তিতুমীর (১৭৮২-১৮৩১)চব্বিশ পরগনা জেলার হায়দরপুর গ্রামে ১৭৮২ সালে মীর নিসার আলি ওরফে তিতুমীরের জন্ম। ১৭৭০ খ্রিস্টাব্দে বা ১১৭৬ বঙ্গাব্দে বাংলায় এক ভয়াবহ দুর্ভিড়্গ হয়, তা ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে খ্যাত। সে দুর্ভিড়্গে এ দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জনসংখ...্যা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। সে সময়ে দেশে ছিল চরম অরাজক অবস্থা। সে সঙ্গে চলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাজস্ব আদায়ের অত্যাচার ও জবরদস্তি।
দেশের সাধারণ মানুষের নির্যাতিত অবস্থা তিতুমীরের সহ্য হয়নি। তিনি মুষ্টিযুদ্ধ, অসি চালনা, লাঠিখেলা, তীরছোড়া শিক্ষা করেন। উদ্দেশ্য অত্যাচারী জমিদার ও চোর-ডাকাতের হাত থেকে স্থানীয় জনসাধারণকে রক্ষা করা।
১৮২১ সালে তিতুমীর হজ উপলক্ষে মক্কা শরিফে যান। সেখানে ওয়াহারী আদর্শের প্রবক্তা সৈয়দ আহমদের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং তিনি তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। মক্কা শরিফ থেকে ফিরে তিতুমীর নারিকেলবাড়িয়ার কাছাকাছি হায়দরপুরে বসবাস শুরম্ন করে ধর্ম সংস্কারক হিসেবে তার কাজ আরম্ভ করেন। তার গুরম্নর ওয়াহাবী আন্দোলনের মতাদর্শ প্রচার শুরম্ন করার স্বল্পকালের মধ্যেই তিনি তিন চারশ শিষ্য সংগ্রহ করেন। ক্রমেই তার বিচড়্গণতা এবং পারদর্শিতা সবার দৃষ্টি কাড়ে। শুধু ধর্মসংস্কারই নয়, হিন্দু জমিদারদের অত্যাচার থেকে নিম্নবিত্ত মুসলমান জনসাধারণকে মুক্তি দেয়ার লড়্গ্যেও তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্বীয় ধর্মের অত্যাচারিত মানুষ তার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হতে থাকে। তার এই অসাধারণ সাফল্যে হিন্দু জমিদাররা ভয় পেয়ে যায়। তিতুমীরের কার্যকলাপে রম্নষ্ট হয়ে ওঠেন পুড়ার জমিদার ও নীলকররা।
এর আগে তিতুমীর চাঁদপুর-হৃদয়পুরের এক সভায় বক্তৃতা করেন। বক্তৃতার বিষয় ছিল ইসলামে পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন, রাসূলুলস্নাহর নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাপন, হিন্দু-মুসলিম কৃষক সম্প্রদায়ের একতাবদ্ধ হওয়া, নীলকরদের অত্যাচার দমন এবং দেশ থেকে ইংরেজ বিতাড়ন। ফলে বিভিন্ন জমিদার-নীলকর সবাই মিলে তিতুমীরকে শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শুরু হয় ওয়াহাবীদের ওপর জমিদারের অত্যাচার, এমনকি তাদের দাড়ির ওপর খাজনা আদায় শুরম্ন হয়। ফলে তিতুমীর জমিদারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এই সময় ফকির মিসকিন শাহ তার শিষ্যদের নিয়ে তিতুর সঙ্গে যোগ দেন।
স্থানীয় জমিদারদের সঙ্গে কয়েকটি সংঘর্ষে তিতুমীর জয়লাভ করেন। তার দলে অনেকে এসে যোগ দেয়। তিতুর নির্দেশে হিন্দু-মুসলমান প্রজারা জমিদারের খাজনা বন্ধ করে দেয়।
জমিদার ও নীলকরদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ১৮৩০ সালে ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডারকে পাঠানো হয় তিতুমীরকে দমন করার জন্য কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ও তার সিপাহি- বাহিনী তিতুমীরের সঙ্গে যুদ্ধে পরাস্তô হয়। তিতুমীর এরপর কয়েকটি নীলকুঠিও লুণ্ঠন করেন।
ইতিমধ্যে তিতুমীর নিজেকে স্বাধীন বাদশাহ হিসেবে ঘোষণা করেন এবং সম্ভাব্য আক্রমণের মোকাবেলায় নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে একটি সুদৃঢ় বাঁশের কেলস্না তৈরি করেন। তিতুমীরের বাহিনী বাঘারেয়ার নীলকুঠির প্রাঙ্গণের এক যুদ্ধে নদীয়ার কালেক্টর এবং নদীয়া ও গোবরডাঙ্গার জমিদারের সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হয়।
অবশেষে বাঁশের কেলস্না আক্রমণের জন্য ইংরেজ সরকারের পাঠানো পদাতিক ঘোড়সওয়ার ও গোলন্দাজ বাহিনীর সঙ্গে তিতুমীরের তীর-বল্লমসজ্জিত বাহিনীর যুদ্ধ হয় ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর। এই অসম যুদ্ধে তিতুমীরসহ বহুসংখ্যক যোদ্ধা শহীদ হন। কামানের গোলায় বাঁশের কেলস্না উড়িয়ে দেয়া হয়।
এই বিদ্রোহ জমিদার, মহাজন, নীলকর ও ইংরেজ শাসকের বিরম্নদ্ধে পরিচালিত হলেও যুগের প্রভাবে ধর্মীয় ধ্বনিও তাতে প্রাধান্য পেয়েছিল এবং তার ফলে তা হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়কে মিলিত করতে পারেনি। তা সত্ত্বেও দেশীয় সামন্ত শক্তি এবং বিদেশি শাসকশক্তির বিরম্নদ্ধে সম্প্রসারিত এই বিদ্রোহ ভবিষ্যতে সংগ্রামের ভিত তৈরি করেছিল।
দেশের সাধারণ মানুষের নির্যাতিত অবস্থা তিতুমীরের সহ্য হয়নি। তিনি মুষ্টিযুদ্ধ, অসি চালনা, লাঠিখেলা, তীরছোড়া শিক্ষা করেন। উদ্দেশ্য অত্যাচারী জমিদার ও চোর-ডাকাতের হাত থেকে স্থানীয় জনসাধারণকে রক্ষা করা।
১৮২১ সালে তিতুমীর হজ উপলক্ষে মক্কা শরিফে যান। সেখানে ওয়াহারী আদর্শের প্রবক্তা সৈয়দ আহমদের সঙ্গে তার দেখা হয় এবং তিনি তার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। মক্কা শরিফ থেকে ফিরে তিতুমীর নারিকেলবাড়িয়ার কাছাকাছি হায়দরপুরে বসবাস শুরম্ন করে ধর্ম সংস্কারক হিসেবে তার কাজ আরম্ভ করেন। তার গুরম্নর ওয়াহাবী আন্দোলনের মতাদর্শ প্রচার শুরম্ন করার স্বল্পকালের মধ্যেই তিনি তিন চারশ শিষ্য সংগ্রহ করেন। ক্রমেই তার বিচড়্গণতা এবং পারদর্শিতা সবার দৃষ্টি কাড়ে। শুধু ধর্মসংস্কারই নয়, হিন্দু জমিদারদের অত্যাচার থেকে নিম্নবিত্ত মুসলমান জনসাধারণকে মুক্তি দেয়ার লড়্গ্যেও তিনি ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্বীয় ধর্মের অত্যাচারিত মানুষ তার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ হতে থাকে। তার এই অসাধারণ সাফল্যে হিন্দু জমিদাররা ভয় পেয়ে যায়। তিতুমীরের কার্যকলাপে রম্নষ্ট হয়ে ওঠেন পুড়ার জমিদার ও নীলকররা।
এর আগে তিতুমীর চাঁদপুর-হৃদয়পুরের এক সভায় বক্তৃতা করেন। বক্তৃতার বিষয় ছিল ইসলামে পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন, রাসূলুলস্নাহর নির্দেশ অনুযায়ী জীবনযাপন, হিন্দু-মুসলিম কৃষক সম্প্রদায়ের একতাবদ্ধ হওয়া, নীলকরদের অত্যাচার দমন এবং দেশ থেকে ইংরেজ বিতাড়ন। ফলে বিভিন্ন জমিদার-নীলকর সবাই মিলে তিতুমীরকে শায়েস্তা করার সিদ্ধান্ত নেয়।
শুরু হয় ওয়াহাবীদের ওপর জমিদারের অত্যাচার, এমনকি তাদের দাড়ির ওপর খাজনা আদায় শুরম্ন হয়। ফলে তিতুমীর জমিদারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নেন। এই সময় ফকির মিসকিন শাহ তার শিষ্যদের নিয়ে তিতুর সঙ্গে যোগ দেন।
স্থানীয় জমিদারদের সঙ্গে কয়েকটি সংঘর্ষে তিতুমীর জয়লাভ করেন। তার দলে অনেকে এসে যোগ দেয়। তিতুর নির্দেশে হিন্দু-মুসলমান প্রজারা জমিদারের খাজনা বন্ধ করে দেয়।
জমিদার ও নীলকরদের আবেদনে সাড়া দিয়ে ১৮৩০ সালে ম্যাজিস্ট্রেট আলেকজান্ডারকে পাঠানো হয় তিতুমীরকে দমন করার জন্য কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট ও তার সিপাহি- বাহিনী তিতুমীরের সঙ্গে যুদ্ধে পরাস্তô হয়। তিতুমীর এরপর কয়েকটি নীলকুঠিও লুণ্ঠন করেন।
ইতিমধ্যে তিতুমীর নিজেকে স্বাধীন বাদশাহ হিসেবে ঘোষণা করেন এবং সম্ভাব্য আক্রমণের মোকাবেলায় নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে একটি সুদৃঢ় বাঁশের কেলস্না তৈরি করেন। তিতুমীরের বাহিনী বাঘারেয়ার নীলকুঠির প্রাঙ্গণের এক যুদ্ধে নদীয়ার কালেক্টর এবং নদীয়া ও গোবরডাঙ্গার জমিদারের সম্মিলিত বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জয়ী হয়।
অবশেষে বাঁশের কেলস্না আক্রমণের জন্য ইংরেজ সরকারের পাঠানো পদাতিক ঘোড়সওয়ার ও গোলন্দাজ বাহিনীর সঙ্গে তিতুমীরের তীর-বল্লমসজ্জিত বাহিনীর যুদ্ধ হয় ১৮৩১ সালের ১৯ নভেম্বর। এই অসম যুদ্ধে তিতুমীরসহ বহুসংখ্যক যোদ্ধা শহীদ হন। কামানের গোলায় বাঁশের কেলস্না উড়িয়ে দেয়া হয়।
এই বিদ্রোহ জমিদার, মহাজন, নীলকর ও ইংরেজ শাসকের বিরম্নদ্ধে পরিচালিত হলেও যুগের প্রভাবে ধর্মীয় ধ্বনিও তাতে প্রাধান্য পেয়েছিল এবং তার ফলে তা হিন্দু ও মুসলমান সম্প্রদায়কে মিলিত করতে পারেনি। তা সত্ত্বেও দেশীয় সামন্ত শক্তি এবং বিদেশি শাসকশক্তির বিরম্নদ্ধে সম্প্রসারিত এই বিদ্রোহ ভবিষ্যতে সংগ্রামের ভিত তৈরি করেছিল।
No comments:
Post a Comment