একদিন সন্ধ্যাবেলার কথা। একটি ফুড কর্নারে হৈচৈ তার মা-বাবাসহ বার্গার খাচ্ছিল, সঙ্গে আরও একজন ছিল। ঘটনাটা হৈচৈ'র স্পষ্ট মনে আছে, কিন্তু আর একজনের চেহারা কিছুতেই মনে করতে পারছে না। পরদিন স্কুলে ঠিক এভাবেই হৈচৈ তার প্রিয় বন্ধু পদ্মকে বলছিল তার দেখা স্বপ্নটির কথা। খুব উৎসাহের সঙ্গে পদ্মকে বলল, জানো পদ্ম, আমি অদ্ভুত একটি স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নে দেখা সেই অচেনা লোককে ভালোভাবেই পর্যবেক্ষণ করেছি, তার সঙ্গে আমার অনেক গল্পও হয়েছে কিন্তু কিছুতেই তার চেহারা মনে করতে পারছি না। জান পদ্ম, সে আমাদের মতো খেতে পারে না, আমাকে বলেছিল সে নাকি বাতাস খায়, হা... হা...। পদ্ম কি যেন ভাবছে। তাই দেখে হৈচৈ বলল কী ভাবছ পদ্ম?
পদ্ম বলল, জানো হৈচৈ তুমি কাকে দেখেছ?
হৈচৈ বলল, নাহ্ সেটাই তো বুঝতে পারছি না। পদ্ম বলল, তুমি ভূত দেখেছ হৈচৈ। হৈচৈ একটু অবাক হয়ে বলল, ও মা ভূত! পদ্ম বলল, হুম, এদের একবার দেখলে আর মনে রাখা যায় না। এরা অনেক রহস্যময় হয়, এরা কখনো পারফিউমও দেয় না যে, তুমি গন্ধ শুঁকে এদের উপস্থিতি টের পাবে। হৈচৈ বলল, তাই নাকি! তারপর...
পদ্ম বলল, হৈচৈ আমি এর বেশি কিছু জানি না। হৈচৈ বলল, কিন্তু পদ্ম আমার যে খুব বেশি জানতে ইচ্ছা করছে। পদ্ম বলল, হৈচৈ আমি যা শুনেছি সব আঙ্গুর মামা'র কাছে কিন্তু মামা তো এখন কানাডায়।
হৈচৈ খুব আফসোস করে বলল, ইস্ আমি যদি ভূতবন্ধুটাকে আবার দেখতে পেতাম। জানো পদ্ম, আমি খুব মিস করছি ভূতবন্ধুটাকে।
এর ফাঁকেই টিফিন পিরিয়ড শেষ হলো। হৈচৈ খুব দ্রুত ক্লাসে চলে গেল। স্কুলে ক্লাস শেষ করেই হৈচৈ বাসায় ফিরল। বাসায় ফেরার আগে হৈচৈ গাড়িতে খুব বেশি গম্ভীর ছিল। তাই দেখে ড্রাইভার বলছিল হৈচৈকে, আফা আপনের কি মন খারাপ? হৈচৈ বলল, না ড্রাইভার আঙ্কেল। আচ্ছা ড্রাইভার আঙ্কেল, তুমি কি ভূত দেখেছ? ড্রাইভার বলল, না দেহি নাই, তয় একবার ভয় পাইছিলাম, তয় বুঝছেন আফা, এরা বেশি ভালা অয় না, মেলা বদমাইশ অয়। আমারে তো একবার...। ড্রাইভারকে থামিয়ে দিয়ে হৈচৈ বলল, তুমি আঙ্কেল কিছু জান না, এরা অনেক ভালো হয়, আমার একজন ভূতবন্ধু আছে, তবে আমি তাকে একবার দেখেছি কিন্তু এখন যে তাকে কোথায় খুঁজে পাই। ড্রাইভার অনেক অবাক হয়ে বলল, তাই নাহি আফা?
হৈচৈ বলল জী, আচ্ছা ড্রাইভার আঙ্কেল ভূত কোথায় দেখতে পাব? এদের কি কিনতে পাওয়া যাবে?
ড্রাইভার বলল, আপনে শহরে ভূত পাইবেন কই! এনেরা শহরের আলোয় ভয় পাইয়া আয়ে না, আপনি এনাদের গ্রামে পাইতে পারেন। আর এনাদের কেনা যাইব কিনা হুনি নাই, তয় হুনছি আমেরিকা অনেক বড় দেশ, এইহানে সবকিছুই নাহি পাওয়া যায়, ওইহানে গেলে পাইতেও পারেন, আমি সঠিক জানি না আফা?
হৈচৈ বলল, আঙ্কেল আমি তো গত ঈদে আব্বু-আমুর সঙ্গে আমেরিকায় ঘুরতে গেছি কিন্তু সেখানে তো ভূত দেখতে পাইনি।
ড্রাইভার বলল, কি জানি আফা! তয় আমি হুনছি ওই দেশে ক্ষমতা অনেক। হ্যারা চাইলে ভূত বানাইতেও পারব। হৈচৈ বলল, জী ড্রাইভার আঙ্কেল, বঝুলাম। রাতে খাবার টেবিলে বসে হৈচৈ তার আব্বু-আম্মুকে বলল, আমি ভূত দেখতে গ্রামে যাব, তোমরা আমাকে নিয়ে যাও, প্লিজ? হৈচৈ-এর আম্মু বলল, ভূত বলে কিছু নেই মামণি। হৈচৈ এই কথা শোনা মাত্রই বলল, না আছে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আমি গ্রামে যাবই, প্লিজ আব্বু আমার ভূতবন্ধুর কাছে আমাকে নিয়ে চল। মেয়ের নাছোর অবস্থা দেখে হৈচৈ-এর আব্বু বলল, ঠিক আছে তোমার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলে আমরা গ্রামে যাব তোমার ভূতবন্ধুর কাছে।
দেখতে দেখতেই হৈচৈ'র ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো। ঈদও চলে এল। হৈচৈ-এর আব্বু-আম্মু বলল, ভালোই হলো, এবার ঈদের ছুটিতে আমরা সবাই মিলে গ্রামে যাব। তারপর তারা ঈদের ছুটিতে সবাই মিলে গ্রামে গেল। এত গাছপালা, চারপাশ এত সুন্দর দেখে হৈচৈ-এর অনেক ভালো লাগল। পরদিন হৈচৈ গ্রামের সবচেয়ে বড় বটগাছের নিচে গিয়ে ডাকতে লাগল ভূতবন্ধু তুমি কেমন আছ? তুমি কি আমার সঙ্গে রাগ করেছ? আমার সঙ্গে কথা বল। কিন্তু কেউ আর কথা বলল না। হৈচৈ মনে মনে ভাবতে লাগল আসলেই কি ভূত বলে কিছু নেই। সেদিন সন্ধ্যাবেলা হৈচৈ গ্রামের ঈদের মেলায় তার আব্বু-আম্মুসহ বেড়াতে গেল। মেলা থেকে ঘুরে আসতে অনেক রাত হয়ে গেল। যখন তারা বাড়িতে ফিরছে ঠিক সেই মুহূর্তে বটগাছের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় একজন ফিসফিস করে বলল, হৈচৈ বন্ধু কেমন আছ? তুমি কি আজ আমায় ডেকেছিলে? এই কথা শুনে তো হৈচৈ মহাখুশি, সেই খুশিতে সে লাফ দিয়ে বলল ও মা ভূত!!!
তারপর সে তার ভূতবন্ধুকে বলল, আচ্ছা ভূতবন্ধ,ু তোমাকে শহরে কেন আমি দেখতে পাই না। ভূতবন্ধুটি বলল, তোমাদের শহর আমার ভালো লাগে না। সেখানে বাতাস দূষিত, মানুষেরা আমাদের ভালো চায় না, তাই তারা সব গাছ কেটে বড় বড় দালানকোঠা তৈরি করছে। আর আমরা মুক্ত বাতাস খেয়ে বেঁচে আছি, তাই আমরা গ্রাম অনেক পছন্দ করি। হৈচৈ বলল, ও এই ব্যাপার। জান, আমারও গ্রাম অনেক ভালো লাগে। গ্রামের সবাই অনেক ভালো, এখানে কেউ ব্যস্ত থাকে না, এখানে গল্প করার অনেক মানুষ।
হৈচৈ একটু মন খারাপ করে ভূতবন্ধুকে বলল, কিন্তু আমরা আগামীকালই ঢাকায় চলে যাচ্ছি। তোমার সঙ্গে আমার কিভাবে দেখা হবে ভূতবন্ধু? ভূতবন্ধুটি বলল, তুমি চিন্তা করো না, আমি মাঝে মধ্যে তোমার বেলকনির ফুলগাছে বসে তোমার সঙ্গে গল্প করে আসব।
তারপর হৈচৈ তার আব্বু-আম্মুকে বলল, দেখেছ ভূতরাও অনেক ভালো হয়। এরপর থেকে ভূতবন্ধুটি প্রতিদিন হৈচৈ-এর বেলকনিতে এসে অনেক গল্প করে, একসঙ্গে খেলে, একসঙ্গে পড়াশোনা করে আর অনেক অনেক মজা করে।
পদ্ম বলল, জানো হৈচৈ তুমি কাকে দেখেছ?
হৈচৈ বলল, নাহ্ সেটাই তো বুঝতে পারছি না। পদ্ম বলল, তুমি ভূত দেখেছ হৈচৈ। হৈচৈ একটু অবাক হয়ে বলল, ও মা ভূত! পদ্ম বলল, হুম, এদের একবার দেখলে আর মনে রাখা যায় না। এরা অনেক রহস্যময় হয়, এরা কখনো পারফিউমও দেয় না যে, তুমি গন্ধ শুঁকে এদের উপস্থিতি টের পাবে। হৈচৈ বলল, তাই নাকি! তারপর...
পদ্ম বলল, হৈচৈ আমি এর বেশি কিছু জানি না। হৈচৈ বলল, কিন্তু পদ্ম আমার যে খুব বেশি জানতে ইচ্ছা করছে। পদ্ম বলল, হৈচৈ আমি যা শুনেছি সব আঙ্গুর মামা'র কাছে কিন্তু মামা তো এখন কানাডায়।
হৈচৈ খুব আফসোস করে বলল, ইস্ আমি যদি ভূতবন্ধুটাকে আবার দেখতে পেতাম। জানো পদ্ম, আমি খুব মিস করছি ভূতবন্ধুটাকে।
এর ফাঁকেই টিফিন পিরিয়ড শেষ হলো। হৈচৈ খুব দ্রুত ক্লাসে চলে গেল। স্কুলে ক্লাস শেষ করেই হৈচৈ বাসায় ফিরল। বাসায় ফেরার আগে হৈচৈ গাড়িতে খুব বেশি গম্ভীর ছিল। তাই দেখে ড্রাইভার বলছিল হৈচৈকে, আফা আপনের কি মন খারাপ? হৈচৈ বলল, না ড্রাইভার আঙ্কেল। আচ্ছা ড্রাইভার আঙ্কেল, তুমি কি ভূত দেখেছ? ড্রাইভার বলল, না দেহি নাই, তয় একবার ভয় পাইছিলাম, তয় বুঝছেন আফা, এরা বেশি ভালা অয় না, মেলা বদমাইশ অয়। আমারে তো একবার...। ড্রাইভারকে থামিয়ে দিয়ে হৈচৈ বলল, তুমি আঙ্কেল কিছু জান না, এরা অনেক ভালো হয়, আমার একজন ভূতবন্ধু আছে, তবে আমি তাকে একবার দেখেছি কিন্তু এখন যে তাকে কোথায় খুঁজে পাই। ড্রাইভার অনেক অবাক হয়ে বলল, তাই নাহি আফা?
হৈচৈ বলল জী, আচ্ছা ড্রাইভার আঙ্কেল ভূত কোথায় দেখতে পাব? এদের কি কিনতে পাওয়া যাবে?
ড্রাইভার বলল, আপনে শহরে ভূত পাইবেন কই! এনেরা শহরের আলোয় ভয় পাইয়া আয়ে না, আপনি এনাদের গ্রামে পাইতে পারেন। আর এনাদের কেনা যাইব কিনা হুনি নাই, তয় হুনছি আমেরিকা অনেক বড় দেশ, এইহানে সবকিছুই নাহি পাওয়া যায়, ওইহানে গেলে পাইতেও পারেন, আমি সঠিক জানি না আফা?
হৈচৈ বলল, আঙ্কেল আমি তো গত ঈদে আব্বু-আমুর সঙ্গে আমেরিকায় ঘুরতে গেছি কিন্তু সেখানে তো ভূত দেখতে পাইনি।
ড্রাইভার বলল, কি জানি আফা! তয় আমি হুনছি ওই দেশে ক্ষমতা অনেক। হ্যারা চাইলে ভূত বানাইতেও পারব। হৈচৈ বলল, জী ড্রাইভার আঙ্কেল, বঝুলাম। রাতে খাবার টেবিলে বসে হৈচৈ তার আব্বু-আম্মুকে বলল, আমি ভূত দেখতে গ্রামে যাব, তোমরা আমাকে নিয়ে যাও, প্লিজ? হৈচৈ-এর আম্মু বলল, ভূত বলে কিছু নেই মামণি। হৈচৈ এই কথা শোনা মাত্রই বলল, না আছে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আমি গ্রামে যাবই, প্লিজ আব্বু আমার ভূতবন্ধুর কাছে আমাকে নিয়ে চল। মেয়ের নাছোর অবস্থা দেখে হৈচৈ-এর আব্বু বলল, ঠিক আছে তোমার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলে আমরা গ্রামে যাব তোমার ভূতবন্ধুর কাছে।
দেখতে দেখতেই হৈচৈ'র ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হলো। ঈদও চলে এল। হৈচৈ-এর আব্বু-আম্মু বলল, ভালোই হলো, এবার ঈদের ছুটিতে আমরা সবাই মিলে গ্রামে যাব। তারপর তারা ঈদের ছুটিতে সবাই মিলে গ্রামে গেল। এত গাছপালা, চারপাশ এত সুন্দর দেখে হৈচৈ-এর অনেক ভালো লাগল। পরদিন হৈচৈ গ্রামের সবচেয়ে বড় বটগাছের নিচে গিয়ে ডাকতে লাগল ভূতবন্ধু তুমি কেমন আছ? তুমি কি আমার সঙ্গে রাগ করেছ? আমার সঙ্গে কথা বল। কিন্তু কেউ আর কথা বলল না। হৈচৈ মনে মনে ভাবতে লাগল আসলেই কি ভূত বলে কিছু নেই। সেদিন সন্ধ্যাবেলা হৈচৈ গ্রামের ঈদের মেলায় তার আব্বু-আম্মুসহ বেড়াতে গেল। মেলা থেকে ঘুরে আসতে অনেক রাত হয়ে গেল। যখন তারা বাড়িতে ফিরছে ঠিক সেই মুহূর্তে বটগাছের নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় একজন ফিসফিস করে বলল, হৈচৈ বন্ধু কেমন আছ? তুমি কি আজ আমায় ডেকেছিলে? এই কথা শুনে তো হৈচৈ মহাখুশি, সেই খুশিতে সে লাফ দিয়ে বলল ও মা ভূত!!!
তারপর সে তার ভূতবন্ধুকে বলল, আচ্ছা ভূতবন্ধ,ু তোমাকে শহরে কেন আমি দেখতে পাই না। ভূতবন্ধুটি বলল, তোমাদের শহর আমার ভালো লাগে না। সেখানে বাতাস দূষিত, মানুষেরা আমাদের ভালো চায় না, তাই তারা সব গাছ কেটে বড় বড় দালানকোঠা তৈরি করছে। আর আমরা মুক্ত বাতাস খেয়ে বেঁচে আছি, তাই আমরা গ্রাম অনেক পছন্দ করি। হৈচৈ বলল, ও এই ব্যাপার। জান, আমারও গ্রাম অনেক ভালো লাগে। গ্রামের সবাই অনেক ভালো, এখানে কেউ ব্যস্ত থাকে না, এখানে গল্প করার অনেক মানুষ।
হৈচৈ একটু মন খারাপ করে ভূতবন্ধুকে বলল, কিন্তু আমরা আগামীকালই ঢাকায় চলে যাচ্ছি। তোমার সঙ্গে আমার কিভাবে দেখা হবে ভূতবন্ধু? ভূতবন্ধুটি বলল, তুমি চিন্তা করো না, আমি মাঝে মধ্যে তোমার বেলকনির ফুলগাছে বসে তোমার সঙ্গে গল্প করে আসব।
তারপর হৈচৈ তার আব্বু-আম্মুকে বলল, দেখেছ ভূতরাও অনেক ভালো হয়। এরপর থেকে ভূতবন্ধুটি প্রতিদিন হৈচৈ-এর বেলকনিতে এসে অনেক গল্প করে, একসঙ্গে খেলে, একসঙ্গে পড়াশোনা করে আর অনেক অনেক মজা করে।
No comments:
Post a Comment