কিছুই ভালো লাগে না, মনে হয় লেখাপড়ার নামে সবাই আমাকে বন্দি করে রেখেছে। মা বলেন, ‘জন্মের পর ১২ বছর কেটেছে তোমার হাসতে খেলতে আনন্দ করতে করতে। সামনের ১২টা বছর তোমাকে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে। ভালো ভালো রেজাল্ট আনতে হবে। ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে হবে। ভালো পদবিতে চাকরি করতে হবে।’ আমার শুধু ইচ্ছে করে একটা মাঠে একা একা দৌড়াতে—ঘাসে ভরা সবুজ মাঠে। চারপাশে গাছ আর গাছ। মাঠের প্রান্তজুড়ে থাকবে সবুজ আর অরণ্য। আর মাঠের মাঝখানে ছনের বাড়ি। বাড়িটা ঘিরে ফুলের বাগান। বাগানের পাশে একটা পাকা দোতলা বাড়ি থাকবে। সেই বাড়ির প্রতিটি দেয়ালে থাকবে আলমারি বোঝাই বই, বই আর বই। আমি যখন ইচ্ছে তখনই পড়ব। কেউ আমায় বাঁকা চোখে দেখবে না। কেউ ধমক দিয়ে আমার হাত থেকে বই কেড়ে নেবে না। রেগে রেগে কেউ আমায় বলবে না—যাও, স্কুলের পড়া পড়তে বসো।
বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়বে, আমি বৃষ্টির পানিতে ভিজবো। কিছুক্ষণ একা একা বৃষ্টির গান গাইবো আর ভিজবো। পরে অন্যদেরও সঙ্গে নেবো। ভালো হয় আমার সঙ্গে অনেকগুলো ছোট ছোট বাচ্চা ভিজতে এলে। সবাই আমায় মালিহাপু বলে ডাকবে। ওদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বৃষ্টিতে ভেজা খেলা খেলবো। মাঝেমধ্যে ওরা সবাই আমায় দূর থেকে পানি ছিটিয়ে দেবে, আমি আনন্দ পাবো। পশু-পাখি পুষতে খুব ইচ্ছা করে, যেমন—ব্লাড হাউন্ড, অ্যালসেশিয়ান, পুডল কুকুর, অনেক লোমে ভরা সাদা বড় বিড়াল আর ছোট কালো, নীল বিড়াল, যত রকম পাখি আছে—সব আমি চাই। সবগুলো থাকবে জোড়ায় জোড়ায়। আরেকটা পাখি চাই, যার কোনো জোড়া নেই। সেটা হলো ফিনিক্স।
বাগানে থাকবে অনেক প্রজাপতি। ফুল আর বাগানটা প্রজাপতিদের জন্য। পাশে থাকবে একটা বড় দীঘি আর সেই দীঘিতে রক্তকমল আর সাদা শাপলা ফুটবে। দীঘির পাড় ঘিরে থাকবে গাছের সারি। আমি পাড়ে বসবো আর চারপাশ দেখবো। দোতলা বাড়িটার একটা বড় রুমে থাকবে গিটার, বাঁশি, হারমোনিয়াম, ড্রাম, সেতার আর সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র। যারা বাজাতে চায় তারা আসবে এখানে। ওরা বাজাবে আমি শুনবো। আমি গিটার বাজাব। বাঁশি বাজানো শিখবো। একটা ঘরে আমার প্রিয়-অপ্রিয় গানের সিডি, ক্যাসেট, সিডি প্লেয়ার ওয়াকম্যান ইত্যাদি থাকবে। একটা ঘরে থাকবে অনেক রকম পুতুল, ছোট-বড় সাদা লাল কালো—সব রকমের পুতুল।
ছাদের ওপরে আর বাংলো বাড়ির সামনে দোলনা থাকবে। সেখানে বসে গান শুনবো, বই পড়বো। আর বৃষ্টির সময় ছাদে বসে বৃষ্টির রুমঝুম শব্দ শুনবো। মাঝেমধ্যে মনে হয়, দীঘির ওপর যদি একটা ঝুলন্ত দোলনা থাকত। দোল খেতে খেতে যদি দোলনা উল্টে যায় তাহলে তো পানিতে পড়ে যাবো। আমি তো সাঁতার জানি না। সাঁতার শিখতে হবে আমায়। শীতের সময় ছাড়া সব সময় দীঘিতে নেমে গোসল করবো। কী মজা! এত বড় জায়গায় আমি একা থাকবো।
বৃষ্টির সময় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আসবে ভিজতে। বইপ্রিয় মানুষরা আসবে বই পড়তে আর গানপ্রিয় মানুষ আসবে গান গাইতে। সবাই থাকবে দোতলা বাড়িটাতে আর আমি থাকবো ছনের ঘরে। আমার কারও সঙ্গে থাকতে ভালো লাগে না। রবিনসন ক্রুসো নামে এক নাবিক একাকী কাটিয়েছিলেন। মাঝে মাঝে আমারও ইচ্ছে করে সেই রবিনসন ক্রুসো হয়ে যেতে ।
গল্প করতে ভালো লাগে। গল্প নিশ্চই একা করবো না। থাক না, মানুষের সব ইচ্ছা পূরণের দরকার নেই। আমার গান গাইতে নাচ করতে ইচ্ছে করে, ছবি আঁকতে মন চায়। কিছুই করতে পারি না। তখন নিজেকে অলস মনে হয়। মা অনেক বই কিনে দেন। ভালো লাগে লাবণ্যের বাসায় গেলে, দোলনায় চড়তে পারি। আমি কার্টুন আঁকতে পারি। এগুলো সব ভালো লাগে। যদিও তাল ঠিক থাকে না, তবুও সারাক্ষণ নাচতে থাকি।
আমার অনেক ভালো বন্ধু আছে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালোই লাগে। আমরা মারামারি করি। ওদের নিয়ে গল্প লিখি। ওরা পড়ে ভুল পেলে আমায় ধরে উত্তমমধ্যম দেয়। এটাও ভালো লাগে। স্কুলের ক্যাম্পের কথা খুব মনে পড়ে। তখন সবাই মিলে তাঁবু বানিয়েছি, কী যে মজা হয়েছিল। অনেক রাত পর্যন্ত টিচাররাসহ গল্প করেছি।
একবার লাবণ্য আর আমি লিফটে আটকে পড়েছিলাম। খুব ভয় পেয়েছিলাম সেদিন। ভূতের ভয় হয়েছিল। লাবণ্য হাসতে হাসতে কাঁধের ওপর ঢলে পড়েছিল। তখন ওকে মিসেস ড্রাকুলা মনে হচ্ছিল। ছোট বোন ফারিহার সঙ্গে অনেক দুষ্টামি করি। বিদ্যুত্ চলে গেলে অন্ধ ঘরে ওর সঙ্গে লুকোচুরি খেলা খেলি। খুব ভালো লাগে। এই সব ছেড়ে কোথায় যাব? লাবণ্য, আদিবা, তাসনুবা, নাতাসা, সুস্মিতা, যূথি, মিলা, ঋত,ু মৌমি ওদের ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না। ফারিহাটা বোন হয়েছে বলে অনেক খুশি হয়েছি। এখন কীভাবে ওকে ছেড়ে চলে যাব? তবুও বুঝি লেখাপড়া করতেই হবে। আমার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে লেখাপড়া করতেই হবে। স্বপ্নগুলো মনের মাঝে আছে। এগুলো পরে পূরণ করবো।
বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়বে, আমি বৃষ্টির পানিতে ভিজবো। কিছুক্ষণ একা একা বৃষ্টির গান গাইবো আর ভিজবো। পরে অন্যদেরও সঙ্গে নেবো। ভালো হয় আমার সঙ্গে অনেকগুলো ছোট ছোট বাচ্চা ভিজতে এলে। সবাই আমায় মালিহাপু বলে ডাকবে। ওদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে বৃষ্টিতে ভেজা খেলা খেলবো। মাঝেমধ্যে ওরা সবাই আমায় দূর থেকে পানি ছিটিয়ে দেবে, আমি আনন্দ পাবো। পশু-পাখি পুষতে খুব ইচ্ছা করে, যেমন—ব্লাড হাউন্ড, অ্যালসেশিয়ান, পুডল কুকুর, অনেক লোমে ভরা সাদা বড় বিড়াল আর ছোট কালো, নীল বিড়াল, যত রকম পাখি আছে—সব আমি চাই। সবগুলো থাকবে জোড়ায় জোড়ায়। আরেকটা পাখি চাই, যার কোনো জোড়া নেই। সেটা হলো ফিনিক্স।
বাগানে থাকবে অনেক প্রজাপতি। ফুল আর বাগানটা প্রজাপতিদের জন্য। পাশে থাকবে একটা বড় দীঘি আর সেই দীঘিতে রক্তকমল আর সাদা শাপলা ফুটবে। দীঘির পাড় ঘিরে থাকবে গাছের সারি। আমি পাড়ে বসবো আর চারপাশ দেখবো। দোতলা বাড়িটার একটা বড় রুমে থাকবে গিটার, বাঁশি, হারমোনিয়াম, ড্রাম, সেতার আর সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র। যারা বাজাতে চায় তারা আসবে এখানে। ওরা বাজাবে আমি শুনবো। আমি গিটার বাজাব। বাঁশি বাজানো শিখবো। একটা ঘরে আমার প্রিয়-অপ্রিয় গানের সিডি, ক্যাসেট, সিডি প্লেয়ার ওয়াকম্যান ইত্যাদি থাকবে। একটা ঘরে থাকবে অনেক রকম পুতুল, ছোট-বড় সাদা লাল কালো—সব রকমের পুতুল।
ছাদের ওপরে আর বাংলো বাড়ির সামনে দোলনা থাকবে। সেখানে বসে গান শুনবো, বই পড়বো। আর বৃষ্টির সময় ছাদে বসে বৃষ্টির রুমঝুম শব্দ শুনবো। মাঝেমধ্যে মনে হয়, দীঘির ওপর যদি একটা ঝুলন্ত দোলনা থাকত। দোল খেতে খেতে যদি দোলনা উল্টে যায় তাহলে তো পানিতে পড়ে যাবো। আমি তো সাঁতার জানি না। সাঁতার শিখতে হবে আমায়। শীতের সময় ছাড়া সব সময় দীঘিতে নেমে গোসল করবো। কী মজা! এত বড় জায়গায় আমি একা থাকবো।
বৃষ্টির সময় ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা আসবে ভিজতে। বইপ্রিয় মানুষরা আসবে বই পড়তে আর গানপ্রিয় মানুষ আসবে গান গাইতে। সবাই থাকবে দোতলা বাড়িটাতে আর আমি থাকবো ছনের ঘরে। আমার কারও সঙ্গে থাকতে ভালো লাগে না। রবিনসন ক্রুসো নামে এক নাবিক একাকী কাটিয়েছিলেন। মাঝে মাঝে আমারও ইচ্ছে করে সেই রবিনসন ক্রুসো হয়ে যেতে ।
গল্প করতে ভালো লাগে। গল্প নিশ্চই একা করবো না। থাক না, মানুষের সব ইচ্ছা পূরণের দরকার নেই। আমার গান গাইতে নাচ করতে ইচ্ছে করে, ছবি আঁকতে মন চায়। কিছুই করতে পারি না। তখন নিজেকে অলস মনে হয়। মা অনেক বই কিনে দেন। ভালো লাগে লাবণ্যের বাসায় গেলে, দোলনায় চড়তে পারি। আমি কার্টুন আঁকতে পারি। এগুলো সব ভালো লাগে। যদিও তাল ঠিক থাকে না, তবুও সারাক্ষণ নাচতে থাকি।
আমার অনেক ভালো বন্ধু আছে। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালোই লাগে। আমরা মারামারি করি। ওদের নিয়ে গল্প লিখি। ওরা পড়ে ভুল পেলে আমায় ধরে উত্তমমধ্যম দেয়। এটাও ভালো লাগে। স্কুলের ক্যাম্পের কথা খুব মনে পড়ে। তখন সবাই মিলে তাঁবু বানিয়েছি, কী যে মজা হয়েছিল। অনেক রাত পর্যন্ত টিচাররাসহ গল্প করেছি।
একবার লাবণ্য আর আমি লিফটে আটকে পড়েছিলাম। খুব ভয় পেয়েছিলাম সেদিন। ভূতের ভয় হয়েছিল। লাবণ্য হাসতে হাসতে কাঁধের ওপর ঢলে পড়েছিল। তখন ওকে মিসেস ড্রাকুলা মনে হচ্ছিল। ছোট বোন ফারিহার সঙ্গে অনেক দুষ্টামি করি। বিদ্যুত্ চলে গেলে অন্ধ ঘরে ওর সঙ্গে লুকোচুরি খেলা খেলি। খুব ভালো লাগে। এই সব ছেড়ে কোথায় যাব? লাবণ্য, আদিবা, তাসনুবা, নাতাসা, সুস্মিতা, যূথি, মিলা, ঋত,ু মৌমি ওদের ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না। ফারিহাটা বোন হয়েছে বলে অনেক খুশি হয়েছি। এখন কীভাবে ওকে ছেড়ে চলে যাব? তবুও বুঝি লেখাপড়া করতেই হবে। আমার স্বপ্ন পূরণ করতে হলে লেখাপড়া করতেই হবে। স্বপ্নগুলো মনের মাঝে আছে। এগুলো পরে পূরণ করবো।
সূত্র: আমার দেশ/এক্কাদোক্কা
No comments:
Post a Comment