ছুটে যান ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে। চলে যান গভীর থেকে গভীরে। কোন সতর্ক সঙ্কেত তাদের আটকাতে পারে না। শহরের ফুটপাতের মানুষগুলো সন্ধ্যা নামলে অপেক্ষা করতে থাকে। কখন বৃষ্টি থামবে। বৃষ্টি না থামলে যে তারা ঘুমহীন রাত কাটাতে হবে। গ্রামের গরীব মানুষদের অবস্থাও অনেকটা এরকম। টাকার অভাবে ঘরে ভাল চাল দিতে পারে না। শণ কিংবা খড়ের তৈরি চাল। বৃষ্টি এলে খড় ডিঙ্গিয়ে বৃষ্টির পানি ঘরে। বাহিরে বৃষ্টি যদি হয় এক ঘন্টা, ঘরে বৃষ্টির পানি পড়ে আরো এক ঘন্টা। ঘুমহীন ভাবে কাটাতে হয় রাত।
বৃষ্টির পানিতে পল্লীর রাস্তাঘাট কাঁদায় ভরে উঠে। কোথাও বা ডুবে যায় পানির নিচে। চলাচলে হয় অসুবিধা। তখন গরীব দিন মজুরদের দুর্দশা বেড়ে যায়। কাজ না থাকায় তাদের দুঃখের সীমা থাকে না।
তবুও আল্লাহর দুনিয়ার নিয়মমত বর্ষা আসে। আবহাওয়া বদলায়। বরফ গলে যাচ্ছে। তার প্রভাব এসে পড়ছে আমাদের মত গরীব দেশে। এখন বর্ষাকালে রোদ হয়। ক্ষরা থাকে। আবার দেখা যায় চৈত্র মাসেও বৃষ্টি হয়। ঋতুর যত পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, বর্ষা আসে অন্য রকম আনন্দ- কষ্ট নিয়ে। বৃষ্টির শব্দ, ব্যাঙের সঙ্গীত, জেলের ছুটে চলা, কৃষকের ব্যস্ততা আছে আগের মত। এখন অবশ্য অনেক কিছু বদলেছে। গ্রামে লেগেছে নগরের হাওয়া। পাকা বাড়ি হচ্ছে। পাকা রাস্তা হচ্ছে। তবুও কিছু আনন্দ থেকেই যায়। সবাই মিলে মিশে আনন্দে মাতেন।
আনন্দ ভরে থাকুক আমাদের সারাজীবন। আনন্দে কাটুক বাংলাদেশের মানুষের জীবন।
বর্ষা মজার একটা ঋতু। বর্ষা ঘিরে আমাদের আছে নানারকম স্মৃতি। শহরে বর্ষা মানে ফ্ল্যাট বাড়ির বারান্দা। আবার সেটাও মা বাবার চোখকে উপেক্ষা করে। ঠান্ডা লাগবে তাই আগলে রাখেন তাদের। দুষ্টুমিটাও ঠিক হয়ে উঠে না।
কিন্তু গ্রামটা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। মেঠো পথ, কদমাক্ত রাস্তা। রাস্তার দু’পাশে ধান ক্ষেত। কৃষকরা ভোরে ঘুম থেকে উঠে গরু নিয়ে ছোটেন ক্ষেতে। হাল চাষ করেন। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরও খেঁজুর কিংবা সুপারি ডাল বেড়ে ঝরে পড়ে পানির ফোটা। অন্যরকম একটা দৃশ্য। নদীর দু’কূল ছাপিয়ে বর্ষার পানি গ্রামে প্রবেশ করে। তখন গ্রাম গুলোকে মনে হয় নদীর বুকে জেগে উঠা একটা দ্বীপ। বর্ষায় পল্লীর দৃশ্য সত্যিই অপূর্ব! বর্ষা উপলক্ষে গ্রামে হয় নানারকম অনুষ্ঠান। পালা বা জারির আসর বসে। পিঠা বানিয়ে সবাই আনন্দ করে খায়। অনুষ্ঠান ছাড়াও ঘরে ঘরে বর্ষার আড্ডা জমে। সবাই মিলে নানা আয়োজন করে থাকে। বর্ষার বিলে শান্ত পানিতে রাতের চিত্রটা দারুন। দূরের আকাশে তারার মেলা। তাদের ছায়া এসে পড়ে বিলের পানিতে। অথবা চাঁদের আলো। মায়াবী জোছনা। হালকা আলোয় আলোকিত গ্রামীণ চিত্রটা মনে রাখার মত। সুবহানাল্লাহ! কি সুন্দর আমাদের বাংলাদেশ। আল্লাহর অশেষ নিয়ামত। বর্ষায় প্রকৃতি সজীব সতেজ থাকে। পাখির ডাক কম থাকে, কিন্তু মাছে মাছে ভরে থাকে খাল-বিল। জেলেরা সুমদ্রে ছুটে যান ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে। চলে যান গভীর থেকে গভীরে। কোন সতর্ক সঙ্কেত তাদের আটকাতে পারে না। শহরের ফুটপাতের মানুষগুলো সন্ধ্যা নামলে অপেক্ষা করতে থাকে। কখন বৃষ্টি থামবে। বৃষ্টি না থামলে যে তারা ঘুমহীন রাত কাটাতে হবে। গ্রামের গরীব মানুষদের অবস্থাও অনেকটা এরকম। টাকার অভাবে ঘরে ভাল চাল দিতে পারে না। শণ কিংবা খড়ের তৈরি চাল। বৃষ্টি এলে খড় ডিঙ্গিয়ে বৃষ্টির পানি ঘরে। বাহিরে বৃষ্টি যদি হয় এক ঘন্টা, ঘরে বৃষ্টির পানি পড়ে আরো এক ঘন্টা। ঘুমহীন ভাবে কাটাতে হয় রাত।
বৃষ্টির পানিতে পল্লীর রাস্তাঘাট কাঁদায় ভরে উঠে। কোথাও বা ডুবে যায় পানির নিচে। চলাচলে হয় অসুবিধা। তখন গরীব দিন মজুরদের দুর্দশা বেড়ে যায়। কাজ না থাকায় তাদের দুঃখের সীমা থাকে না।
তবুও আল্লাহর দুনিয়ার নিয়মমত বর্ষা আসে। আবহাওয়া বদলায়। বরফ গলে যাচ্ছে। তার প্রভাব এসে পড়ছে আমাদের মত গরীব দেশে। এখন বর্ষাকালে রোদ হয়। ক্ষরা থাকে। আবার দেখা যায় চৈত্র মাসেও বৃষ্টি হয়। ঋতুর যত পরিবর্তনই ঘটুক না কেন, বর্ষা আসে অন্য রকম আনন্দ- কষ্ট নিয়ে। বৃষ্টির শব্দ, ব্যাঙের সঙ্গীত, জেলের ছুটে চলা, কৃষকের ব্যস্ততা আছে আগের মত। এখন অবশ্য অনেক কিছু বদলেছে। গ্রামে লেগেছে নগরের হাওয়া। পাকা বাড়ি হচ্ছে। পাকা রাস্তা হচ্ছে। তবুও কিছু আনন্দ থেকেই যায়। সবাই মিলে মিশে আনন্দে মাতেন।
আনন্দ ভরে থাকুক আমাদের সারাজীবন। আনন্দে কাটুক বাংলাদেশের মানুষের জীবন।
মাসিক কিশোর সাহিত্য জুলাই/২০১১ প্রকাশিত
bisty ami khub enjoy kori. amar favourite season.
ReplyDelete