পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি মাছি মারা। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? যদি কঠিন কাজ না হতো তবে এমন কথারও সৃষ্টি হতো না, মাছি/মশা মারতে কামান। যাক কামান-বিমান এসব কথা বাদ দিয়ে এবার মাছি মারা প্রসঙ্গে। মাছি মারা অনেক কঠিন কাজ? সম্প্রতি এটিই খুঁজে বের করেছেন একদল মার্কিন গবেষক। মস্তিষ্কের স্নায়বিক পদ্ধতিতে মাছি বিপদ এড়ায়। আঘাতকারীর অস্তিত্ব টের পাওয়া মাত্র মাছি খুবই দ্রুত ২০০ মিলি সেকেন্ডের মধ্যে পালানোর পথ খুঁজে বের করে ফেলে। তারপর উড়ে যায় বিপরীত দিকে। মাছি মারা তাই অনেক কঠিন। ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব বায়োলজির একদল গবেষক এমন কথাই জানায়। গবেষণাটি কারেন্ট বায়োলজি নামে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। আঘাত আসার সামান্য ইঙ্গিত পেলেই ছোট্ট এই প্রাণীটি উল্টোদিকে উড়ে গিয়ে মানুষ শত্রুর হাত থেকে বেঁচে যায়। বিপরীত দিকে পালানোর সিদ্ধান্ত সে নেয় মুহূর্তের মধ্যে বলা হয়েছে।
ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির মাইকেল ডিকিনসন এক বিবৃতিতে জানান, মাছি খুব দ্রুততার সঙ্গে ২০০ মিলি সেকেন্ডের মধ্যে পালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। ওই সময়ের মধ্যেই মাছি বুঝতে পারে কোনদিক থেকে আঘাতটি আসছে এবং তখনই তার উল্টো দিকে যাওয়ার জন্য সে পা ও পাখা চালায়। বিবৃতিতে ডিকিনসন বলেন, এ থেকেই বোঝা যায় মাছির মস্তিষ্ক কত তাড়াতাড়ি সংবেদনশীল কোনো কিছু টের পায় এবং এর প্রতি সক্রিয়ভাবে সাড়া দিতে পারে। ডিকিনসন ও তার দল অত্যাধুনিক ডিজিটাল ক্যামেরা ব্যবহার করে এবং ফলের ওপর বসা মাছি তাড়ানোর মধ্য দিয়ে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখেছেন। তিনি জানান, সামনের দিক থেকে আঘাত এড়াতে মাছি তার মাঝের পা সামনের দিকে বাড়িয়ে দেয় এবং নিচু হয়ে পেছনের দিকে সরে এসে পেছনের পা ব্যবহার করে পেছনের দিকে উড়া শুরু করে।আর আঘাত যদি পাশ থেকে আসে তবে মাছিরা উল্টো দিকে নিচু হয়ে উড়া শুরু করে। নতুন এ গবেষণার মাধ্যমে মাছির স্নায়বিক পদ্ধতি সম্পর্কে নতুন দিক উন্মোচিত হলো এবং কিভাবে মাছি মারা যাবে তারও কিছু ইঙ্গিত পাওয়া গেল। ডিকিনসন বলেন, মাছির অবস্থানের ওপর আঘাত না করে বরং মাছির পালানোর পথের দিকে লক্ষ্য করে আঘাত করা উচিত। ডিকিনসন একজন জীবপ্রকৌশলী (বায়োইঞ্জিনিয়ার)। পোকামাকড়ের উড়ার ওপর গবেষণা করাই তার ধ্যানজ্ঞান। এছাড়াও তিনি ছোট একটি রোবট মাছি তৈরি করেছেন, যার নাম রোবোফ্লাই।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন
No comments:
Post a Comment