তাপের প্রেমিক ফুরিয়ার
গণিতবিদদের জীবনধারা তাঁদের আবিষ্কারের মতোই জটিল হয়। ষোলো শতকের ফ্রান্সের গণিতজ্ঞ জোসেফ ফুরিয়ারের জীবন ছিল এমনই অদ্ভুত। এই গণিতবিদ ‘অ্যানালাইটিক্যাল থিওরি অব হিট’-এর জন্য বিখ্যাত। এই তত্ত্ব অনুসারে যেকোনো ফাংশন y=f(x) ত্রিকোণমিতিক ফাংশনের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। তিনি বিশ্বাস করতেন, মরুভূমির গরম পরিবেশই স্বাস্থ্যের পক্ষে সবচেয়েভালো। মোটা মোটা জামাকাপড় পরে অনেক বেশি তাপমাত্রার রুমে বাস করতে শুরু করেন তিনি। ধারণা করা হয়, তাপের প্রতি এই প্রগাঢ় ভালোবাসার জন্যই তাঁর মৃত্যু হয়।
জার্মানির শ্রেষ্ঠ কে?
উনিশ শতকের শুরুর দিকের কথা। জার্মান প্রকৃতিবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ভ্যান হামবোল্ডট ফরাসি জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ পিয়েরি সাইমন ল্যাপ্লাসকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘জার্মানির সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদ কে ছিলেন?’ প্রকৃতিবিজ্ঞানী হামবোল্ডটের ধারণা ছিল, জার্মান গণিতবিদ ফ্রেডরিখ গাউস ছাড়া আর কেউ শ্রেষ্ঠ হতে পারেন না। কিন্তু তাঁকে হতাশ করে জ্যোতির্বিদ ল্যাপ্লাস উত্তর দিলেন, ‘ফ্রেডরিখ পাফ।’ আশ্চর্য হয়ে হামবোল্ডট জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে গাউস?’ হামবোল্ডটকে অবাক করে দিয়ে ল্যাপ্লাস বললেন, ‘গাউস পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদ।’
বহুভাষাবিদ গাউস
গণিতের জগৎকে দুই হাত ভরে দেওয়া ফ্রেডরিখ গাউসের যে কেবল গণিতের প্রতিই মুগ্ধতা ছিল তা নয়, বরং নতুন নতুন ভাষা আয়ত্ত করাতেও তাঁর জুড়ি ছিল না। তাঁর এই শখটিকে তিনি বুদ্ধি শাণিত রাখার পন্থা বলে মনে করতেন। সারা জীবন ভাষা শিখে গেছেন, এমনকি ৬২ বছর বয়সে এসে তিনি রাশিয়ান ভাষা শেখা শুরু করেন, আর মাত্র দুই বছরের মধ্যেই এই ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে শুরু করেন।
অদক্ষ কৃষক নিউটন
পৃথিবীখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ আইজ্যাক নিউটন ভালো কৃষক ছিলেন না বলে কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৭ বছর বয়সে নিউটনের মা তাঁকে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত হতে বলেন। কিন্তু নিউটন ভালো কৃষক ছিলেন না বলে তাঁর চাচা তাঁকে অনেকটা নিরুপায় হয়েই ক্যামব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি করে দেন।
ডায়মন্ডের গণিতপ্রেম
ইংলিশ গণিতবিদ জন ওয়ালিস পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ নিউটনের বন্ধু ছিলেন। ওয়ালিস তাঁর ডায়েরিতে নিউটনের কুকুর নিয়ে লিখেছিলেন। নিউটনের ধারণা ছিল, তাঁর পোষা কুকুর ডায়মন্ডের সামান্য হলেও গণিত-সম্পর্কিত জ্ঞান আছে। ওয়ালিস কারণ জিজ্ঞেস করলে নিউটনের সরল উক্তি ছিল, ‘ডায়মন্ড দুটো উপপাদ্যের প্রমাণ করেছিল। যার প্রথমটি আগে থেকেই ভুল ছিল এবং দ্বিতীয়টি ছিল নিয়মবহির্ভূত।’
‘সুতরাং ঈশ্বর আছেন’
গণিতের প্রায় সব শাখায় যে মানুষটির ছিল স্বচ্ছন্দ পদচারণ, তিনি লিওনার্ড অয়লার। জন্মসূত্রে সুইস এই নাগরিক জীবনের একটা বড় অংশ কাটান রাশিয়ায়। রুশ রানি ক্যাথেরিন দ্য গ্রেটের সময় তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গ একাডেমিতে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে গবেষণা করতেন। সেই সময়ে রানির আমন্ত্রণে নিরীশ্বরবাদী ফরাসি দার্শনিক ডেনিস ডিডেরট রাশিয়া ভ্রমণে আসেন। রানির আশঙ্কা ছিল, ডিডেরট তাঁর নিরীশ্বরবাদী তত্ত্ব দিয়ে রাশিয়ান কোর্টকে প্রভাবিত করতে পারেন। রানি অয়লারকে দায়িত্ব দেন ডিডেরটকে থামানোর জন্য। ডিডেরটকে জানানো হয়, একজন গণিতবিদ ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন এবং তা রুশ কোর্টে উপস্থাপন করা হবে। কোর্টে দার্শনিক ডেনিস ডিডেরট লিওনার্ড অয়লারের কাছে অস্তিত্ব প্রমাণের নমুনা চান। স্বল্পভাষী অয়লারের উত্তর ছিল, ‘মাননীয় বিচারক, a+bn/n=x; সুতরাং ঈশ্বর আছেন।’ আসলে অয়লার জানতেন যে ডিডেরট গণিতের ব্যাপারে নিতান্তই অদক্ষ। সুতরাং গণিতের মারপ্যাঁচে ফেলে তাঁকে বোকা বানানো কঠিন হবে না। তেমনটাই ঘটেছিল, ডিডেরট অয়লারের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে একটি যুক্তিও উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি চুপচাপ কোর্ট থেকে বেরিয়ে যান এবং পরে গণিতবিদদের অস্পষ্ট, দুর্বোধ্য বলে স্বীকার করেন। দার্শনিক ডেনিস ডিডেরট এ ঘটনার পর গণিত নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং গণিতবিষয়ক কয়েকটি আলোচনা গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
ফিবোনাচ্চি নামের রহস্য
ইতালিয়ান গণিতবিদ ফিবোনাচ্চি পাঁচটি নামে পরিচিত ছিলেন। মধ্যযুগীয় এই গণিতবিদের পুরো নাম লিওনার্দো পিসানো বিগোলো হলেও তাঁকে কখনো কখনো লিওনার্দো অব পিসা, লিওনার্দো পিসানো, লিওনার্দো বোনাচ্চি ও লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি নামে ডাকা হতো। এই গণিতবিদের বাবার নাম ছিল গুগলিলিমো বোনাচ্চি। এ জন্য তাঁকে বোনাচ্চির ছেলে বা ‘ফিলিয়াস বোনাচ্চি’ নামে ডাকা হতো। ফিলিয়াস বোনাচ্চি থেকে ফিবোনাচ্চি নামের উৎপত্তি।
ক্ষণজন্মা প্যাসকেল
ফরাসি গণিতবিদ, উদ্ভাবক ব্লেইজ প্যাসকেল তাঁর ৩৯ বছরের ক্ষণজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে গেছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি জ্যামিতিসংক্রান্ত একটি নতুন উপপাদ্য প্রমাণ করেন। বয়স যখন ২০, তিনি তখন স্বয়ংক্রিয় গণনাকারী যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। ৩০ বছর বয়সে তিনি গণিতে তাঁর অসামান্য কীর্তি দ্বিপদী বিন্যাসের ওপর ‘প্যাসকেলের ত্রিভুজ’ প্রকাশ করেন।
প্রডিজি রেনে দেকার্তে
ফরাসি গণিতবিদ-দার্শনিক রেনে দেকার্তে মাত্র আট বছর বয়সে কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। গণিতে কার্তেসিয়ান জ্যামিতি ও তলের জন্য বিখ্যাত হলেও তিনি কিন্তু পেশায় আইনজীবী ছিলেন।
ডজসনের অ্যালিস
ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ডজসনের বিখ্যাত বই অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড। কী, কোথাও কোনো গরমিল মনে হচ্ছে? আসলে না, ইংরেজি সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখিকা লুই ক্যারল আসলে চার্লস ডজসনেরই ছদ্মনাম। শৌখিন ফটোগ্রাফার ডজসন গাণিতিক লজিক নিয়ে অনেক কাজ করেছেন।
ডিমোয়েভারের মৃত্যু গণনা
জটিল সংখ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এমন সবাই আব্রাহাম ডিমোয়েভারের নাম জানেন। তাঁর সম্পর্কে কথিত আছে যে তিনি আগে থেকেই নিজের মৃত্যুর দিন ও তারিখ হিসাব করে বের করেছিলেন। একদিন ডিমোয়েভার লক্ষ করেন যে প্রতিদিন তিনি ১৫ মিনিট করে আগের দিনের থেকে বেশি ঘুমাচ্ছেন।
এই বেশি ঘুমানোর প্রবণতা কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না।
তিনি ধারণা করেন, এটা চলতে থাকলে একসময় তাঁর মৃত্যু অবধারিত। প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে বেশিঘুমালে যেদিন ঘুমানোর সময় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে যাবে সেদিনই তাঁর মৃত্যু ঘটবে।
এটা থেকে তিনি হিসাব করে বের করেন তাঁর মৃত্যু হবে ১৭৫৪ সালের নভেম্বর মাসের ২৭ তারিখে। গণিতের প্রতি নিজের নিঃসংকোচ বিশ্বাসকে সঠিক প্রমাণ করে ঠিক সেদিনই মৃত্যুবরণ করেছিলেন তিনি।
গণিতবিদদের জীবনধারা তাঁদের আবিষ্কারের মতোই জটিল হয়। ষোলো শতকের ফ্রান্সের গণিতজ্ঞ জোসেফ ফুরিয়ারের জীবন ছিল এমনই অদ্ভুত। এই গণিতবিদ ‘অ্যানালাইটিক্যাল থিওরি অব হিট’-এর জন্য বিখ্যাত। এই তত্ত্ব অনুসারে যেকোনো ফাংশন y=f(x) ত্রিকোণমিতিক ফাংশনের সাহায্যে প্রকাশ করা যায়। তিনি বিশ্বাস করতেন, মরুভূমির গরম পরিবেশই স্বাস্থ্যের পক্ষে সবচেয়েভালো। মোটা মোটা জামাকাপড় পরে অনেক বেশি তাপমাত্রার রুমে বাস করতে শুরু করেন তিনি। ধারণা করা হয়, তাপের প্রতি এই প্রগাঢ় ভালোবাসার জন্যই তাঁর মৃত্যু হয়।
জার্মানির শ্রেষ্ঠ কে?
উনিশ শতকের শুরুর দিকের কথা। জার্মান প্রকৃতিবিজ্ঞানী আলেকজান্ডার ভ্যান হামবোল্ডট ফরাসি জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ পিয়েরি সাইমন ল্যাপ্লাসকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘জার্মানির সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদ কে ছিলেন?’ প্রকৃতিবিজ্ঞানী হামবোল্ডটের ধারণা ছিল, জার্মান গণিতবিদ ফ্রেডরিখ গাউস ছাড়া আর কেউ শ্রেষ্ঠ হতে পারেন না। কিন্তু তাঁকে হতাশ করে জ্যোতির্বিদ ল্যাপ্লাস উত্তর দিলেন, ‘ফ্রেডরিখ পাফ।’ আশ্চর্য হয়ে হামবোল্ডট জিজ্ঞেস করলেন, ‘তাহলে গাউস?’ হামবোল্ডটকে অবাক করে দিয়ে ল্যাপ্লাস বললেন, ‘গাউস পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গণিতবিদ।’
বহুভাষাবিদ গাউস
গণিতের জগৎকে দুই হাত ভরে দেওয়া ফ্রেডরিখ গাউসের যে কেবল গণিতের প্রতিই মুগ্ধতা ছিল তা নয়, বরং নতুন নতুন ভাষা আয়ত্ত করাতেও তাঁর জুড়ি ছিল না। তাঁর এই শখটিকে তিনি বুদ্ধি শাণিত রাখার পন্থা বলে মনে করতেন। সারা জীবন ভাষা শিখে গেছেন, এমনকি ৬২ বছর বয়সে এসে তিনি রাশিয়ান ভাষা শেখা শুরু করেন, আর মাত্র দুই বছরের মধ্যেই এই ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে শুরু করেন।
অদক্ষ কৃষক নিউটন
পৃথিবীখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ আইজ্যাক নিউটন ভালো কৃষক ছিলেন না বলে কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৭ বছর বয়সে নিউটনের মা তাঁকে কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত হতে বলেন। কিন্তু নিউটন ভালো কৃষক ছিলেন না বলে তাঁর চাচা তাঁকে অনেকটা নিরুপায় হয়েই ক্যামব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ভর্তি করে দেন।
ডায়মন্ডের গণিতপ্রেম
ইংলিশ গণিতবিদ জন ওয়ালিস পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ নিউটনের বন্ধু ছিলেন। ওয়ালিস তাঁর ডায়েরিতে নিউটনের কুকুর নিয়ে লিখেছিলেন। নিউটনের ধারণা ছিল, তাঁর পোষা কুকুর ডায়মন্ডের সামান্য হলেও গণিত-সম্পর্কিত জ্ঞান আছে। ওয়ালিস কারণ জিজ্ঞেস করলে নিউটনের সরল উক্তি ছিল, ‘ডায়মন্ড দুটো উপপাদ্যের প্রমাণ করেছিল। যার প্রথমটি আগে থেকেই ভুল ছিল এবং দ্বিতীয়টি ছিল নিয়মবহির্ভূত।’
‘সুতরাং ঈশ্বর আছেন’
গণিতের প্রায় সব শাখায় যে মানুষটির ছিল স্বচ্ছন্দ পদচারণ, তিনি লিওনার্ড অয়লার। জন্মসূত্রে সুইস এই নাগরিক জীবনের একটা বড় অংশ কাটান রাশিয়ায়। রুশ রানি ক্যাথেরিন দ্য গ্রেটের সময় তিনি সেন্ট পিটার্সবার্গ একাডেমিতে গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে গবেষণা করতেন। সেই সময়ে রানির আমন্ত্রণে নিরীশ্বরবাদী ফরাসি দার্শনিক ডেনিস ডিডেরট রাশিয়া ভ্রমণে আসেন। রানির আশঙ্কা ছিল, ডিডেরট তাঁর নিরীশ্বরবাদী তত্ত্ব দিয়ে রাশিয়ান কোর্টকে প্রভাবিত করতে পারেন। রানি অয়লারকে দায়িত্ব দেন ডিডেরটকে থামানোর জন্য। ডিডেরটকে জানানো হয়, একজন গণিতবিদ ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করেছেন এবং তা রুশ কোর্টে উপস্থাপন করা হবে। কোর্টে দার্শনিক ডেনিস ডিডেরট লিওনার্ড অয়লারের কাছে অস্তিত্ব প্রমাণের নমুনা চান। স্বল্পভাষী অয়লারের উত্তর ছিল, ‘মাননীয় বিচারক, a+bn/n=x; সুতরাং ঈশ্বর আছেন।’ আসলে অয়লার জানতেন যে ডিডেরট গণিতের ব্যাপারে নিতান্তই অদক্ষ। সুতরাং গণিতের মারপ্যাঁচে ফেলে তাঁকে বোকা বানানো কঠিন হবে না। তেমনটাই ঘটেছিল, ডিডেরট অয়লারের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে একটি যুক্তিও উপস্থাপন করতে পারেননি। তিনি চুপচাপ কোর্ট থেকে বেরিয়ে যান এবং পরে গণিতবিদদের অস্পষ্ট, দুর্বোধ্য বলে স্বীকার করেন। দার্শনিক ডেনিস ডিডেরট এ ঘটনার পর গণিত নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং গণিতবিষয়ক কয়েকটি আলোচনা গ্রন্থ প্রকাশ করেন।
ফিবোনাচ্চি নামের রহস্য
ইতালিয়ান গণিতবিদ ফিবোনাচ্চি পাঁচটি নামে পরিচিত ছিলেন। মধ্যযুগীয় এই গণিতবিদের পুরো নাম লিওনার্দো পিসানো বিগোলো হলেও তাঁকে কখনো কখনো লিওনার্দো অব পিসা, লিওনার্দো পিসানো, লিওনার্দো বোনাচ্চি ও লিওনার্দো ফিবোনাচ্চি নামে ডাকা হতো। এই গণিতবিদের বাবার নাম ছিল গুগলিলিমো বোনাচ্চি। এ জন্য তাঁকে বোনাচ্চির ছেলে বা ‘ফিলিয়াস বোনাচ্চি’ নামে ডাকা হতো। ফিলিয়াস বোনাচ্চি থেকে ফিবোনাচ্চি নামের উৎপত্তি।
ক্ষণজন্মা প্যাসকেল
ফরাসি গণিতবিদ, উদ্ভাবক ব্লেইজ প্যাসকেল তাঁর ৩৯ বছরের ক্ষণজীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে গেছেন। মাত্র ১৬ বছর বয়সে তিনি জ্যামিতিসংক্রান্ত একটি নতুন উপপাদ্য প্রমাণ করেন। বয়স যখন ২০, তিনি তখন স্বয়ংক্রিয় গণনাকারী যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। ৩০ বছর বয়সে তিনি গণিতে তাঁর অসামান্য কীর্তি দ্বিপদী বিন্যাসের ওপর ‘প্যাসকেলের ত্রিভুজ’ প্রকাশ করেন।
প্রডিজি রেনে দেকার্তে
ফরাসি গণিতবিদ-দার্শনিক রেনে দেকার্তে মাত্র আট বছর বয়সে কলেজে পড়াশোনা শুরু করেন। গণিতে কার্তেসিয়ান জ্যামিতি ও তলের জন্য বিখ্যাত হলেও তিনি কিন্তু পেশায় আইনজীবী ছিলেন।
ডজসনের অ্যালিস
ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ডজসনের বিখ্যাত বই অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড। কী, কোথাও কোনো গরমিল মনে হচ্ছে? আসলে না, ইংরেজি সাহিত্যের জনপ্রিয় লেখিকা লুই ক্যারল আসলে চার্লস ডজসনেরই ছদ্মনাম। শৌখিন ফটোগ্রাফার ডজসন গাণিতিক লজিক নিয়ে অনেক কাজ করেছেন।
ডিমোয়েভারের মৃত্যু গণনা
জটিল সংখ্যা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন এমন সবাই আব্রাহাম ডিমোয়েভারের নাম জানেন। তাঁর সম্পর্কে কথিত আছে যে তিনি আগে থেকেই নিজের মৃত্যুর দিন ও তারিখ হিসাব করে বের করেছিলেন। একদিন ডিমোয়েভার লক্ষ করেন যে প্রতিদিন তিনি ১৫ মিনিট করে আগের দিনের থেকে বেশি ঘুমাচ্ছেন।
এই বেশি ঘুমানোর প্রবণতা কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না।
তিনি ধারণা করেন, এটা চলতে থাকলে একসময় তাঁর মৃত্যু অবধারিত। প্রতিদিন ১৫ মিনিট করে বেশিঘুমালে যেদিন ঘুমানোর সময় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে যাবে সেদিনই তাঁর মৃত্যু ঘটবে।
এটা থেকে তিনি হিসাব করে বের করেন তাঁর মৃত্যু হবে ১৭৫৪ সালের নভেম্বর মাসের ২৭ তারিখে। গণিতের প্রতি নিজের নিঃসংকোচ বিশ্বাসকে সঠিক প্রমাণ করে ঠিক সেদিনই মৃত্যুবরণ করেছিলেন তিনি।
সূত্র : দৈনিক প্রথম আলো
No comments:
Post a Comment