সময়ের সঙ্গে বদলে যায় সবকিছুই। পরিবর্তন হয় মানুষের চিন্তাধারা, সেই সঙ্গে পরিবর্তন হয় কর্মকাণ্ডের। তেমনিভাবে বদলে গেছে বাংলাদেশের বিপণি বিতানগুলোর ক্রয়-বিক্রয়ের ধরন। মানুষের চাহিদার কথা ভেবে বাংলাদেশে গড়ে উঠেছে অসংখ্য সুপার স্টোর। সুপার স্টোরের ভিন্নতা শুধু কেনাবেচায় নয়_ বরং ক্রেতা, সরবরাহকারী এবং পরিবেশও সম্পূর্ণ আলাদা। আর এসব সুপার স্টোরের কাস্টমার ভিন্ন হওয়ার কারণে সেখানে গ্রাহক সেবার জন্য নিয়োগ করা হয় তরুণ এবং শিক্ষিত শ্রেণীকে। আর এদের বেশিরভাগই হয়ে থাকে পার্টটাইম জব। এ জন্য শিক্ষিত বেকারদের ঘরে বসে না থেকে এসব সুপার স্টোরে খণ্ডকালীন চাকরি করার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। নব্বইয়ের দশকে উন্নয়নশীল দেশে সুপার স্টোরের কর্মকাণ্ড শুরু হয়। এর আগে আমেরিকায় ১৯১৬ সালে প্রথম সুপারশপের যাত্রা শুরু হয়। শুরু থেকেই সুপার স্টোরের কনসেপ্ট হলো_ এক জায়গায় সব ধরনের পণ্য কেনাবেচার সুযোগ। যেখানে একটি নির্ধারিত গ্রাহকশ্রেণী পণ্য কিনতে আসছে। আমাদের দেশে প্রথম শ্রেণীর কাস্টমারই এসব দোকানে বেশি এসে থাকেন। নগরজীবনে অনেকেই আছেন যারা বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করতে আগ্রহী নন। আধুনিক এসব উচ্চভিলাষী ক্রেতা সুন্দর পরিবেশে বাজার করতে আসেন। যে কারণে ঢাকার মধ্যেই প্রায় ৫০টিরও বেশি ব্র্যান্ডের সুপার স্টোর কাজ করছে এবং ক্রমান্বয়ে চাহিদার কারণে নতুন নতুন কোম্পানি সম্পৃক্ত হচ্ছে। আর এখানে ক্রেতাদের সেবার জন্য স্মার্ট-শিক্ষিত তরুণ ও তরুণীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। সুপার স্টোরগুলোতে দু'ধরনের কাজ থাকে। প্রথমত পণ্য বহন করা, দ্বিতীয়ত গ্রাহক বা কাস্টমার কেয়ার। কাস্টমার কেয়ারদের মূল কাজ প্রডাক্ট সম্পর্কে গ্রাহকদের বুঝানো এবং পণ্য নির্ধারিত জায়গায় গুছিয়ে রাখা। এসব দোকানে ৫ থেকে ৮ ঘণ্টা কাজ করার সময় নির্ধারিত থাকে। তবে শিক্ষিত বেকার ও শিক্ষার্থীদের অনেকেই পার্টটাইম চাকরি করে থাকে এবং সময় ভাগ করে এদের সম্পৃক্ত করা হয়। সুপার স্টোরে দুইভাবে চাকরির নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। প্রথমত সরাসরি, দ্বিতীয়ত পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে। বছরের প্রায় সব সময়ই সুপার স্টোরে চাকরি করার সুযোগ রয়েছে। তবে এসব সুপার স্টোরে চাকরি পেতে প্রয়োজন পড়ে বেশ কয়েকটি যোগ্যতা। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে শিক্ষাগত যোগ্যতা। এছাড়া আকর্ষণীয় বডি ল্যাংগুয়েজ, কথা বলার সুন্দর বাচনভঙ্গি, ভালো পোশাক-পরিচ্ছদ, পণ্য সম্পর্কে ভালো ধরণা এবং গ্রাহকদের সঙ্গে বৈচিত্র্যপূর্ণ কথা বলার উপযোগী ধৈর্যও এক্ষেত্রে দরকার। সুপার স্টোরগুলোতে পার্টটাইম, ফুলটাইম সব ধরনের চাকরির সুযোগ রয়েছে। কাজ ও দায়িত্বের ধরন অনুযায়ী এখানে চাকরিজীবীদের আয় নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। সুতরাং লেখাপড়ার পাশাপাশি পার্টটাইম জবে নিয়োজিত হয়ে আত্মকর্মসংস্থানের দিকে ধাবিত হওয়া যায়।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
No comments:
Post a Comment