প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Tuesday, September 27, 2011

মন ছবি ।। গাজী গিয়াস উদ্দিন

লম্বা পাতলা একাহারা গড়নের যুবতী মহিলা সন্ধ্যার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আকর্ষণীয় দুটো আধুনিক গান গাইলেন। প্রথমটি প্রেমের পরেরটি বিরহের। গায়িকার রমণীয়তা আর সঙ্গীত মূর্ছনা একাকার হয়ে ভিন্ন রোমান্টিকতায় ছেয়ে গেছে পুরো অনুষ্ঠান মিলনায়তন। ক্ষনিকের পরিচয়ে জানলাম তিনি বরিশালের একটি কলেজের বাংলার অধ্যাপিকা। এতদিন পরে পড়ার টেবিলে বসে তাকে মনে পড়লো। মনে হলো তাঁর কাছে যদি সেদিন জানতে চাইতাম ; আপনার গান শুনে দর্শক শ্রোতাদের কতজন আপনাকে নিয়ে কি ভেবেছে জানেন ? হয়তো ভেবেছে আপনার মতো এতো সুকন্ঠী গুণী অধ্যাপিকা যদি তার ঘরণী......। বিবেকের জিহবায় কামড় পড়ে গেল। ছিঃ এমন প্রশ্ন কি কেউ কাউকে করে ?
    শিল্পী অধ্যাপিকার বা কি আসে যায় তাকে নিয়ে কে কি ভাবলো আর না ভাবলো ? তিনিতো মিসেস। মিসেস হলেই তো আর ভাবের রাজ্যে তিনি বিতর্কের উর্ধ্বে নন। ভাবলাম- ভাবনাটা হয়তো নিতান্ত কবিসূলভ। অবশ্য হিন্দু অধ্যাপিকার দু’দিনের অনুষ্ঠানে পরিহিত দুটো ড্রেসই তাকে ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য্যে বিভূষিতা করেছে। চোখে সানগ্লাস ছিল বেশ মানানসই। মর্নিং ব্রেকফাস্ট সেরে ডাইনিং হল থেকে বেরিয়ে অধ্যাপিকাকে সামনে পেলাম। তাকে দেখেই মনে পড়লো আগের সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমার উপস্থাপিত স্বরচিত গীতি কবিতার খন্ড চিত্র।
জীবন সঙ্গীতে বাজাও বাঁশি-
দেখতে চাই সবুজ হাসি
মনের মুকুরে ঝরণা কন্ঠে বলো- যে ভালোবাসি,
মনের সবুজে হৃদয় আয়নায়- স্বপ্ন ভাটিয়ালী গায়।
অনুষ্ঠানে আরো কজন সুন্দরী ভদ্র যুবতী মহিলা উপস্থিত ছিলেন। প্রথম দিকে অধ্যাপিকার দিকে আমার চোখই পড়েনি। তার সঙ্গীতে তাকে এমনি উজ্জ্বলতা দিলো যে, এরপর থেকেই তার প্রতি আমার দৃষ্টি আকৃষ্ট হলো। সঙ্গীতের মহিমা মানুষকে কতটুকু মহীয়ান করে তুলতে পারে। পাশে বসা এক বন্ধুকে অভিজ্ঞতাটি শেয়ার করতেই তিনি বল্লেন, মেয়েরা গাইলে একটু এমনি লাগে। তার কাছে এর বিশেষত্বের স্বীকৃতি না পেয়ে হতাশ হইনি।
    ডাইনিং হল থেকে আমাদের সবার মিলনায়তে পরের অনুষ্ঠানে মিলিত হবার কথা ছিল। কিন্তু হতাশ হলাম। পরে জানতে পারলাম বরিশালের বরগুনায় অধ্যাপিকা তাঁর জেলা প্রতিনিধি দলের সাথে আগেভাগেই কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রাপ্ত হয়ে বিদায় নিয়েছেন। তার সাথে ক্ষনিক পরিচয় এবং কুশল বিনিময় এ তার সঙ্গীত পরিবেশনের জন্য প্রশাংসা করার মূহুর্তটি ছিল বিদায়ী সাক্ষাৎ। জানলাম। ভাবলাম ভালোই হলো। মিসেসদের সাথে পরিচয় খুব সীমিত হওয়াই ভালো। যেকোন বিষয়েই আমি সীমার মধ্যে থাকতে পছন্দ করি। ঝুট ঝামেলা পোহাতে চাইনা। অবশ্য মিসদের সাথে আমার পরিচয় বা কৌতুহল মোটেই কাংখিত নয়। ব্যতিক্রম যে নেই তা হলফ করে বলবোনা। কারণ কাউকে সঙ্গীত ছাড়া অন্যকোন শিল্পগুণতো উজ্জ্বলতা দিয়ে বসতে পারে। তখন আমি কি করবো ? আমার অজান্তেই আলো আমাকে আলোকিত করে ফেলতে পারে। কারণ সংক্রামক স্বাস্থ্য নয় ব্যাধি।
    অবশ্য আগের রাতে রুম মেট বন্ধুর রাতব্যাপি নানা রকমের মোবাইল আলাপচারিতা ঘুমের যথেষ্ট ব্যাঘাত ঘটালো। কিছু নতুন অভিজ্ঞতাও দিলো। সুন্দরীদের সাথে মোবাইলে সময় কাটানোর প্রাকটিস তার আছে। এসব নাকি মোবাইল ফ্রেন্ডশিপ। আমার অবশ্য এসবের সময় হয়না। স্বভাবেও নেই। অনেকটা নিরামিষ স্বভাবের। রোমাঞ্চটাই আমার সবকিছু, ফ্যান্টাসিও বলতে পারেন। একটু আগে যে সুন্দরী বল্লাম। মোবাইল ফ্রেন্ডকে না দেখে কি করে সুন্দরী বিশেষণ দিলাম। তাইতো প্রশ্ন ? বন্ধু থেকেই জানলাম। তাছাড়া সুন্দরী ছাড়া মূল্যবান সময় অপচয় করার পাত্র তিনি নন। তবে যার দৃষ্টিতে যে সন্দুরী। যার যার মনছবি। বরিশালের যে অধ্যাপিকা কার মনছবি ? বলতে পারেন ?

No comments:

Post a Comment

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ