প্রেম-ভালবাসার কাছে সবই তুচ্ছ। এ দিয়ে জয় করা যায় না এমন কিছু নেই। যাঁকে ভালবাসি, তাঁর সানি্নধ্যে আসার জন্য, তাঁকে খুশি করার জন্য কী না করে অন্যজন। বিশ্বে এমনও নজির আছে ভালবাসার জন্য ছেড়ে দিয়েছে সিংহাসন। সেই ভালবাসার টান বা প্রিয়জনের সানি্নধ্য পাওয়ার আনন্দ পাখিদের মধ্যেও দেখা যায়। আর এ ৰেত্রে মুনিয়া পাখি মনে হয় একটু বেশিই আবেগপ্রবণ হয়। স্ত্রী_পুরম্নষ উভয়েই এ সময় বাসা বাঁধার আনন্দে থাকে টইটুম্বর। খুশিতে ওদের গান বেড়ে যায়। পুরম্নষ পাখিই গান বেশি গায়। নাচার চেষ্টাও করে। বাসা বানানোর আনন্দে পুরম্নষ পাখির রূপ যেন খোলে। আর অন্য সময় স্ত্রী-পুরম্নষ আলাদা করাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। স্ত্রী মুনিয়াকে আকৃষ্ট করতেই এমনটি করে পুরম্নষ পাখি এবং বাসা বাঁধে বেশ চমৎকারভাবে। স্ত্রী মুনিয়ার আরাম-আয়েশের জন্য তৈরি করে নরম বাসা, ভিতরে নরম গদিও দেয়। আর এ গদির জন্য ব্যবহার করে তুলা, কাশফুল ও বাঁশের ছোট ছোট পাতা। পরস্পরকে শুধু আকৃষ্টই নয়, ডিম ও বাচ্চার জন্য বাসাকে বেশ সুরৰিতভাবে নির্মাণ করে। যেন শিকারী পাখিরা সহজে ডিম ও বাচ্চা চুরি করতে পারে না। শিকারী পাখিদের কথা ভেবে এরা দুর্গম স্থানে বাসা বাঁধে। যেমন_ খেজুর বা তাল পাতার ঘন পাতাওয়ালা মাথার ওপরে, নাটঝোপ ও হরগোজার কাঁটাঝোপ, কেয়াঝোপ, বাবলা গাছ, দেবদারম্ন ও শেওড়া গাছে। কেউ কেউ আবার রাসত্মার লাইট পোস্টের কাভারের ভিতরেও তৈরি করে বাসা। অর্থাৎ দুর্গম স্থানই তাদের পছন্দ। আর বাসা তৈরিতে উপকরণ হিসেবে ঘাস, ছন, খড়, কাশফুল, ঘাসফুল, দুর্বাঘাস, ধানের পাতা, আখের পাতা, বাঁশপাতা ইত্যাদি ব্যবহার করে তারা। উপকরণ নরম হলেও বাসা হয় খাসা ও সুরৰিত। নিরাপত্তার জন্য একেবারে গোল নয়, অনেকটা নারকেলের মতন ডিজাইন করে বাসার। কখনও কখনও লম্বাটে ধরনের গোল বাসাও বানায়। আর এর জায়গা নির্বাচনে সময় নেয় ৫ থেকে ৭ দিন। কোন তাড়াহুড়া করে না বাসা বাঁধতে। এমনভাবে করে যে বাসায় ঢোকার পথ খুঁেজ পাওয়া দুষ্কর। কারও কারও বাসার মুখ কিছুটা নলের মতো বাইরে বেরিয়ে থাকে। তৈরির পর পুরো বাসার আকার দাঁড়ায় মোটামুটি একটা ছোটখাটো ফুটবলের মতো। বাসা বাঁধার খুশিতে কাশফুল, ঘাসফুল, ধান, ছন, খড় বা ঘাসের লম্বা সরম্ন ফালি নিয়ে সাপের মতো উড়ে আসে গনত্মেব্যে। তখন তাদের দেখে মনে হয় উড়নত্ম সাপ। এমন মনে হওয়ার কারণ, ঠোঁট ও পা দিয়ে ধরা কাশফুল বা ঘাস নিয়ে দুলতে দুলতে উড়ে যায়। সে দৃশ্য দেখায় বেশ চমৎকার। বাসায় ডিম হলে বা ডিম ফুটে বাচ্চা বেরম্নলেও পুরম্নষ পাখি খুশিতে টইটুম্বর হয়। এ সময় ওদের চেহারাই যায় পাল্টে। সুন্দর যেন ধরে না।
এই মুনিয়ারই পাঁচ ধরনের পাখি দেখা যায় আমাদের দেশে। যেমন_ লাল মুনিয়া, তিলা মুনিয়া, কালোমাথা মুনিয়া, সাদাগলা মুনিয়া ও সাদা পিঠ মুনিয়া। এছাড়া শীতকালে আমাদের দেশে বেড়াতে আসে সবুজ মুনিয়া। তবে তিলা মুনিয়াই দেশে সবচেয়ে বেশি আছে। সারাদেশেই আছে। ঢাকা শহর ও সাভার জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেও আছে। একটু খোঁজাখুঁজি করলে বাসাও খুঁজে পাবে শিশু-কিশোররা। পুরনো বিমানবন্দর এলাকার আশপাশে ঘোমটা দেবদারম্ন গাছে এর বাসা খুঁজে পাওয়া যাবে। তিলা মুনিয়া লম্বায় প্রায় ১২ সেন্টিমিটার হয়। বুক-পেটের পাশজুড়ে বুজানো ডানার তলায় কালচে_ বাদামি রঙের চিত্র-বিচিত্র ও চমৎকার কারম্নকাজ থাকে। যেন কোন চিত্রশিল্পী দ্বিতীয়ার চাঁদের মতন নকশা এঁকেছে। ভারি সুন্দর লাগে দেখতে। লেজের উপরিভাগে কালো ও হলুদের সোজা চওড়া টান থাকে। যেন কেউ সরম্ন, কাল ও লালচে হলুদ ফিতা সেঁটে দিয়েছে একের পর এক। লেজের উপরিভাগের গোড়াটা হলুদ ও তলা সাদাটে থাকে এবং চিবুক, গলা, ঘাড় ও মাথার রঙ হয় গাঢ় কালচে_বাদামি। বুক ও পেট অতি হালকা হলুদাভ, তার ওপর যেন থাকে সাদা ছিট লাগানো। লেজের আগা হয় চোখা। কম বয়সী বাচ্চার রঙ হয় হালকা বাদামি। চোখের মণি হয় হালকা লাল, তাতেও থাকে বাদামির আভা। এদের কণ্ঠস্বর হচ্ছে 'কিরিটি চিরিটি, চিট্টি_কিট্টি_কিটরি... চিক্ চিক্'। ডিম হয় প্রায় ছ'টি। ৮টিও পাড়ে। আবার ৪টিও দেখা যায়। কোন মুনিয়াই মাটিতে নেমে হাঁটতে পারে না। লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। তবে খাবার খায় মাটিতে নেমে। ধান, ঘাসের বীজ, বাদামের দানা, এমনকি মানুষের ফেলে যাওয়া পাউরম্নটি, বিস্কুটের কণাও খায়। উপমহাদেশে আবহাওয়া ভেদে এদের রঙের কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে। এক গাছে বা পাশাপাশি গাছে একাধিক বাসা দেখা যায়। শরীরে ছিট থাকে সবার। এদের বৈজ্ঞানিক নাম খ. চঁহপঃঁষধঃধ।
মুনিয়া! নামটি যেমন সুন্দর, এ পাখিটি দেখতেও তেমনি সুন্দর। চড়ুইয়ের চেয়ে সামান্য ছোট এই মুনিয়ারা অত্যনত্ম শানত্ম স্বভাবের পাখি। বিশ্বের যে সব দেশে মুনিয়া আছে, তাদের সবার সঙ্গে বাংলাদেশের মুনিয়াদের রয়েছে অভিন্ন কিছু মিল। যেমন_ সবার স্বভাব, ওড়ার ভঙ্গি, বাসার গড়ন ও ধরন এবং ডিম বাচ্চার সংখ্যা মোটামুটি একই রকম। ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার সময়সীমাও বলতে গেলে এক। সবার ঠোঁট ত্রিকোণাকৃতির ঠোঁটের গড়ন ও ধরনও একই রকম। সবাই অল্পতে ভয় পায়। যেমন, মুনিয়ার ঝাঁকের ওপর দিয়ে যদি শূন্যে বন্দুকের গুলি ছোড়া হয়, তাহলে ঝাঁক থেকে দু'চারটি পাখি ভয়ে মাটিতে পড়ে যায় অজ্ঞান হয়ে। ডিম হয় সাধারণত হাতির দাঁতের মতন বা মুক্তোর মতন সাদা। ডিম গোল নয় টিকটিকির ডিমের মতই গড়ন, আকারে কিছুটা বড়। তবে ডিমের খোসা বেশ পাতলা, অল্পতেই ভেঙ্গে যায়। সব ধরনের মুনিয়ার কণ্ঠস্বর ফ্যাসফেসে, মনে হয় ডাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তবে কণ্ঠ ওদের ভাল। সুকণ্ঠী হিসেবে পরিচিত। মিষ্টি গলায় গায় গান। কিন্তু বাচ্চাদের যখন খাওয়াতে শুরম্ন করে, তখন স্ত্রী-পুরম্নষ দু'জনেরই চেহারা মলিন হতে থাকে। বাচ্চাদের জন্য খাবার যোগাড় কী করা চাট্টিখানি কথা? যদি বাচ্চার সংখ্যা হয় ৬/৭টি। খেতেও পারে বটে বাচ্চারা। মা-বাবাকে তাই প্রতিদিন গড়ে কমপৰে ৭০ বার করে বাসায় আসতে হয় খাবার মুখে নিয়ে। বাচ্চা ছোট থাকাবস্থায় মা-বাবার চিনত্মা তেমন থাকে না, কিন্তু ৭/৮ দিন হলেই তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে বাচ্চাদের পেট ভরাতে। এ সময় রাতেও বাচ্চারা মা-বাবার কাছে খাবার চেয়ে কাঁদে। মায়েরা তখন রাত কাটায় বাসার আশপাশে। কেননা বাসায় থাকলে বাচ্চারা মায়ের কাছে বায়না জুড়ে দেয় খাবার জন্য। ঠোঁট দিয়ে মায়ের ঠোঁট_ মাথায় ঠোকর মারে, কাঁদে। মা ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে যায় এতে।
সূত্রঃ জনকন্ঠ
এই মুনিয়ারই পাঁচ ধরনের পাখি দেখা যায় আমাদের দেশে। যেমন_ লাল মুনিয়া, তিলা মুনিয়া, কালোমাথা মুনিয়া, সাদাগলা মুনিয়া ও সাদা পিঠ মুনিয়া। এছাড়া শীতকালে আমাদের দেশে বেড়াতে আসে সবুজ মুনিয়া। তবে তিলা মুনিয়াই দেশে সবচেয়ে বেশি আছে। সারাদেশেই আছে। ঢাকা শহর ও সাভার জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানেও আছে। একটু খোঁজাখুঁজি করলে বাসাও খুঁজে পাবে শিশু-কিশোররা। পুরনো বিমানবন্দর এলাকার আশপাশে ঘোমটা দেবদারম্ন গাছে এর বাসা খুঁজে পাওয়া যাবে। তিলা মুনিয়া লম্বায় প্রায় ১২ সেন্টিমিটার হয়। বুক-পেটের পাশজুড়ে বুজানো ডানার তলায় কালচে_ বাদামি রঙের চিত্র-বিচিত্র ও চমৎকার কারম্নকাজ থাকে। যেন কোন চিত্রশিল্পী দ্বিতীয়ার চাঁদের মতন নকশা এঁকেছে। ভারি সুন্দর লাগে দেখতে। লেজের উপরিভাগে কালো ও হলুদের সোজা চওড়া টান থাকে। যেন কেউ সরম্ন, কাল ও লালচে হলুদ ফিতা সেঁটে দিয়েছে একের পর এক। লেজের উপরিভাগের গোড়াটা হলুদ ও তলা সাদাটে থাকে এবং চিবুক, গলা, ঘাড় ও মাথার রঙ হয় গাঢ় কালচে_বাদামি। বুক ও পেট অতি হালকা হলুদাভ, তার ওপর যেন থাকে সাদা ছিট লাগানো। লেজের আগা হয় চোখা। কম বয়সী বাচ্চার রঙ হয় হালকা বাদামি। চোখের মণি হয় হালকা লাল, তাতেও থাকে বাদামির আভা। এদের কণ্ঠস্বর হচ্ছে 'কিরিটি চিরিটি, চিট্টি_কিট্টি_কিটরি... চিক্ চিক্'। ডিম হয় প্রায় ছ'টি। ৮টিও পাড়ে। আবার ৪টিও দেখা যায়। কোন মুনিয়াই মাটিতে নেমে হাঁটতে পারে না। লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। তবে খাবার খায় মাটিতে নেমে। ধান, ঘাসের বীজ, বাদামের দানা, এমনকি মানুষের ফেলে যাওয়া পাউরম্নটি, বিস্কুটের কণাও খায়। উপমহাদেশে আবহাওয়া ভেদে এদের রঙের কিছুটা তারতম্য হয়ে থাকে। এক গাছে বা পাশাপাশি গাছে একাধিক বাসা দেখা যায়। শরীরে ছিট থাকে সবার। এদের বৈজ্ঞানিক নাম খ. চঁহপঃঁষধঃধ।
মুনিয়া! নামটি যেমন সুন্দর, এ পাখিটি দেখতেও তেমনি সুন্দর। চড়ুইয়ের চেয়ে সামান্য ছোট এই মুনিয়ারা অত্যনত্ম শানত্ম স্বভাবের পাখি। বিশ্বের যে সব দেশে মুনিয়া আছে, তাদের সবার সঙ্গে বাংলাদেশের মুনিয়াদের রয়েছে অভিন্ন কিছু মিল। যেমন_ সবার স্বভাব, ওড়ার ভঙ্গি, বাসার গড়ন ও ধরন এবং ডিম বাচ্চার সংখ্যা মোটামুটি একই রকম। ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার সময়সীমাও বলতে গেলে এক। সবার ঠোঁট ত্রিকোণাকৃতির ঠোঁটের গড়ন ও ধরনও একই রকম। সবাই অল্পতে ভয় পায়। যেমন, মুনিয়ার ঝাঁকের ওপর দিয়ে যদি শূন্যে বন্দুকের গুলি ছোড়া হয়, তাহলে ঝাঁক থেকে দু'চারটি পাখি ভয়ে মাটিতে পড়ে যায় অজ্ঞান হয়ে। ডিম হয় সাধারণত হাতির দাঁতের মতন বা মুক্তোর মতন সাদা। ডিম গোল নয় টিকটিকির ডিমের মতই গড়ন, আকারে কিছুটা বড়। তবে ডিমের খোসা বেশ পাতলা, অল্পতেই ভেঙ্গে যায়। সব ধরনের মুনিয়ার কণ্ঠস্বর ফ্যাসফেসে, মনে হয় ডাকতে খুব কষ্ট হচ্ছে। তবে কণ্ঠ ওদের ভাল। সুকণ্ঠী হিসেবে পরিচিত। মিষ্টি গলায় গায় গান। কিন্তু বাচ্চাদের যখন খাওয়াতে শুরম্ন করে, তখন স্ত্রী-পুরম্নষ দু'জনেরই চেহারা মলিন হতে থাকে। বাচ্চাদের জন্য খাবার যোগাড় কী করা চাট্টিখানি কথা? যদি বাচ্চার সংখ্যা হয় ৬/৭টি। খেতেও পারে বটে বাচ্চারা। মা-বাবাকে তাই প্রতিদিন গড়ে কমপৰে ৭০ বার করে বাসায় আসতে হয় খাবার মুখে নিয়ে। বাচ্চা ছোট থাকাবস্থায় মা-বাবার চিনত্মা তেমন থাকে না, কিন্তু ৭/৮ দিন হলেই তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে বাচ্চাদের পেট ভরাতে। এ সময় রাতেও বাচ্চারা মা-বাবার কাছে খাবার চেয়ে কাঁদে। মায়েরা তখন রাত কাটায় বাসার আশপাশে। কেননা বাসায় থাকলে বাচ্চারা মায়ের কাছে বায়না জুড়ে দেয় খাবার জন্য। ঠোঁট দিয়ে মায়ের ঠোঁট_ মাথায় ঠোকর মারে, কাঁদে। মা ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে যায় এতে।
সূত্রঃ জনকন্ঠ
kov nice
ReplyDelete