প্রিয় পাঠক লক্ষ্য করুন

Monday, June 20, 2011

শিশুর খাদ্য সম্পর্কীয় কুসংস্কার ।। সামিয়া পপি

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যত্। শিশুরা দেশের সম্পদ এবং ভবিষ্যত্ নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও তাদের পুষ্টি সম্পর্কে অনেক মা-ই অজ্ঞ ও উদাসীন। শিশুদের পুষ্টি চাহিদার কথা বিবেচনা না করে নানা রকম কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়ে প্রয়োজনীয় খাবার থেকে তাদের বঞ্চিত করে। ফলে এসব শিশু অপুষ্টিতে ভোগে এবং নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়। এমনকি ক্রমাগত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হয়। যেসব শিশু কোনো রকমে বেঁচে থাকে তারা দুর্বল, অপুষ্ট এবং অপরিণত দেহের অধিকারী হয়ে থাকে। এসব শিশু থেকে পরিবার ও দেশ কিছুই আশা করতে পারে না।
শিশুর বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন আমিষের। আর ডালকে বলা হয় গরিবের আমিষ। আমাদের মধ্যে অনেকেই শিশুকে ডাল খেতে দেন না এই ভয়ে যে, এতে তার পেট খারাপ হবে। তাছাড়া অনেকে মনে করেন গুড়, চিনি, মিষ্টি আলু খেলে শিশুর কৃমি হবে, তাই এসব তাদের খেতে দেয়া হয় না। প্রায়ই একই কারণে শিশুকে মাছও খেতে দেয়া হয় না। আসলে এসব খাদ্য খেলে কৃমি হয় না, যদি কোনোভাবে কৃমির ডিম পেটের ভেতর ঢুকে যায় তাহলেই কৃমি হয়। আবার অনেক মায়ের ধারণা, কলা খেলে শিশুর ঠাণ্ডা এবং সর্দি ভাব বাড়ে, পেটে কৃমি হয় । ডিম খাওয়ালে শিশুর পেট খারাপ হয়। অথচ পরিবারে একটা ডিম থাকলে সেটা শুধু শিশুকেই খাওয়াতে হবে এ কারণে যে ডিম শিশুর বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবার।
অনেক পরিবার গুড়কে চিনির চেয়ে নিকৃষ্ট মনে করে। অথচ গুড় চিনির থেকে গুণে উত্কৃষ্ট এবং দামেও সস্তা। মুরগির ডিমকে হাঁসের ডিমের চেয়ে উত্কৃষ্ট মনে করা হয়, অথচ গুণের দিক থেকে হাঁস ও মুরগির ডিম একই ধরনের বরং হাঁসের ডিম সাইজে বড় এবং এতে আমিষের পরিমাণও সামান্য বেশি। অনেকে ঘি তেলের তুলনায় ভালো এবং উত্কৃষ্ট মনে করে থাকেন। কিন্তু ঘি খুব দামি এবং বেশি খেলে উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অথচ তেল দামেও সস্তা এবং বেশি খেলে কোনো ক্ষতি হয় না। এক্ষেত্রে আমরা আর্থিক কারণে প্রয়োজনীয় পরিমাণ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি খাবার খাওয়ার সামর্থ্য রাখি না। তার ওপর নানা রকম ভুল ধারণা এবং কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে যেটুকু জোগাড় করতে পারি তাও যদি পরিহার করি তাহলে সুস্থ থাকার জন্য পুষ্টি উপাদান পাব কোথা থেকে। অতএব, আমাদের এসব কুসংস্কার পরিত্যাগ করতে হবে, এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো দামে সস্তা হলেও দামি খাবারের চাহিদা মেটাতে সক্ষম। শাক-সবজি দামে সস্তা হলেও পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। তাই শিশু যখন ভাত খেতে শুরু করে তখন থেকে শাক দেয়া যেতে পারে। আমাদের খাবারের পুষ্টি সম্পর্কে জানতে হবে, তবেই আমরা সঠিক সময়ে সঠিক খাবার দিতে পারব এবং শিশুর সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে পারব। 


No comments:

Post a Comment

নির্বাচিত বিষয়গুলো দেখুন

Labels

মাসের পঠিত শীর্ষ দশ

 

জোনাকী | অনলাইন লাইব্রেরী © ২০১১ || টেমপ্লেট তৈরি করেছেন জোনাকী টিম || ডিজাইন ও অনলাইন সম্পাদক জহির রহমান || জোনাকী সম্পর্কে পড়ুন || জোনাকীতে বেড়াতে আসার জন্য ধন্যবাদ